ASANSOLBARABANI-SALANPUR-CHITTARANJANBengali News

সালানপুর ব্লকের বেসরকারি সংস্থা ২৪ ঘন্টা অক্সিজেন  সরবরাহের  কাজ চালিয়ে যাচ্ছে

বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য, আসানসোল। অক্সিজেনের অভাবে যখন দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ মহারাষ্ট্রে  ঝড়ের বেগে রোগীর মৃত্যু হচ্ছে তখন সালানপুর ব্লকের বিহার রোডের এক বেসরকারি অক্সিজেন নির্মাণকারী সংস্থা ২৪ ঘন্টা ধরে অক্সিজেন  সরবরাহ করার  কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। চাহিদা বাড়ায় কর্মীর সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।এখানকার সেই অক্সিজেন পৌঁছচ্ছে ঝাড়খণ্ডের দেওঘর, দুমকা থেকে , জামতারা থেকে আসানসোল-দুর্গাপুর ,পুরুলিয়া সহ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায়। যারাই বড় সিলিন্ডার নিয়ে আসছেন তারা ৩০০ টাকা দিলেই তরল অক্সিজেন ভরে নিয়ে আনন্দে বাড়ি ফিরছেন।

শিল্পাঞ্চলে যখন ভোর থেকে লাইন দিয়ে কোভিডের ইনজেকশন মিলছে না, বহু জায়গায় কোনও ওষুধ মিলছে না এমনকি কোথাও কোথাও করোনা পরীক্ষা করতে গিয়ে কর্মীর অভাবে তা করা যাচ্ছে না তখন এই গ্রামীণ এলাকার সাত বছর আগে তৈরি হওয়া অক্সিজেনের কারখানাটি অবশ্যই আশার আলো যোগাচ্ছে। এরা অবশ্য শিল্পের প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সরবরাহ করে। 

    সালানপুর ব্লকের অন্তর্গত ঝাড়খন্ড  রোডের উপর অবস্থিত  বেঙ্গল অক্সিজেন  সংস্থা নামক একটি বেসরকারি অক্সিজেন কারখানা ঝাড়খন্ড এবং পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন হাসপাতাল, নার্সিং হোম, চিত্তরঞ্জন রেল  হাসপাতাল সহ সাধারণ মানুষের অক্সিজেন এর চাহিদা মেটাচ্ছে বলেই জানান  এখানকার  অন্যতম  মালিক মহ ওয়াসিম।

এখানকার ম্যানেজার রাজকুমার ঝা জানান বাতাসকে কম্প্যাক্ট করে – ১৯০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় নিয়ে গিয়ে তরল অক্সিজেন তৈরি করা হচ্ছে।তিনি জানান প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৪০০ বড় সিলিন্ডার অক্সিজেনে ভর্তি করে বিভিন্ন জায়গায় পাঠান হচ্ছে। ছোট দু হাজার সিলিন্ডার হলেও আমরা সেটাও ভরে দিতে পারব। ২৪ ঘণ্টাই আমাদের কাজ হচ্ছে। আমাদের অক্সিজেনের অভাব নেই।

আমাদের নিজেদের সিলিন্ডারের অভাব আছে। যারাই সিলিন্ডার নিয়ে আসছেন তাদের আমরা ভরে দিচ্ছি। নিয়ম অনুযায়ী তার মেডিকেল পরীক্ষা করা হচ্ছে এবং ব্যাচ নাম্বার লাগানো হচ্ছে। এই কারখানা অন্যতম মালিক মোহাম্মদ ওয়াসিম জানান সিলিন্ডার ভর্তি করার পিছনে ৫০  টাকা করে বাড়ানো  হয়েছে তার অন্যতম কারণ প্রতিটি সিলিন্ডার কে ভালো করে সেনিটাইজ করা হচ্ছে। আর চাহিদা বাড়ায় আমরা আরো কয়েকজন কর্মীকে কাজে লাগিয়েছি।

এখানে চিত্তরঞ্জন হাসপাতাল থেকে সিলিন্ডার  ভর্তি করতে আসা এক কর্মী জানান তারা নিয়মিতভাবেই এখান থেকে অক্সিজেন নিয়ে যাচ্ছেন । তাদের কোনো অসুবিধা নেই। অন্যদিকে জামতাড়া থেকে আসা একজন হাসপাতালের কর্মী বলেন ঝাড়খণ্ডের এই অঞ্চলের চাহিদা মেটাচ্ছে এই কারখানা ।

জেলায় এখনো কোথাও কোন অক্সিজেনের ঘাটতি নেই

জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব এদিন জেলার সমস্ত হাসপাতাল, বেসরকারি হাসপাতাল, নার্সিং হোম এবং অক্সিজেন সরবরাহকারী বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে অক্সিজেনের চাহিদা ও সরবরাহ নিয়ে বৈঠক করেন। পরে তিনি জানিয়ে দেন আমাদের জেলায় এখনো কোথাও কোন অক্সিজেনের ঘাটতি নেই।

জেলা হাসপাতালের সুপার নিখিল চন্দ্র দাস বলেন আমাদের হাসপাতালে এখনো পর্যন্ত অক্সিজেনের কোন সমস্যা নেই। তবে সালানপুর ব্লকে এমন একটি। অক্সিজেন কারখানা যথেষ্ট সস্তায় অক্সিজেন ভরে দিচ্ছে সিলিন্ডারে এই খবরে চিকিৎসক থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য আধিকারিকরা সন্তোষ প্রকাশ করেন।

বারাবনির বিধায়ক বিধান উপাধ্যায় বলেন কথায় কথায় যারা বলেন তৃণমূলের আমলে শিল্প হয়নি, তারা সালানপুর ব্লকে এলে বুঝবেন শুধু মানুষকে বাঁচানোর জন্য এমন অক্সিজেনের কারখানা নয়, গত দশ বছরে এমন অনেক শিল্প হয়েছে।

Leave a Reply