Bengali NewsPANDESWAR-ANDAL

কয়লা চোরেদের হাতে আক্রান্ত নিরাপত্তা আধিকারিক ও রক্ষীরা, ১০টি গাড়িতে ভাঙচুর

বেঙ্গল মিরর,রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ২৩ জানুয়ারিঃ এবার অবৈধ কয়লা কোন কয়লা চুরি আটকাতে গিয়ে কয়লা চোরেদের হাতে আক্রান্ত হলেন ইসিএলের ভারপ্রাপ্ত মুখ্য নিরাপত্তা আধিকারিক সহ সাত নিরাপত্তা রক্ষী । একইসঙ্গে ইসিএলের নিরাপত্তা আধিকারিক ও রক্ষীদের সঙ্গে থাকা অন্ততঃ ১০টি গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার রাতে।

কয়লা চোরেদের হাতে আক্রান্ত


জানা গেছে, ইসিএলের পাণ্ডবেশ্বর এরিয়ার অজয় নদীর মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে ঝাড়খণ্ডের নলা থানার কাস্তা বন্ধ খনি এলাকায় অবৈধ কয়লা খনি করে কয়লা তোলার খবর বেশ কিছু দিন ধরে ইসিএলের কাছে আসছিলো। সেই খবর পেয়ে শুক্রবার রাত সাড়ে নটা নাগাদ ইসিএলের ভারপ্রাপ্ত মুখ্য নিরাপত্তা আধিকারিক মুকেশ কুমারের নেতৃত্বে প্রায় ৩০/৩৫ জনের একটি দল সেখানে পৌঁছায়।

তাদের লক্ষ্য করে ইট ও পাথর ছুঁড়তে শুরু করেন

তারা সেখানে দেখেন প্রচুর সংখ্যায় ট্রাকে অবৈধ কয়লা ভরা আছে পাচারের জন্য। সেখানে কয়লা তোলার জন্য পোকল্যান্ড ও জেসিপি মেশিন রাখা আছে । ইসিএলের নিরাপত্তা রক্ষীরা ট্রাক গুলি আটকানোর চেষ্টা করলে কয়লা চোরেদের সঙ্গে এলাকার প্রায় ২০০ বাসিন্দা তাদের ঘিরে ধরেন। তারা তাদের লক্ষ্য করে ইট ও পাথর ছুঁড়তে শুরু করেন। একইসঙ্গে তারা লাঠি নিয়ে হামলা চালানোর পাশাপাশি বোমাও ছোঁড়া হয় বলে অভিযোগ।

এরপর একের পর এক গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। এই অবস্থায় মুকেশ কুমার জামতাড়া জেলার পুলিশ সুপারকে রাত দশটা নাগাদ খবর দেন। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর ডিএসপির নেতৃত্বে এলাকায় পুলিশ আসে । এবা পুলিশের উদ্দেশ্যেও ইট ও পাথর ছোঁড়া হতে থাকে। তখন ডিএসপি ইসিএলের নিরাপত্তা বাহিনীকে সেখান থেকে চলে যেতে অনুরোধ করেন ।

তা না হলে মারাত্মক কিছু হতে পারে। এরপর রাত দেড়টা নাগাদ কোনমতে সেখান থেকে পালিয়ে এসে নিজেদের প্রাণ বাঁচান ইসিএলের নিরাপত্তা নিরাপত্তা রক্ষীরা। সেই সুযোগে ইসিএলের নিরাপত্তা রক্ষীরা যেসব কয়লা বোঝাই ট্রাক আটক করেছিলো সেগুলোও কয়লা চোরেরা নিয়ে পালিয়ে যায়।


শনিবার বিকেলে ঝাড়খণ্ড বাংলা সীমান্ত লাগোয়া লাগোয়া নলা থানাতে গোটা ঘটনার কথা জানিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন আহত নিরাপত্তা আধিকারিক মুকেশ কুমার। মুকেশ কুমার বলেন, আমরা যে ২৪টা ট্রাক ধরেছিলাম সেগুলোর নম্বর পুলিশকে দিয়েছি। আমরা তিন ট্রাক চালককেও পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছি।

আমাদের তিনজন সাব-ইন্সপেক্টর সহ ৭ জন আহত হয়েছেন। একজনের মাথা ফেটেছে ও একজনের পা ভেঙেছে। আমার উপরেও পাথর দিয়ে হামলা করা হয়। তিনি আরো বলেন, ঐ এলাকায় বিরাট অংশে অবৈধ কয়লা খনি চলছে। আর সেখান থেকে যন্ত্র দিয়ে কয়লা তুলছে কয়লা চোরেরা । সেই খবর পেয়ে আমরা সেখানে তল্লাশি করতে গেছিলাম । হাজার হাজার টন কয়লা সেখান থেকে চুরি হয়ে যাচ্ছে। আমি নিজে জামতাড়ার পুলিশ সুপারকে রাত দশটা নাগাদ ফোন করি।

সাড়ে এগারোটা নাগাদ ডিএসপি সেখানে আসেন। পুলিশ দেখে কয়লা চোরেরা পাথর ছোঁড়ে। তখন ডিএসপি আমাদেরকে সেখান থেকে চলে যেতে বলেন । বিপদ আছে বুঝতে পেরে আমরা সেখান থেকে চলে আসি। পুলিশও আমাদের সঙ্গে সেখান থেকে চলে আসে।


এই ঘটনা প্রসঙ্গে ডিএসপি অজিত কুমার বলেন, ইসিএলের নিরাপত্তা আধিকারিক অভিযোগ জমা দিয়েছেন। তিনজনকে তারা ধরে ছিলেন। যারা ট্রাক চালক। এর বেশি এখনই কিছু বলতে পারবো না। পুলিশ গোটা ঘটনা তদন্ত করে দেখছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *