রাজ্যে প্রথম শিশু সুরক্ষা সাথী অ্যাপস এর উদ্বোধন আসানসোলে
বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য ও রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসনসোল। রাজ্যের মধ্যে প্রথম পশ্চিম বর্ধমান জেলায় শিশু সুরক্ষা সাথী নামে এক নতুন অ্যাপস এর শুক্রবার উদ্বোধন করলেন জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি। তিনি বলেন শিশুদের সুরক্ষার Child protection appsউপর এই এবং তাদের সার্বিক বিকাশের উপর নির্ভর করে দেশের ভবিষ্যৎ। জেলা শিশু সুরক্ষা কমিটি ও জেলা প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে অভিনব এই অ্যাপস আজ আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কনফারেন্স হলে জেলার সমস্ত ব্লক এবং পুর আধিকারিকদের উপস্থিতিতে উদ্বোধন হল।
এই অ্যাপসের প্রধান উদ্দেশ্য শিশু সুরক্ষা সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য রিপোর্টিং আকারে গ্রাম সংসদ থেকে শুরু করে ব্লক এবং পুরসভার ওয়ার্ড কমিটি থেকে একেবারে জেলা শিশু সুরক্ষা কমিটির কাছে পৌঁছে দেওয়া। নাবালিকাদের বিবাহ সংক্রান্ত তথ্য থাকলে তাও এই অ্যাপস এর মাধ্যমে খবর দিলে জেলা শিশু সুরক্ষা কমিটির পক্ষ থেকে সঙ্গে সঙ্গে বিডিও , থানার ওসিদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।
জেলা শিশু সুরক্ষা কমিটির দায়িত্বে থাকা এক আধিকারিক জানান পশ্চিম বর্ধমান জেলা সদ্য গঠিত হলেও আমরা শিশু সুরক্ষার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে থাকি। ইতিমধ্যেই আমাদের ৮২২ টি গ্রামীণ শিশু সুরক্ষার জন্য কমিটি করা হয়েছে।এ ছাড়াও আসানসোল ও দুর্গাপুর পুরো এলাকার প্রতিটি ওয়ার্ডে আলাদা করে ঐ কমিটি করা হয়েছে ।পঞ্চায়েত স্তরে এই বিষয় কমিটি আছে।
গ্রাম সংসদ শিশু সুরক্ষা কমিটি তৈরি হয়েছে সেখানে আইসিডিএস এর সুপারভাইজার, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর প্রতিনিধি এবং সেখানকার পঞ্চায়েতের সদস্য ও ১৪ থেকে ১৮ বছরের নিচে শিশুদের কমিটিতে রাখা হয়েছে। পশ্চিম বর্ধমান জেলায় আট টি ব্লকেই ব্লকস্তরের কমিটি হয়েছে । প্রতি দুই থেকে তিন মাস অন্তর এখানেও সভা করে শিশু সুরক্ষা বিষয় আলোচনা করা হয়।
এই মুহূর্তে বিভিন্ন গ্রাম না সংসদ ভিত্তিতে আলাদা আলাদা করে জেলা সুরক্ষা দপ্তর এর পক্ষ থেকে শিশু সুরক্ষা বিষয়ে কমিটি গুলির কাজ এবং সচেতনতা নিয়ে আলোচনা চলছে। বৃহষ্পতিবার যেমন অন্ডালের একটি এলাকায় এমন আলোচনা হয়েছে। তেমনি আগামী পয়লা ফেব্রুয়ারি থেকে পাঁচ দিন ধরে জামুরিয়া গ্রামীণ এলাকায় একইভাবে ঐ কমিটি কে নিয়ে শিশু সুরক্ষা সচেতনতা বিষয়ে পাঠ দেওয়া হবে।
নতুন এই শিশু সুরক্ষা সাথী অ্যাপস এর মাধ্যমে প্রত্যেক গ্রাম সংসদ থেকে শুরু করে ব্লক এবং ওয়ার্ড থেকে নিয়মিতভাবে রিপোর্ট পাঠাতে হবে। সেই রিপোর্ট জেলার জেলাশাসক, এই বিভাগের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলা শাসক এবং জেলা সমাজ কল্যাণ আধিকারিক পর্যন্ত দেখতে পাবেন। এটা দেখার জন্য ব্লকের বিডিও থেকে জেলাশাসক পর্যন্ত প্রত্যেকের আলাদা আলাদা লগ-ইন এর ব্যবস্থা থাকবে।
জেলা শিশু সুরক্ষা কমিটির আধিকারিকরা সেখান থেকে পাওয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেবেন। একই সঙ্গে নাগরিকরা চাইলেও শিশুদের আচমকা কোনও বিয়ের খবর পেলে এই অ্যাপসের মাধ্যমে জানালে প্রশাসন এবং পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারবে বলে জেলা প্রশাসন সূত্র থেকে জানা গেছে। এতে শিশুদের সুরক্ষার পরিবেশ আরো উন্নত হবে। । জেলা সুরক্ষা দপ্তর সূত্রে জানা গেছে শুধু পশ্চিমবঙ্গে নয় সমগ্র উত্তর-পূর্ব ভারতে এমন কোনো অ্যাপ শিশুদের সুরক্ষার জন্য অতীতে চালু হয়নি। পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসন ও শিশু সুরক্ষা জেলা কমিটি এক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা নিল।