আসানসোল ডিভিশনে RPF ডগ স্কোয়াডে Captain, উপকৃত হবেন রেল প্রশাসন এবং রেল যাত্রীরা
দিল্লি দয়াবতী আরপিএফ ট্রেনিং স্কুল আট মাস ধরে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে
বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য, আসানসোল : আসানসোল ডিভিশনে সিনিয়র সিকিউরিটি কমিশনার চন্দ্রমোহন মিশ্রর উদ্যোগে এবার রেলযাত্রীদের চুরি যাওয়া মাল এবং রেলের চোরাই যন্ত্রাংশ উদ্ধার করা বা বড় ধরনের ডাকাতি তদন্ত করার জন্য পনেরো মাস বয়সের ক্যাপ্টেন (Captain) নামক এক বেলজিয়াম শেফার্ড (Belgium Shepherd) কুকুরকে প্রশিক্ষণ দিয়ে নিয়ে আসা হল। ক্যাপ্টেন কে ব্যাঙ্গালোর থেকে কেনা হয়েছিল এবং তাকে দিল্লি দয়াবতী আরপিএফ (RPF) ট্রেনিং স্কুল আট মাস ধরে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এই মুহূর্তে ক্যাপ্টেন আসানসোল ডিভিশনে ডগ স্কোয়াডের আরও পাঁচ বিখ্যাত কুকুরের সাথে সঙ্গী হয়েছে।
আসানসোলের এই ডগ স্কোয়াড ইতিমধ্যেই অত্যন্ত ভালো কাজ করছে। শুধু তাই নয় সাম্প্রতিক নির্বাচনের সময় প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বা বড় ধরনের যারা ভিআইপি তাদের জন্য রাজ্য পুলিশ প্রশাসন থেকে বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ জোজো, জাভা এবং ম্যাক কে নেয়া হয়েছিল। শুধু তাই নয় আমাদের জেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী লাগোয়া জেলাগুলিতে রেল এলাকার বাইরে কোথাও তেমন বিস্ফোরকের সন্ধান পেলে রেল থেকেই পুলিশ প্রশাসন এদের নিয়ে গিয়ে ব্যবহার করে দুষ্কৃতীদের খুঁজতে।
Read Also: Narada কাণ্ডে নাটকীয় মোড়, নেতাদের অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে স্থগিতাদেশ, বুধবার পর্যন্ত জেলে থাকবেন
এই তিনজন ছাড়া আসানসোল ডিভিশনে তুফান নামে বছর দুয়েক আগে আরেকটি কুকুরকে আনা হয়েছিল। তুফান প্রধানত নারকটিকস ,গাজা, ভাং এসব নিয়ে যারা পাচার করে তাদের রেল বা সংলগ্ন এলাকা থেকে একাধিকবার ধরতে সাহায্য করেছে বলে জানান এই ডগ স্কোয়াডের ওসি (আরপিএফ) সমীর কুমার বর্মন। সমির বাবু বলেন আমাদের বর্তমান সিনিয়র সিকিউরিটি কমিশনার শুধু এই ধরনের কুকুর প্রিয় তাই নয় তার উদ্যোগেই পরপর এই বিশেষ কুকুরগুলি এবং সর্বশেষ ক্যাপ্টেন আমাদের স্কোয়াডে এল। সময় পেলেই এরা কিরকম প্রশিক্ষণ নিচ্ছে আরো কি কি এদের নিয়ে ভাবা যায় তা তিনি নিজে সরোজমিনে এখানে এসে বলেন এবং দেখিয়ে দেন।
আরপিএফ এর সিনিয়র সিকিউরিটি কমিশনার চন্দ্রমোহন মিশ্র বলেন ক্যাপ্টেন কে আমরা শুধু এনেছি তাই নয় ও যখন দিল্লিতে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিল তখন আমাদের দুজন আট মাস ধরে তার সঙ্গেই প্রশিক্ষণে উপস্থিত ছিলেন। এই দুজনে বর্তমানে তাকে সকালে এবং বিকেলে নিয়মিত শারীরিক প্রশিক্ষণ দেন। যদি কোথাও আগুন লেগে যায় বা অনেক উঁচু জায়গা যেখানে সাধারন কুকুররা যাতায়াত করতে পারেন না সেখানে ক্যাপ্টেন সহজেই কিন্তু পৌঁছে যেতে পারবে ।
যারা যাত্রীদের জিনিসপত্র ট্রেন বা প্লাটফর্ম থেকে চুরি করে নিয়ে যাবে অথবা রেলের পড়ে থাকা বিভিন্ন মাল রেল লাইনের ধারে বিভিন্ন যন্ত্রাংশ চুরি করবে ক্যাপ্টেন তাদের ফেলে রাখা জিনিস অথবা তাদের জিনিসের গন্ধ শুঁকে অপরাধী পর্যন্ত ধরতে পারে। অপরাধ ধরার জন্য এদের কাছে অপরাধী কোন রকমের গন্ধটাই প্রধান। এর প্রমাণ এর আগে তারা ভিকি নামে এমন একটি কুকুরকে এনে মধুপুর এবং জামতাড়ার মধ্যে রেলের বড় ধরনের চুরি যাওয়া মাকের সন্ধান করেছিলেন।
শুধু তাই নয় গোটা চোরাই চক্রটি ধরা পড়েছিল গত সাড়ে আট বছর ধরে পূর্ব রেলে থাকা ভিকির কাজে। যেহেতু পূর্ব রেলে ভিকির অবসরের বয়স প্রায় হয়ে গেছে তাই ক্যাপ্টেনকে আনা হলো আসানসোলে। কেননা ওর বয়স মাত্র পনেরো মাস ।শুধু আসানসোলে নয় পূর্ব রেলে এই ধরনের কমবয়সী ট্রেকিং সংক্রান্ত কুকুর আবার নতুন করে ব্যাঙ্গালোর থেকে দিল্লি হয়ে নিয়ে আসা হলো ।
বড় ধরনের চুরি ধরার ক্ষেত্রেও ক্যাপ্টেনকে ব্যবহার করা যেতে পারে
তিনি বলেন এই কুকুর গুলির জন্য আলাদা আলাদা করে গরমে কুলারের যেমন ব্যবস্থা করা আছে ,তেমনি শীতের সময় তাদের আবার যাতে গরম তাপমাত্রা দেয়া যায় তারও হিটার রাখা হয়। এদের বিশেষ ভাবে খাওয়া এবং দেখভালের জন্য আলাদা আলাদা কর্মীরা রয়েছেন। শ্রী মিশ্র বলেন একাধিক বড় বড় খুনের ক্ষেত্রেও আমাদের যোজো, জাভা,, ম্যাক কে এর আগে পুলিশ প্রশাসন ব্যবহার করেছে। এবার বড় ধরনের চুরি ধরার ক্ষেত্রেও ক্যাপ্টেনকে (Captain) ব্যবহার করা যেতে পারে। আমাদের ধারণা এতে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন রেল প্রশাসন এবং রেল যাত্রীরা।