ASANSOL-BURNPUR

পুলিশ, শিক্ষক ও সাংবাদিকের যৌথ প্রচেষ্টায় লকডাউনে বাংলা- ঝাড়খণ্ড সীমান্তে আটকে পড়া ক্যান্সার আক্রান্ত বাঙ্গালী মহিলা ও তার স্বামীর কাছে পৌঁছে দেওয়া হলো জীবনদায়ী ওষুধ

আসানসোল, বেঙ্গল মিরর,২০ শে এপ্রিল ২০২০:
 করোনা পরিস্থিতিতে দেশব্যাপী লকডাউন চলছে। আর এই অচলাবস্থার মধ্যে  বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমান্তে আটকে পড়া হংকং থেকে আসা প্রাক্তন পুলিশকর্মী ও তার ক্যান্সার আক্রান্ত স্ত্রীকে আসানসোলের পুলিশ, সাংবাদিক ও শিক্ষকের সহায়তায় জীবনদায়ী ওষুধ পৌঁছানো হল আজ বিকেলে।

  ঘটনার সূত্রপাত গত ২০ শে মার্চ। প্রাক্তন পুলিশকর্মী স্বরূপ চৌধুরীর বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার বারাসাতের কাছে মধ্যমগ্রামে। তার ছেলে কর্মসূত্রে থাকেন হংকং এ। ছেলের কাছে সস্ত্রীক গিয়েছিলেন তারা। সেখান থেকে গত ২০ শে মার্চ দিল্লী বিমানবন্দরে অবতরণ করেন তিনি এবং তার স্ত্রী শ্রীমতি ছবি চৌধুরী। অবতরণ করার পরই তার স্ক্রিনিং হয় এবং সরকারের পক্ষ থেকে তাদেরকে দিল্লীর নারেলাতে ডি ডি এ ফ্ল্যাট কোয়ারন্টাইন সেন্টারে রাখা  হয়।

এরপর তাদের সেখান থেকে রিলিজ দেওয়া হয় গত ১২ ই এপ্রিল। কোভিড -১৯ টেস্ট নেগেটিভ আসার পর তাদের ট্রানজিট পাস দেওয়া হয় দিল্লী উত্তরের জেলাশাসকের পক্ষ থেকে। দিল্লী থেকে একটি গাড়ি ভাড়া করে অন্যান্য সমস্ত রাজ্য পেরিয়ে এলেও পশ্চিমবঙ্গ ঝাড়খণ্ড সীমান্ত ডুবুরডিহি চেকপোষ্টে এসে ওই দম্পতি আটকে পড়েন গত ১৩ ই মার্চ। কারণ পশ্চিমবঙ্গ করোনা পরিস্থিতির আবহে সীমান্ত সম্পূর্ণ সিল করে দেওয়া হয়।

অনেক চেষ্টা করেও উপায় না দেখে ঝাড়খণ্ডের দিকে ২ নং  জাতীয় সড়কের ধরে হোটেল   সুমনদীপে আশ্রয় নেন। পুলিশের উচ্চ মহলেও খবর যায় যাতে তারা মধ্যমগ্রাম পৌঁছতে পারেন। কিন্তু অনুমতি আসতে সমস্যা দেখা দেয়।

 এদিকে আসানসোলে কোনোভাবে স্বরূপ বাবুর এই খবর তার এক পরিচিত শিক্ষক অনিক মুখার্জির কাছে পৌঁছয়। আজ স্বরুপবাবুর তার স্ত্রীর জীবনদায়ী ওষুধের শেষ ট্যাবলেট ছিল।

ঘটনাচক্রে তার স্ত্রী শ্রীমতি ছবি চৌধুরী ক্যান্সার আক্রান্ত এবং তার তিনবার ওপেন হার্ট সার্জারি হয়েছে। সেই খবর পেয়ে শিক্ষক অনিক ওষুধের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় জীবনদায়ী ওষুধ ঝাড়খণ্ডে পৌঁছনোর ক্ষেত্রে এবং যোগাযোগ করেন শিল্পাঞ্চলের এক সাংবাদিক সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তর সঙ্গে। সাংবাদিক যোগাযোগ করেন আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশের এ সি পি ট্রাফিক- ১ সুকান্ত ব্যানার্জীর সঙ্গে এবং কুলটি ওসি ট্রাফিক শুভেন্দু চ্যাটার্জীর সঙ্গে। এরপর পুলিশের সহযোগিতায় সাংবাদিক ও অনিকবাবু ওই দম্পতির কাছে ওষুধ পৌঁছে দেন।

 ঝাড়খন্ডের ওই হোটেলে যেখানে স্বরুপবাবু সস্ত্রীক আছেন সেখানে তারা জীবনদায়ী ওষুধ হাতে পেয়ে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেন। ধন্যবাদ দেন পুলিশ প্রশাসনের আধিকারিকদের, অনীকবাবু এবং সংবাদ মাধ্যমের ওই প্রতিনিধিকে। অনিক মুখার্জী এবং সাংবাদিকের পক্ষ থেকেও সমস্ত রকম ভাবে সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়। 
এরই সঙ্গে স্বরূপবাবু  তিনি যাতে তাঁর অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে তাদের মধ্যমগ্রামের বাড়িতে তাড়াতাড়ি পৌঁছতে পারেন সেই অনুরোধ সংবাদ মাধ্যমের দ্বারা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে রাখেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *