ASANSOLASANSOL-BURNPURBengali NewsKULTI-BARAKAR

আসানসোল পুরনিগমের পুর প্রশাসক বোর্ড নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বিজেপির প্রাক্তন কাউন্সিলররা, গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃনমুল কংগ্রেস

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত, আসানসোল, ১০ জুনঃ আসানসোল পুরনিগমের ১০৬ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৬৬ টি ওয়ার্ডে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। রাজ্যে তৃতীয়বারের ক্ষমতায় আসা তৃনমুল কংগ্রেস এগিয়ে রয়েছে মাত্র ৪০ টি ওয়ার্ডে। আর সেই সংখ্যা তথ্য তুলে রাজ্য বিধানসভায় হারার মাত্র দেড় মাসের মধ্যে আসানসোল পুরনিগমের প্রশাসক বোর্ড নিয়ে প্রশ্ন তুললো পদ্ম শিবির। বলতে গেলে এটা নিয়ে শাসক দলের সঙ্গে সংঘাতে জড়ালেন পুরনিগমের প্রাক্তন বিজেপির কাউন্সিলররা।

বৃহস্পতিবার সকালে আসানসোলে ২ নং জাতীয় সড়ক লাগোয়া বিজেপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে অভিজিৎ আচার্য্য সহ অন্য কাউন্সিলররা দাবি করেন আসানসোল পুরনিগমের পুর প্রশাসক বোর্ড থেকে শাসক দলের প্রতিনিধিদের সরিয়ে প্রশাসনের আধিকারিককে প্রশাসক করতে হবে। তাদের আরো দাবি, আসানসোল পুরনিগম সহ রাজ্যের সব পুরসভায় দ্রুত নির্বাচন করতে হবে। তা না হলে, তারা বৃহত্তর আন্দোলন করবেন। যদিও পদ্ম শিবিরের এই দাবিকে কার্যত উড়িয়ে দিয়েছে শাসক দল। 

অভিজিৎবাবুরা আরো বলেন, সদ্য হওয়া রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে আসানসোল পুরনিগমের ১০৬ টা ওয়ার্ডের মধ্যে ৬৬ টি ওয়ার্ডে বিজেপি এগিয়ে রয়েছে। এই মুহুর্তে পুর নির্বাচন হলে বিজেপি সংখ্যাগরিষ্টতা নিয়ে আসানসোল পুরনিগম দখল করবে। বর্তমান পুর প্রশাসক বোর্ডের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তারা বলেন, জিতেন্দ্র তেওয়ারি মেয়র ও পুর প্রশাসক থাকাকালীন বিগত বোর্ড প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সময় বিভিন্ন ওয়ার্ডে ত্রিপল পাঠানোর ব্যবস্থা করেছিলো। পুর এলাকার বাসিন্দাদের সমস্যা বিদায়ী পুর বোর্ড বুঝতো। কিন্তু বর্তমান প্রশাসক বোর্ড শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের জেতা ওয়ার্ডে ত্রিপল দেওয়া থেকে সবরকমের সহযোগিতা করছে। বিরোধী দলের জেতা ওয়ার্ড নিয়ে তারা কিন্তু ভাবছে না।

   বিজেপির প্রাক্তন কাউন্সিলররা বলেন, বর্তমান প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান নিজেকে আগামী দিনের মেয়র ভাবতে শুরু করেছেন। প্রশাসক বোর্ডের সদস্যদের সরিয়ে দিয়ে প্রশাসনিক আধিকারিক হিসাবে অরাজনৈতিক ব্যাক্তিকে প্রশাসক বোর্ডে আনার জন্য রাজ্য সরকারের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি খলিল আহমেদ ও রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কে চিঠি দেওয়া হবে । এক সপ্তাহের মধ্যে প্রশাসক বোর্ডের সদস্য পরিবর্তন করা না হলে পুরনিগমের প্রাক্তন বিজেপি কাউন্সিলররা বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন।

 অন্যদিকে, প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান তথা পুর প্রশাসক অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় বিজেপির দাবিকে অবাস্তব বলে উড়িয়ে বলে উড়িয়ে দেন। তিনি বলেন, রাজ্যের বিভিন্ন পুরনিগম ও পুরসভা রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিবের নির্দেশে পরিচালিত হয়। তাই তিনি ঠিক করেন কাকে বা কাদেরকে প্রশাসক বোর্ডে বসানো হবে। এটা বিজেপির কথা হবেনা। তিনি আরো বলেন, এখানে মলয় ঘটক, বিধান উপাধ্যায় ও তাপস বন্দোপাধ্যায়রা জিতে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তৃতীয় বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী করেছেন। তাই মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়ে পুর প্রশাসক বোর্ড করেছ।

বিজেপির প্রাক্তন কাউন্সিলারদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, প্রশাসক বোর্ড কি করে হবে বা তা নিয়ে আন্দোলন না করে তারা বরং কৃষি বিল, দেশের জিডিপি বাড়ানো, দেশের বন্ধ হয়ে যাওয়া শিল্প ও কারখানা খোলার ব্যবস্থা, দেশের মানুষ অনাহারে না মারা যায় ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কিভাবে দিল্লির মসনদে বসানো যায় তার চেষ্টা করা উচিত। তাহলে মানুষ তাদের ভালো বলবে।এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে ছিলেন বিজেপির জেলা কনভেনার শিবরাম বর্মন, শংকর চৌধুরী।প্রসঙ্গতঃ, আসানসোল পুরনিগমের নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করতে বুধবারই আসানসোলের বাসভবনের কার্যালয়ে দলের প্রাক্তন কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক করেছিলেন আসানসোল পুরনিগমের প্রাক্তন মেয়র তথা বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তেওয়ারি।

Leave a Reply