ASANSOLBengali News

ডিআরএমের নামে ফোন করে প্রতারণার অভিযোগ, তদন্তে পুলিশ ও আরপিএফ

করোনা প্রকোপের মধ্যেই সক্রিয় অসাধু চক্র

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও দেব ভট্টাচার্য, আসানসোল, ১৪ মেঃ করোনা প্রকোপের মধ্যেই সক্রিয় হয়েছে বিভিন্ন অসাধু ও প্রতারণা চক্র। এবার পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশনের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার বা ডিআরএম সুমিত সরকারের নামে ফোন করে শহরের এক প্রতিষ্ঠিত ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী বিক্রির দোকানকে প্রতারণার করার অভিযোগ উঠেছে। টেন্ডারের মাধ্যমে আসানসোলের ডিআরএম অফিসে এসি বা শীততাপনিয়ন্ত্রণ মেশিন ও এলইডি টিভি সাপ্লাই দেওয়ার নাম করে ৭০ হাজার টাকারও বেশি ঐ দোকান মালিকের কাছ থেকে প্রতারণা করা হয়েছে বলে অভিযোগ।

২৯ এপ্রিল থেকে ৮ মের মধ্যে মোট ৪ দফায় এই টাকা ব্যাঙ্কের মাধ্যমে এই টাকা নেওয়া হয়েছে। ঐ দোকানের অন্যতম পার্টনার মনোজ নন্দী গোটা ঘটনার কথা জানিয়ে আসানসোল দক্ষিণ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তার ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। তবে কাউকে গ্রেফতার করা হয় নি।


অন্যদিকে, একবারে ডিআরএমের নামে ফোন করে
প্রতারণা করার অভিযোগ উঠায় নড়েচড়ে বসেছে পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশন। আলাদাভাবে নিজেদের মতো করে আরপিএফ তদন্ত করছে বলে এদিন জানান আসানসোল ডিভিশনের আরপিএফের সিনিয়র সিকিউরিটি কমিশনার চন্দ্রমোহন মিশ্র। এর পাশাপাশি রেলের আসানসোল ডিভিশনের তরফে শহরের বিভিন্ন জায়গায় বাংলা, হিন্দি ও ইংরাজীতে লেখা সতর্কীকরণ বোর্ড টাঙ্গানো হয়েছে।

তাতে বলা হয়েছে, রেল কারোর নামে কাউকে ফোন করে রেলের অফিসে কোন কিছু সাপ্লাই করার কথা বলেনা। কোন কিছু সাপ্লাই করার জন্য রেলের তরফে নিদিষ্ট ওয়েবসাইটে টেন্ডার সহ সবকিছু করা হয়। কেউ যদি এই ধরনের কোনকিছুর কথা বলে, তা ভুল। ভবিষ্যতে এমন কোন কিছু হলে রেলকে যেন জানানো হয়।


জানা গেছে, গত এপ্রিল মাসে শেষ দিকে আসানসোলের ডিআরএম সুমিত সরকারের নাম করে এক ব্যক্তি আসানসোল শহরের জিটি রোডের গীর্জা মোড় সংলগ্ন নামী একটি ইলেকট্রনিকস্ দোকানে ফোন করে। বলা হয়, রেলের কিছু কর্মী অবসর নেবেন। তাদেরকে এসি দেওয়া হবে। সংখ্যাটা ৩২। তারজন্য কলকাতা থেকে সিঙ্গেল টেন্ডার করা হয়েছে। নিয়ম মেনে করতে গেলে সময় লাগবে।

ঐ ব্যক্তি আরো, তারা যদি নিদিষ্ট দিনের মধ্যে এই সংখ্যায় এসি মেশিন সাপ্লাই করতে চান, তাহলে ডিআরএম হিসেবে তিনি গোটা প্রক্রিয়াটি বলে দেবেন। এরপর একইভাবে ২৮টি এলইডি টিভি সাপ্লাই করার কথা বলা হয়। মোট দুটি মোবাইল নম্বর থেকে ফোন করা হয়। দোকানের তরফে ট্রু কলারে দিয়ে দেখা হয় যে, ফোন নম্বর দুটি সুমিত সরকারের নামেই রয়েছে। এরপর দোকানের তরফে কোন রকম সন্দেহ করা হয়নি।

ঐ ব্যক্তি কথা মতো দোকানের তরফে আসানসোলের একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের শাখা থেকে ২৯ এপ্রিল থেকে ৮ মের মধ্যে এনএফটির মাধ্যমে চারদফায় ১৯,৫০০, ১৭,৬০০, ১০,০০০ ও ২৫, ০০০ টাকা একটি ব্যাঙ্কের একাউন্টে পাঠানো হয়। কিন্তু পরে গত কয়েক দিনে কোন কিছু না হওয়ায় দোকানের তরফে আসানসোল ডিআরএম অফিসে যোগাযোগ করা হয়। তখন তারা জানতে পারেন যে, তারা প্রতারিত হয়েছেন।

কিন্তু ডিআরএমের নাম করে এটা করা হয়েছে, তা বুঝে তারা হতবাক হয়ে যান। এরপর দোকানের তরফে আসানসোল দক্ষিণ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ জানায়, অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করা হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে, যে একাউন্টে টাকা পাঠানো হয়েছে, সেটি কলকাতার একটি রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কের শাখার। পুলিশের অনুমান, এই চক্র অনেকটা জামতাড়া গ্যাংয়ের মতো। তবে এই ধরনের প্রতারণা একবারে নতুন।

কেননা এখানে, একবারে ডিআরএমের রেলের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকের নামে করা হচ্ছে।
আরপিএফের সিনিয়র সিকিউরিটি কমিশনার বলেন, রেল গোটা বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখছে।

Leave a Reply