ASANSOLLatestPoliticsRANIGANJ-JAMURIA

বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসের ভাগাভাগির লড়াই , কটাক্ষ সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রর

অবৈধ কয়লা কারবার আটকাতে সিবিআইয়ের অভিযান

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ৩০ নভেম্বরঃ অবৈধ ও বেআইনি কয়লার কারবার আটকাতে সিবিআই অভিযানের পেছনে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যেকার ভাগভাগির লড়াই। সবাই জানে যে কয়লা কারবার ও পাচারের সঙ্গে কারা যুক্ত রয়েছে ৷ তার টাকা কোথায় কোথায় যায়৷ দিন কয়েক আগে বেআইনি ও অবৈধ কয়লা কারবারিদের ধরতে সিবিআই অভিযান প্রসঙ্গে সোমবার এমনই কটাক্ষ করলেন সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র।

File photo Suryakant Mishra
রানিগঞ্জে গীর্জা পাড়া মোড়ে দলীয় কার্যালয়ে সভাগৃহের উদ্বোধন


এদিন আসানসোলের রানিগঞ্জে গীর্জা পাড়া মোড়ে দলীয় কার্যালয়ে সভাগৃহের উদ্বোধন করে এমন ভাবেই কয়লা কাণ্ড নিয়ে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস ও কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপিকে একসূত্রে বেঁধে কটাক্ষ করেন তিনি। সাংবাদিকরা সিবিআই অভিযান প্রসঙ্গে তার কাছ থেকে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক গোটা ঘটনাটিকে নাটক বলেন।

অবৈধ কয়লার টাকা ওখানে একজনের ছেলের কাছে যায়, আর এখানে একজনের ভাইপোর কাছে যায়


তিনি রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস ও কেন্দ্রের বিজেপি নেতৃত্ব দুর্নীতিতে যুক্ত বলে অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, অবৈধ কয়লার টাকা ওখানে একজনের ছেলের কাছে যায়, আর এখানে একজনের ভাইপোর কাছে যায়৷ সীমান্তে গোরু ও কয়লা পাচারের টাকা মাসে মাসে ঠিক জায়গায় পৌঁছে যায়৷ এখন সেটা নিয়ে তৃণমূল বিজেপিকে বলছে আর বিজেপি তৃণমূলকে বলছে ৷ আসলে এই দুই পক্ষই এই কারবারের টাকার ভাগ পায়৷

খনিগুলিকে বেসরকারি সংস্থার হাতে বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার বিক্রি করে দিচ্ছে


অবৈধ কয়লা কারবারের প্রসঙ্গের পাশাপাশি তিনি কয়লা ক্ষেত্রে কেন্দ্রের মোদি সরকার যে বিলগ্নিজরণ করতে চাইছে সে নিয়ে সরব হন। ইন্দিরাগান্ধীর সময় যে কয়লাখনিগুলিকে রাষ্ট্রায়ত্বকরণ করা হয়েছিল সেই খনিগুলিকে বেসরকারি সংস্থার হাতে বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার বিক্রি করে দিচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। তিনি আরো বলেন, দেশের খনিজ সম্পদ রাষ্ট্রের সম্পত্তি । রাষ্ট্র মানে দেশের মানুষ। তাদেরই সম্পদ হলো এই কয়লা। সেই কয়লাকে এভাবে বেসরকারি মালিকানার হাতে বিক্রি করা যায় না। সূর্যকান্ত মিশ্রর দাবি, বাংলা ও দেশে বামপন্থীরাই কেবলমাত্র এর বিরুদ্ধে লড়াই করছে৷

বাম জমানায় কয়লা চুরিকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিল


সূর্যকান্ত মিশ্রের এই বক্তব্য নিয়ে পশ্চিম বর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম মুখপাত্র অশোক রুদ্র বলেন, বাম জমানায় কয়লা চুরিকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিল এই সিপিএমই । তারাই ভালো করে জানেন কিভাবে কোথায় চোরাই কয়লার ভাগ পাওয়া যেত। এটাই সিপিএমের কালচার। অশোক রুদ্র আরো বলেন, চোরাই কয়লা নিয়ে সিবিআইয়ের অভিযান হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্থা ইসিএলের আধিকারিক, নিরাপত্তাররক্ষী ও কেন্দ্রের সিআইএসএফ বাহিনীর অফিসারদের বাড়িতে বা অফিসে। কয়লা চুরি হোক বা সিবিআই অভিযান সবটাই তো কেন্দ্র সরকারের ব্যাপার। এখানে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের নাম জড়িয়ে কুৎসা ছড়িয়ে কোনও লাভ নেই। কয়লা মাফিয়া কার্লে সিংকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য্যের সভায় টাকা দিতে বাংলার মানুষ দেখেছেন। এইসব মিথ্যাচারের কারণেই সিপিএমকে বাংলার মানুষ সাইনবোর্ডে পরিণত করেছেন।

ঘাসফুল শিবিরের সঙ্গে লালপার্টির জোটের গোপন আঁতাত


অন্যদিকে, জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক শ্রীজিত চক্রবর্তী বলেন, বাম জমানায় রাজ্যে শিল্প বলে কিছু ছিল না। কয়লা চুরিকে তারা শিল্পের মর্যাদা দিয়েছিলেন। দুর্নীতি ঠেকাতে এখন যখন সেই চোরাই বা অবৈধ কয়লায় সিবিআই হানা হচ্ছে তখন এই ঘটনাকে সিপিএম নাটক বলার মানে তৃণমূল কংগ্রেসের হাতকে শক্ত করা। এতেই বোঝাই যাচ্ছে ঘাসফুল শিবিরের সঙ্গে লালপার্টির জোটের গোপন আঁতাত তৈরি হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *