ASANSOLBengali NewsHealth

ঝুঁকি নিয়ে অস্ত্রোপচার সফল, বৃদ্ধার গলায় আটকে পড়া খোলা সেফটিপিন বার করলেন আসানসোল জেলা হাসপাতালের ইএনটি সার্জেন

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ৩১ জানুয়ারিঃ বাড়িতে মুড়ি খাওয়ার সময় অসাবধানতায় খোলা সেফটিপিন খেয়ে ফেলেছিলেন আসানসোলের জামুড়িয়ার বাসিন্দা ৬০ বছরের বৃদ্ধা তারা রাউত। ঘটনাটি তিনদিন আগের। রবিবার এক অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সেই খোলা সেফটিপিন বার করলেন আসানসোল জেলা হাসপাতালের নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ বা ইএনটি সার্জেন ডাঃ বীরেশ্বর মন্ডল। চিকিৎসাশাস্ত্রে এই অস্ত্রপচারকে বলা হয় ” ইসোফেগোসকপি “।

ডাঃ মন্ডলের সঙ্গে ছিলেন জেলা হাসপাতালের এ্যানাসথেটিক্স ডাঃ জাহাঙ্গীর মল্লিক। ঝুঁকি নিয়ে করা এই অস্ত্রোপচার সফল হওয়ায় বৃদ্ধা প্রাণে যে বাঁচলেন তা বলা যেতেই পারে। জেলা হাসপাতাল স্তরে সাধারণতঃ এই ধরনের অস্ত্রোপচার করা হয়না। এই ধরনের অস্ত্রোপচার মেডিক্যাল কলেজ বা সুপার স্পেশালটি বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিং হোমে হয়। সেক্ষেত্রে তা যথেষ্টই ব্যয়বহুলও। এই ধরনের অস্ত্রোপচার করে থাকেন কার্ডিওথোরাসিক সার্জেনরা। সেইদিক থেকে বলা যেতেই পারে যে, আসানসোল জেলা হাসপাতালের ইএনটি সার্জেন এই অস্ত্রোপচার করে এক নজির গড়লেন।


এই প্রসঙ্গে আসানসোল জেলা হাসপাতালের সুপার ডাঃ নিখিল চন্দ্র দাস বলেন, এই হাসপাতালের চিকিৎসকরা সীমাবদ্ধ ক্ষমতার বাইরে গিয়ে রোগীদের বাঁচানোর জন্য সবরকম চেষ্টা করছেন। ইএনটি বিভাগ তার মধ্যে অন্যতম।
বৃদ্ধা ও তার পরিবারের লোকেরাও খুশি। তারা বলেন, আসানসোল জেলা হাসপাতালে এটা যে হবে, তা ভাবতেই পারিনি।

খোলা সেফটিপিন তিনি মুড়ির সঙ্গে খেয়ে ফেলেন


জানা গেছে, তিনদিন আগে বাড়িতে মুড়ি খাচ্ছিলেন তারা রাউত নামে ঐ বৃদ্ধা। অসাবধানতায় কোনভাবে মুড়ির সঙ্গে একটি খোলা সেফটিপিন তিনি মুড়ির সঙ্গে খেয়ে ফেলেন। কিন্তু যখন তিনি তা বুঝতে পারেন, তখন আর কিছু করার ছিলোনা। ততক্ষনে খোলা সেফটিপিন মুখ দিয়ে গলায় চলে গেছে। পরে বাড়ির লোকেরা সেই ঘটনার কথা জানতে পারেন।

শনিবার তারা দেবীকে আসানসোল জেলা হাসপাতালের ইএনটি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। রবিবার হাসপাতালের ইএনটি সার্জেন ডাঃ বীরেশ্বর মন্ডল বৃদ্ধার গলার এক্সরে করানোর ব্যবস্থা করান। তারপর সেই রিপোর্টে দেখা যায় যে, খোলা সেফটিপিন কোথায় আটকে আছে।


ডাঃ মন্ডল বলেন, এক্সরে রিপোর্টে দেখি ঐ রোগীর ইসোফেগাসে ( গলার একবারে শেষে সেফটিপিনটা আটকে আছে। ইতিমধ্যেই তিনদিন হয়ে গেছে। এটা বার করতে না পারলে রোগীর সমস্যা হতে পারে। পাশাপাশি খোঁজ নিয়ে জানতে পারি যে, রোগীর হাইপার টেনশনের মতো শারীরিক সমস্যা আছে। তবুও আমি বাড়ির লোকেদের মত নিয়ে ইসোফেগাসকপি করে সেই খোলা সেফটিপিন বার করি৷ বেশি সময় লাগেনি।

চিকিৎসক আরো বলেন, এই ধরনের অস্ত্রোপচার কার্ডিওথোরাসিক সার্জেনরা করে থাকেন। রোগীর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। কিছু সময় পর্যবেক্ষনে রাখার পরে ছেড়ে দেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *