ASANSOLBengali NewsPolitics

জেলায় করোনা রুখতে বহিরাগতদের নিয়ে নতুন প্রস্তাব তৃণমূল কংগ্রেসের

বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য, আসানসোল। পশ্চিম বর্ধমান জেলায় গত তিন দিনে করোনায় একের পর এক রেকর্ড ভেঙেছে। আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে ।চারদিন আগে যেখানে জেলায় ১১২ জন আক্রান্ত হয়েছিল সেখানে তিনদিন পর তা বেড়ে দাঁড়াল ১৯১ এবং গত তিন দিনে দুজন মারা গেছেন।

 এই অবস্থায় তৃণমূলের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনের কাছে শনিবার চিঠি পাঠিয়ে বলা হয়েছে বহিরাগত ভিন রাজ্যের যেকোন দলের জন্যই প্রচারে যেসব নেতারা এই জেলায় আসছেন তাদের করোনা পরীক্ষা করার ব্যবস্থা করা হোক বা করোনা পরীক্ষা করে সার্টিফিকেট আনুন। কমিশনের আধিকারিকরা  তা দেখুন। যদি তারা পরীক্ষা করে সার্টিফিকেট সহ না আসেন সে ক্ষেত্রে তাদের দুই সপ্তাহের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হোক  ও পরীক্ষা করা হোক।

 তৃণমূলের এই আবেদনের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বিজেপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে কমিশনের গাইডলাইনে করোনা  নিয়ে যা আছে তারা তাই করবেন। কিন্তু দোসরা মের পর তৃণমূল  নেতাদেরই কোয়ারেন্টাইনে পাঠাবে ভোটাররা।

দুটি মন্দিরে বিগ্রহ নষ্ট করার চেষ্টা, ভোটের মুখে রাজনীতির বাকযুদ্ধে তৃনমুল ও বিজেপি

শনিবার তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক ভি শিবদাসন দাশু জানান পশ্চিম বর্ধমান জেলার ঝাড়খন্ড লাগোয়া সীমার মধ্যেই পরে। এই জেলায় আমরা লক্ষ্য করে দেখছি মহারাষ্ট্র, গুজরাট ,উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, দিল্লি,বিহার সহ বিভিন্ন রাজ্য থেকে বহিরাগত বিভিন্ন নেতারা প্রচারে আসছেন প্রত্যেকদিন । আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি করছি যে কোনো দলের নেতারা বাইরে থেকে আসছেন তাদের করোনা পরীক্ষাসহ সার্টিফিকেট আনতে হবে । যদি সেই সার্টিফিকেট না থাকে তাহলে তাদের দুই সপ্তাহের কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দিক নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকরা।

উত্তর প্রদেশ, মহারাষ্ট্র, ঝাড়খন্ড ,গুজরাট, দিল্লি,মধ্যপ্রদেশে  ভয়ঙ্কর আকার নিয়েছে করোনা।  এটা ভুলে গেলে চলবে না সম্প্রতি এই জেলার  আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে এবং আমাদের ধারণা এইসব বহিরাগতদের জন্যই এটা বাড়ছে। ভোটের প্রচার করে সবাই চলে যাবে ।আর এই জেলার মানুষেরা ওদের দেওয়া করোনা নিয়ে ভুগবে এটা হতে পারে না। আমি জেলা শাসকের কাছেও লিখিতভাবে এই আবেদন আজই  জানাচ্ছি। তিনি নির্বাচনে জেলার প্রধান এটা তার দেখার কথা। একজন হেলথ অবজারভার থাকলেও ভালো।

তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেন আসানসোলের আইনজীবী কংগ্রেস নেতা 

এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বিজেপির জেলা সভাপতি শিবরাম বর্মন বলেন করোনার বিষয়টা নির্বাচন কমিশন অবশ্যই তার গাইডলাইন অনুযায়ী দেখবেন। আমরা ও আমাদের নেতা এবং কর্মীদের  এই বিষয়ে সচেতন করেছি ।আর আগামী দোসরা এপ্রিল এর পর  তৃণমূলের নেতাদের এ রাজ্যের মানুষ কোয়ারেন্টাইনে পাঠাবে। এটা আমি ওদের মনে করিয়ে দিতে চাই। অপরদিকে সিপিএমের জেলা সম্পাদক এবং প্রাক্তন বিধায়ক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায় বলেন শুধু ভিন রাজ্যই নয় কলকাতা থেকেও বা অন্য জায়গা থেকেও যারা নির্বাচনী প্রচারে আসছেন তাদের অবশ্যই করোনা ভ্যাকসিন নেওয়া আছে কিনা কিংবা করোনা নেগেটিভে আছে কিনা তার সার্টিফিকেট থাকা উচিত । সেই সঙ্গে তাদের করোনার গাইডলাইন মানা উচিত। 

শুধু রাজনৈতিক নেতা নয়, যারা কমিশনের হয়ে বাইরে থেকে আসছেন তাদেরও করোনার পরীক্ষার সার্টিফিকেট আছে কিনা সেটাও দেখা উচিত। এই সমস্ত মানুষের কাছে অনুরোধ করছি যে আপনারা করো না বিধি মেনে চলুন । সদ্যদায়িত্বপ্রাপ্ত পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন নির্বাচন কমিশনের করোনা নিয়ে নিজস্ব যে গাইড লাইন আছে তা অবশ্যই দেখা হচ্ছে এবং নির্বাচনের সময় যারা বুথে বুথে যাবেন তারা ভোটারদের জন্য মাস্ক ,সেনিটাইজার এবং হ্যান্ড গ্লাভস নিয়ে যাবেন ।রাজনৈতিক মিটিং-মিছিলে নেতাদের ক্ষেত্রে বা কর্মীদের ক্ষেত্রে একেবারেই করোনা বিধিমালা হচ্ছে না বলে দেখা যাচ্ছে। এই প্রশ্নের উত্তরে সাংবাফিকদের তিনি বলেন আমি আপনাদের মাধ্যমে রাজনৈতিক নেতাদের এবং তাদের কর্মীদের কাছে আবেদন করব যে তারা যেন নির্বাচন কমিশনের করোনা সংক্রান্ত বিধি মেনে চলেন। এতে সবার ভালো হবে।

Leave a Reply