ASANSOL

ইসিএলের আবাসন থেকে বৃদ্ধ দম্পতির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার

শারীরিক অসুস্থতার কারণে মানসিক অবসাদ থেকে আত্মহত্যা, অনুমান পুলিশের, চাঞ্চল্য

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ১ অক্টোবরঃ ইসিএলের আবাসন থেকে গলায় দড়ি দেওয়া এক বৃদ্ধ দম্পতির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার সকালে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়লো আসানসোল উত্তর থানার গিরমিন্ট কোলিয়ারি এলাকায়। মৃত দম্পতির নাম অনাদি সিংহ (৮০) ও নীলিমা সিংহ (৫৯)। এদিন দুপুরে আসানসোল জেলা হাসপাতালে দম্পতির দেহর ময়নাতদন্ত হয়। পরে পুলিশ দেহদুটি পুলিশ মেয়ে স্বপ্না ঘোষের হাতে তুলে দেয়।

দম্পতির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার
photo by biju mandal


পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গিরমিন্ট কোলিয়ারি এলাকার বাসিন্দা অনাদি সিংহ ইসিএলের কর্মী ছিলেন। বছর ২০ আগে সেই চাকরি থেকে তিনি অবসর নিয়েছেন৷ সিংহ দম্পতির একমাত্র মেয়ে স্বপ্না ঘোষের বিয়ে বেশ কয়েক বছর আগে হয়েছে। তিনি কলকাতায় থাকেন।

বর্তমানে সিংহ দম্পতি গিরমিন্ট কোলিয়ারি এলাকায় যে আবাসনে থাকতেন, তার পাশেই থাকেন তার এক আত্মীয়। তিনি এদিন সকাল থেকে অনাদিবাবু ও নীলিমাদেবীকে বাড়ির বাইরে দেখতে পাননি। দরজাও বন্ধ ছিলো।

স্বাভাবিকভাবেই ঐ আত্মীয়র সন্দেহ হয়। তিনি দরজায় ধাক্কা দেন ও ডাকাডাকি করেন। কিন্তু ভেতর থেকে কেউ সাড়া দেননি। এরপর তিনি এলাকার বাসিন্দাদের সেই কথা জানান। খবর দেওয়া হয় আসানসোল উত্তর থানায়। পুলিশ এলাকায় আসে।

পুলিশ দরজা ভেঙ্গে আবাসনের ভেতরে ঢোকে

পুলিশ দরজা ভেঙ্গে আবাসনের ভেতরে ঢোকে। একটা ঘরে ঢুকে পুলিশ দেখতে পায়, সিলিং ফ্যানে একটা দড়ির দুদিকে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলছেন অনাদি সিংহ ও নীলিমা সিংহ। স্বাভাবিকভাবেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।সিংহ দম্পতির একমাত্র মেয়ে স্বপ্না ঘোষের এদিনই কলকাতা থেকে বাবামায়ের কাছে আসার কথা ছিলো।

তিনি আসানসোলে এসে এই ঘটনার কথা জানার পরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন৷ বাবামায়ের এমন মৃত্যুতে তিনি বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন। তিনি কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না।


সিংহ দম্পতির পরিবারের এক জামাই পলাশ রায় বলেন, অনাদি সিংহ ও নীলিমা সিংহ একসঙ্গে ঐ আবাসনে থাকতেন। একমাত্র মেয়ে বিয়ের পরে কলকাতায় থাকেন। মেয়ে বলতে গেলে প্রতিদিনই বাবামায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলতেন।

বুধবার রাতেও কথা হয়। মেয়ের এদিন আসানসোলে বাবামায়ের কাছে আসার কথা ছিলো। তিনি আরো বলেন, স্বামী স্ত্রী বেশ কয়েক বছর ধরে নানা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন। তারা ভাবতেন হয়তো কে তাদেরকে দেখবে। সবকিছুরই জন্য অন্য লোকের উপরে ভরসা করতে হতো। একজন মারা গেলে, অন্যজনকে কে দেখবে? মেয়ে কলকাতায় থাকে। হতে পারে নিঃসঙ্গতাতেও তারা ছিলেন। সবমিলিয়ে মানসিক অবসাদে দম্পতি ভুগছিলেন। সেই কারনেই হয়তো আত্মঘাতী হয়েছেন। কি করে হলো তা ভাবতেই পারছিনা।


প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানায় , বৃদ্ধ দম্পতিকে একটা ঘরে সিলিং ফ্যানে গলায় দড়ি দেওয়া ঝুলন্ত অবস্থায় এদিন সকালে উদ্ধার করা হয়েছে। মানসিক অবসাদের কারণে তারা আত্মঘাতি হয়েছেন। এই ঘটনায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যু বা আনন্যাচারেল ডেথের (ইডি) মামলা করা হয়েছে। পরিবারের তরফে কোন অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। মেয়ের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে বলে পুলিশ জানায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *