নিষিদ্ধ দেড় কেজিরও বেশি ওপিয়াম গাম সহ রানিগঞ্জ পুলিশের হাতে গ্রেফতার ৬, পাঞ্জাবের সঙ্গে যোগসূত্র আছে, মনে করছে পুলিশ
বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও দেব ভট্টাচার্য, আসানসোল, ১৯ জুনঃ ব্রাউন সুগার তৈরীর কাঁচামাল বা নিষিদ্ধ ওপিয়াম গাম সহ শুক্রবার রাতে ৬ জনকে গ্রেফতার করলো আসানসোলের রানিগঞ্জ থানার পুলিশ। জানা গেছে, শুক্রবার রাতে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে প্রথমে রানিগঞ্জ স্টেশন চত্বর থেকে তিনজনকে গ্রেফতার করে আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের ডিডি ( ডিটেকটিভ ডিপার্টমেন্ট) ও রানিগঞ্জ থানার পুলিশের একটি দল। তাদের কাছ থেকে পাওয়া যায় দেড় কেজিরও বেশি নিষিদ্ধ ওপিয়াম গাম ও দুটি মোটর সাইকেল। বাজেয়াপ্ত হওয়া ওপিয়াম গামের দাম দেড় লক্ষ টাকার বেশি বলে পুলিশ জানতে পেরেছে।
তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে রাতে আরো তিনজনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। ধৃতদের নাম হলো সনু চৌধুরী, অজয় মোল্লার, দীনেশ চৌধুরী, শংকর চৌধুরী তরফে মাহাতো, ভোলানাথ সোলাঙ্কি ও সন্তোষ রাম। ধৃতদের বাড়ি দূর্গাপুরের ওয়ারিয়া, অন্ডাল ও বাঁকুড়ার মেজিয়া থানা এলাকায়। শনিবার ধৃতদের আসানসোল আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের জামিন নাকচ করে ৭ দিনের পুলিশ রিমান্ডের নির্দেশ দেন।
পুলিশ ধৃতদের প্রাথমিকভাবে জেরা করে জানতে পারে যে, নিষিদ্ধ ওপিয়াম গাম পোস্ত গাছের রস জমে তৈরী হয়। এটা তারা আসানসোল, দূর্গাপুর ও বাঁকুড়া জেলায় দামোদর লাগোয়া জমিতে চাষ করা চাষীদের কাছে থেকে কিনতো। এইসব চাষীরা শাকসবজি চাষের আড়ালে পোস্ত চাষ করে থাকে। পোস্ত গাছের ডাল কাটার পরে সেখান থেকে যে রস বেরোয়, তা জমেই তৈরী হয় ওপিয়াম গাম। পুলিশ জেনেছে, ধৃতরা এই ওপিয়াম গাম পাঞ্জাবে সরবরাহ করে থাকে। অনলাইনের মাধ্যমে তারা এই গামের অর্ডার নেয়। পরে অর্ডার মতো ওপিয়াম গাম তারা পাঞ্জাবে পাঠায়।
বেশকিছু দিন ধরেই আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের কাছে গোপনে খবর আসছিলো যে, রানিগঞ্জ থেকে বাইরে নিষিদ্ধ মাদক জাতীয় কিছু সরবরাহ হচ্ছে। সেই মতো আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের ডিডির অফিসার ও রানিগঞ্জ থানার পুলিশের একটি দল এর খোঁজে নামে। শুক্রবার রাতে একটি সূত্র মারফত খবর পেয়ে প্রথমে সনু চৌধুরী, অজয় মোল্লার ও দীনেশ চৌধুরীকে গ্রেফতার করে। এরপর এদের জেরা করে আরো তিনজনকে পুলিশ গ্রেফতার করে।
আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের এসিপি ( সেন্ট্রাল) তথাগত পান্ডে এদিন বলেন, ধৃত ৬ জনকেই ৭ দিনের রিমান্ড পাওয়া গেছে। ধৃতদের জেরা করে জানার চেষ্টা করা হচ্ছে, এই আন্তঃরাজ্য নিষিদ্ধ মাদক চোরাচালান চক্রের পেছনে আর কে কে আছে।
পুলিশের অনুমান, এই চক্রে অনেকেই আছে। তাদের দ্রুত চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা হবে। এখন পর্যন্ত কত পরিমান ওপিয়াম গাম সরবরাহ করা হয়েছে, তাও জানা হবে।
প্রসঙ্গতঃ, আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনার অজয় ঠাকুরের নির্দেশে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন থানার পুলিশ মাদক কারবার বন্ধ করতে সক্রিয় হয়েছে। গত একমাসে প্রায় ১৫ জনকে মাদক কারবারের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করাও হয়েছে। এদের জেরা করে পুলিশ মুর্শিদাবাদের লিঙ্ক খুঁজে পেয়েছে।