ASANSOL

বার্নপুর সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার কমিটি ভলান্টারী ব্লাড ডোনার্স এর ৩৭ বছর পূর্তি উদযাপিত হলো রক্তদান শিবির ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, আসানসোল, ৩০ শে মে ২০২০, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত :   এমনিতেই প্রতি বছর মে মাসের শুরু থেকেই গরমের সময় সমগ্র পশ্চিমবঙ্গের সাথে পশ্চিম বর্ধমান জেলার  আসানসোল শিল্পাঞ্চলে রক্তের চাহিদা পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে। আর তারই মধ্যে উদ্ভুত করোনা ভাইরাস সংক্রমণ এই বছর পরিস্থিতি জটিল থেকে জটিলতর করে তুলছে। আর ঠিক এই সময়ে পশ্চিমবঙ্গে বিশেষতঃ পশ্চিম বর্ধমান জেলা এবং জেলা সদর আসানসোলের রক্তসঙ্কটের সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।    আসানসোলের বার্নপুরে  অবস্থিত “বার্নপুর সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার কমিটি ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স ” এরকমই একটি সরকার অনুমোদিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন যা প্রায় দীর্ঘ চার দশকের ওপরে সমগ্র শিল্পাঞ্চলে রক্তের যোগান দিয়ে চলেছে তাদের নিরলস প্রচেষ্টায়। 

   বার্নপুর সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার কমিটি ভলান্টারী ব্লাড ডোনার্স প্রতিষ্ঠা হয় ২৮ শে মে, ১৯৮৩। আর  এই সংগঠনটির ৩৭ তম জন্মদিন উদযাপিত হয় গত বৃহস্পতিবার। করোনা পরিস্থিতিতে বিভিন্ন বিধিনিষেধ রয়েছে প্রশাসনের তরফ থেকে । তাই সমস্ত আমন্ত্রিত অতিথিদের উপস্থিতিতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সেদিন সকালেই অনুষ্ঠানের সূচনা হবার পর একটি রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়।  উপস্থিত ছিলেন এ ডি ডি এ  চেয়ারম্যান ও আসানসোল দক্ষিণ বিধায়ক তাপস ব্যানার্জী, আসানসোলে মিউনিসিপ্যাল করপোরেশনের চেয়ারম্যান অমরনাথ চ্যাটার্জী ও এম এম এম আই সি শ্রীমতি অঞ্জনা শর্মা , আসানসোলে ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ও প্রাক্তন বিধায়ক অমিতাভ মুখার্জী, তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের রাজ্য নেতা অশোক রুদ্র, কাউন্সিলর গুরুদাস চ্যাটার্জী ও বিনোদ যাদব, সমাজসেবী মৃত্যুঞ্জয় মুখার্জী,  সিটিকেবলের জয়দীপ মুখার্জী, তৃণমূল নেতা প্রবোধ রায় ( ক্যাপ্টেন), কাউন্সিলর রাখী মুখার্জী, তৃণমূল নেতা উৎপল সেন, তৃণমূল নেতা পূর্ণেন্দু চৌধুরী( টিপু), তৃণমূল নেতা ভানু ঘোষ, যুব কংগ্রেস নেতা রঘু চৌবে প্রমুখ।
এছাড়াও আসানসোল জেলা হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্ট ড: নিখিল চন্দ্র দাস, ব্লাড ব্যাংকের দায়িত্বে থাকা ড: সঞ্জিত চ্যাটার্জী, জেলা হাসপাতাল ব্লাড ব্যাংক কর্মী বেনু সেনগুপ্ত , পৃথ্বীশ রায়, দেবরাজ চৌধুরী, চন্দ্রকান্ত প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
জেলা হাসপাতাল সুপার ড: নিখিল চন্দ্র দাস ভূয়সী প্রশংসা করেন এই সংস্থার বিগত প্রায় ৪ দশক ধরে মানুষের পাশে দাড়ানোর এই উদ্যোগকে।
  এছাড়াও হীরাপুর থানার ওসি সৌমেন্দ্র সিংহ ঠাকুর সেদিন উপস্থিত ছিলেন ওই অনুষ্ঠানে। তিনিও সাধুবাদ জানান ৩৭ বছর ধরে এই সংস্থার নিরলস প্রচেষ্টার মাধ্যমে মানুষের জীবন বাঁচানোর কাজে ব্রতী থাকার জন্যে।
  প্রত্যেক সম্মানীয় অতিথিদের চারা গাছ এবং উত্তরীয় দিয়ে সম্মান জানানো হয়। এদিকে চারাগাছ ও উত্তরীয় দিয়ে সম্মান জানানোও হয় সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের যারা সারা বছর বিভিন্ন প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও সংবাদ পরিবেশন করেন। সাংবাদিকদের ও স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত মানুষদের করোনা মোকাবিলার জন্য ফেস শিল্ড প্রদান করা হয়।
  এছাড়াও ওই অনুষ্ঠানে বার্নপুর নববিকাশ ক্লাবের বাপ্পা তালুকদারকে সম্মান জানানো হয় এবং ফেসবুক সোশ্যাল সার্ভিস গ্রুপ 
ই-মোশানের অর্ক মন্ডল কেও সম্মান জানানো হয়।
 “বার্নপুর সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার কমিটি এন্ড ভালান্টারি ব্লাড ডোনার্স” এর প্রতিষ্ঠাতা প্রবীর ধর  প্রথম থেকেই উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, ” ৩৭ বছর আগে আজকের দিনেই তার হাত ধরেই এই সংস্থার প্রতিষ্ঠা। আর তার পরেই আরো অনেক সংস্থা তৈরী হয়। সারা রাজ্যে ৮৬ টি সরকারি ব্লাড ব্যাংকে তারা রক্ত সংগ্রহ করে রক্তের জোগান দেন এবং সেই রক্ত যাতে রোগীর পরিবার বিনা মূল্যে রক্ত পায় সেই ব্যাপারটি তারা দেখেন। আগেরদিন করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির কারণে অনাড়ম্বর ভাবেই রক্ত কালীপূজার মাধ্যমে চিরাচরিত ভাবেই এই বছর অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। সোশ্যাল ডিসটেন্স এবং সব ধরনের প্রটোকল মেনেই অনুষ্ঠান করা হয়েছে।”    
  
  “বার্নপুর সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার কমিটি এন্ড ভালান্টারি ব্লাড ডোনার্স” এর  একজিকিউটিভ মেম্বার  শ্রীমতি তন্বিমা ধর  রক্তদান করেন। ” ভলান্টারী ব্লাড ডো অর্গানাইজার সমন্বয় কমিটির  সম্পাদক ও “জীবন সুরক্ষা” – র সাধারণ সম্পাদক শ্রী  অসীম সরকার সেদিন রক্তদান করেন। 
এছাড়াও অনেক মানুষ এদিন স্বেচ্ছায় রক্ত দেন। ১৮ বছর হবার পর জীবনে প্রথমবার রক্ত দিয়ে আয়ুশ দত্তগুপ্ত নামে এক কিশোরকে বেশ উৎসাহিত দেখায় ওই অনুষ্ঠানে। এছাড়া রক্তদান করেন বি এস ডব্লিউ সি ভি বি ডি এর এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি প্রিয়াঙ্কা দত্ত, মনোজ সাও, ট্রেজারার অনুজ রায়।
এদিন প্রায় ২০ ইউনিট রক্ত সংগ্রহ করা হয় ব্লাড ক্যাম্প থেকে।
    করোনা আবহে অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেকটা অনাড়ম্বর পরিসরে ৩৭ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান হলেও এটাই প্রমাণিত হলো যে “বার্নপুর সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার কমিটি এন্ড ভালান্টারি ব্লাড ডোনার্স” এর মত সংস্থা তাদের ঐকান্তিক এবং নিরলস প্রচেষ্টার মাধ্যমে  মানুষের জীবন রক্ষার ব্রত নিয়ে নিঃশব্দে এগিয়ে চলেছে যা প্রশংসার অপেক্ষা রাখে না।

  

   

  

  
  
  
  “

Leave a Reply