ভ্যাকসিন নেওয়ার পরেও করোনা আক্রান্ত হলেন দুই স্বাস্থ্য কর্মী
বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য ও রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল। কোভিড ১৯ এর ভ্যাকসিন নেওয়ার পরেও করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলেন দুই স্বাস্থ্য কর্মী। ঘটনাটি ঘটেছে চিত্তরঞ্জনের কস্তুরবা গান্ধী হাসপাতালে। সূত্রে জানা গেছে, ঐ দুই স্বাস্থ্য কর্মী করোনা আক্রান্ত হয়ে আপাততঃ রয়েছেন হোম কোয়ারেন্টাইনে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অশ্বিনী কুমার মাজি বলেন এমন ঘটনা দু’একটি ক্ষেত্রে ঘটতে পারে। এনিয়ে ভয় বা আতঙ্কের কিছু নেই। তবে উনি বলেন কবে কবে ওরা করোনার ডোজ নিয়েছিলেন তা অবশ্য আমাদের জানায়নি রেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে কালই রিপোর্ট চাইবো।
অন্যদিকে বার্নপুরের এক বাসিন্দা ৬১ বছরের প্রৌঢ়া মহিলা তার স্বামীর সঙ্গে চেন্নাইতে চিকিৎসা করাতে যান।কয়েকদিন আগে ফিরে এসে অসুস্থ হন এবং তার করোনা ধরা পড়ে। বুধবার তাকে সনকা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে রাস্তাতেই তিনি মারা যান। ওই অবস্থায় তাকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় এবং সেখান থেকেই তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে।
প্রায় এক বছর করোনার ভয়ে ঘরবন্দী থেকে ও সব রকমের সাবধানতা অবলম্বন করার পরে যখন বাজারে ভ্যাকসিন আসে তখন অনেকেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিলেন। তারা ভেবেছিলেন, এবার আর করোনার শিকার হতে হবে না। প্রতিষেধক বা ভ্যাকসিন কোভিড ১৯ থেকে রক্ষা করবে।
কিন্তু বাস্তবক্ষেত্রে দেখা গেল, প্রতিষেধক নেওয়ার পরেও করোনার হাত থেকে রেহাই মিলছে না। অন্ততঃ রেল শহর চিত্তরঞ্জনে ভ্যাকসিন নেওয়ার পরেও করোনাতে দুই স্বাস্থ্য কর্মীর আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা সামনে আসার পর নতুন করে আতঙ্ক বাড়তে শুরু করেছে। কস্তুরবা গান্ধী হাসপাতালের এক পুরুষ স্বাস্থ্য কর্মী ও এক মহিলা স্বাস্থ্য কর্মী ভ্যাকসিনের দুটি করে ডোজ নেওয়ার পরেও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
চিত্তরঞ্জনের রেল কারখানার জনসংযোগ আধিকারিক চিত্রসেন মন্ডলা জানিয়েছেন এই দুই স্বাস্থ্যকর্মীর দ্বিতীয় বার ভ্যাকসিনেশন নেওয়া হয়েছিল সপ্তাহ দুয়েক আগে। কিন্তু তাদের বিশেষ কোনো ধরনের অসুস্থতা না থাকলেও পরীক্ষায় নতুন করে করোনা ধরা পড়ায় দু’জনকেই হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। তিনি বলেন চিকিৎসকরা জানিয়েছেন এই ধরনের ঘটনা ঘটতেই পারে।
তবে এই ঘটনা সামনে আসার পর চিত্তরঞ্জন শহরে ছড়িয়ে পড়েছে তীব্র চাঞ্চল্য। কস্তুরবা গান্ধী হাসপাতালে নতুন করে কোভিড ইউনিট চালু করা হয়েছে। কোভিড আক্রান্ত ওই কর্মীদের আপাততঃ তাদের বাড়িতেই হোম কোয়ারান্টাইন রাখা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, প্রয়োজন মনে হলে তাকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হবে।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অস্বিনী মাজি ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, গত কয়েক মাস ধরে সাধারণ মানুষের মধ্যে কোভিড বিধি নিষেধ মেনে চলার ক্ষেত্রে যে শিথিলতা দেখা যাচ্ছে, তার ফলেই আবার ফিরে আসছে এই রোগ। মাস্ক ও স্যানিটাইজার নিয়মিত ব্যবহার না করলে ও সামাজিক দূরত্ব বিধি না মানলে ব্যাপকহারে জমায়েতের কারণে এই রোগের বিপদ আরও বাড়বে। আপনারাও মিডিয়ার মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করুন।
প্রসঙ্গতঃ, পশ্চিম বর্ধমান জেলায় এখনো পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত ১৬ হাজার ৭০৮ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৬ হাজার ৩৭১ জন। জেলায় মৃত্যু হয়েছে ১৭০ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ২২ জন।