পশ্চিম বর্ধমান জেলায় করোনা আক্রান্তের হার নিয়ে উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল,২৫ শে আগস্ট,২০২০, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত : মঙ্গলবার নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সমস্ত জেলার জেলাশাসকের ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে একটি প্রশাসনিক বৈঠক হয়।
এই মর্মে পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোলে জেলাশাসকের দপ্তরেও মঙ্গলবার ভার্চুয়াল কনফারেন্সের আয়োজন করা হয়। ভার্চুয়াল মিটিংয়ে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের শ্রম ও আইন মন্ত্রী মলয় ঘটক এবং আসানসোলের মেয়র তথা পাণ্ডবেশ্বর বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারি। সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক পূর্ণেন্দু কুমার মাজি, পুলিশ কমিশনার সুকেশ কুমার জৈন, জেলা সভাধিপতি সুভদ্রা বাউরি প্রমুখ।
পশ্চিম বর্ধমানে করোনা আক্রান্তের হার পাঁচ দশমিক নয় শতাংশ । পুরুলিয়া , বাঁকুড়া , বীরভুম এবং দুই বর্ধমানের মধ্যে পশ্চিম বর্ধমানের করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেশি । নবান্ন থেকে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ নিয়ে পশ্চিম বর্ধমানের জেলা শাসককে প্রশ্ন করেন কেন এই জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা বেশি । মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন করেন শিল্পাঞ্চল ও জনঘনত্বের কারনেই কি পশ্চিম বর্ধমান জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা বেশি ? জনঘনত্বের বিষয়টি ছাড়াও জেলাশাসক পুর্ণেন্দু মাজি বলেন প্রতিবেশি ভিন রাজ্য এবং জেলা থেকে রুগী এসে রুগী ভর্তি হচ্ছে দুর্গাপুরে। এরফলে ভিন রাজ্যের করোনা রুগী হলেও তা পশ্চিম বর্ধমান বলে উল্লেখ হয়ে যাচ্ছে । এই প্রসঙ্গে উঠে আসে ভিন রাজ্যের রুগীরা নিজের প্রকৃত ঠিকানা অর্থাৎ নিজরাজ্যের ঠিকানা লেখাচ্ছেন না , তারা লোকাল ঠিকানা লেখাচ্ছেন । এই কথা শোনার পর মুখ্যমন্ত্রী এ বিষয়ে বলেন ঠিকানা লেখানোর সময় যেন নজর দেওয়া হয় নিজ রাজ্যের ঠিকানা লেখাচ্ছেন কিনা ভিন রাজ্যের রুগীরা । এর পাশাপাশি প্রবীণ নাগরিকদের সহায়তার জন্য আসানসোলের মেযর জিতেন্দ্র তিওয়ারি কে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে বলেন।
এদিকে গ্রামীন রাস্তার নির্মাণের ক্ষেত্রেও পিছিয়ে রয়েছে পশ্চিম বর্ধমান জেলা । টার্গেট রয়েছে ৩৫ কিলোমিটার কিন্তু রাস্তা নির্মাণ হয়েছে ৫.৫৬ কিলোমিটার । অবশ্য জেলাশাসক দাবি করেছেন রাস্তা প্রায় ১২ শতাংশের বেশি তৈরি হয়েছে ।
আজকের প্রশাসনিক বৈঠকে পশ্চিম বর্ধমান জেলা মুখ্যমন্ত্রীর ধমকের মুখে পড়ে ওভারলোডেড যান চলাচলের জন্য । গ্রামীন রাস্তা ওভারলোডেড যান চলার জন্য ভেঙে যাচ্ছে এমন অভিযোগ ওঠে এই প্রশাসনিক বৈঠকে । মুখ্যমন্ত্রী বলেন এসব বন্ধ করতে হবে । তিনি বলেন বারবার বলা সত্বেও এমন অভিযোগ আসার কারণ কি সেদিকে লক্ষ্য রাখছেন তিনি।
এদিকে পশ্চিম বর্ধমান জেলায় মোট করোনা সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা তিন হাজারের গণ্ডি ছাড়িয়েছে।
স্বাস্থ্য দপ্তরের ২৪ শে আগস্ট প্রকাশিত ২৩ শে আগস্ট পর্যন্ত আপডেট করা রিপোর্ট অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় পশ্চিম বর্ধমান জেলায় ১ জন আক্রান্তের মৃত্যু এবং ৯৬ জন মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন । আর এর পরেই জেলায় মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা হয়ে দাঁড়াল ৩০১৮ জন। এদিকে জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৯৩ জন করোনা পজিটিভ রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। জেলাতে মোট সক্রিয় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৮৪৪ এবং মোট সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীর সংখ্যা ২১৪৮। এদিকে মোট করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত ব্যক্তির সংখ্যাটা বর্তমানে ২৬ ।