দম্পতির মৃত্যর ঘটনায় চাঞ্চল্য, স্ত্রীর আত্মহত্যার কথা জানার পরেই আত্মঘাতী স্বামী
বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ৪জুন : স্ত্রী বাড়িতে ওড়নার সাহায্যে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এই খবর পেয়ে একইভাবে স্বামী. আত্মঘাতী হলো। দম্পতির এইভাবে মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে । স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক অশান্তির কারণে গলায় ফাঁস লাগিয়ে দুজনেই আত্মঘাতী বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। শুক্রবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে আসানসোলের জামুড়িয়া থানার শান্তিনগর এলাকায়। মৃত দম্পতির নাম অভিনয় মিত্র(২৬) ও পূর্ণিমা মিত্র(১৮)।
১ বছর ৩ মাস আগে অভিনয়ের সঙ্গে পূর্ণিমার বিয়ে হয়েছিল বলে পরিবার সূত্রে জানা গেছে । ম্যাজিস্ট্রেটের রিপোর্টের ভিত্তিতে এদিন দুপুরে আসানসোল জেলা হাসপাতালে পূর্ণিমা ও অভিনয়ের মৃতদেহর ময়নাতদন্ত হয়। এই ঘটনায় কোন অভিযোগ পরিবারের তরফে জামুড়িয়া থানায় করা হয়নি। পুলিশ এই ঘটনায় দুটি আলাদা অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা করেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সকালে কোন কারণে অভিনয় মিত্রর সঙ্গে তার স্ত্রী পূর্ণিমা মিত্রর ঝগড়া হয়। সেই ঝগড়ার পরে স্ত্রী পূর্ণিমা মিত্র নিজের ঘরে ঢুকে যায়। এরপর অভিনয় বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। বেশ কিছুক্ষুন পরে বাড়ির লোকেরা দেখতে পান যে, ঘরের মধ্যে পূর্ণিমা গলায় ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছে। সঙ্গে সঙ্গে বাড়ির লোকেরা তাকে উদ্ধার করে স্থানীয়দের সাহায্যে তড়িঘড়ি আখলপুর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক পরীক্ষা করে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এদিকে স্ত্রীর মৃত্যুর খবর বাইরে থাকা অভিনয় জানতে পারে। সে বাড়ি বাবা রামকুমার মিত্রকে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে তাড়াতাড়ি গিয়ে স্ত্রীকে চিকিৎসা করানোর জন্য যেতে বলে। বাবা শরীর খারাপের কথা বলে যেতে না চাইলেও, অভিনয় তাকে জোর করে পাঠায়।
রামকুমারবাবু জামুড়িয়া থানা মোড় এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়ি গিয়ে আবার ফিরে নিজের বাড়িতে। তখন তিনি দেখেন অভিনয় স্ত্রী যে ওড়না নিয়ে গলায় ফাঁস দিয়েছিল সেটা দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে পড়েছে। তার চিৎকারে আশপাশের লোকেরা দৌড়ে আসেন।
তাকেও উদ্ধার করে স্থানীয় বাসিন্দারা আখলপুর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে এলে চিকিৎসক অভিনয়কেও পরীক্ষা করে মৃত বলে ঘোষণা করেন। জামুড়িয়া থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ময়না তদন্তের জন্য পাঠায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মিত্র পরিবার ও এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
অভিনয়ের বাবা বলেন, স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে কি হয়েছে, তা আমি বলতে পারবো না। বৌমার মৃত্যুর খবর পেয়ে ছেলেও গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে। জানা গেছে, ১ বছর ৩ মাস বিয়ে হলেও অভিনয় ও পূর্ণিমার কোন সন্তান ছিলোনা।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, পারিবারিক অশান্তির কারণে এই দম্পতি আত্মঘাতী হয়েছে। আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের এসিপি তথাগত পান্ডে বলেন, পরিবারের তরফে কোন অভিযোগ দায়ের করা হয় নি। দুটি মৃত্যুর ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা করা হয়েছে।