ASANSOLBengali News

বধূ হত্যায় অভিযুক্ত স্বামী এবং ভাসুরকে গ্রেপ্তার করল আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত ও রাজা বন্দ্যোপাধ্যায় : বধূ হত্যার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত স্বামী ও ভাসুরকে গ্রেপ্তার করল আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ। বধূ হত্যায় অভিযুক্ত এই দুই যুবককে গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ফেরার ছিলো। তাদেরকে খুঁজছিল পুলিশ। ধৃত দুজনের নাম জিতু বাল্মিকী (২৮) ও বান্টি বাল্মিকী (৩০)। তারা আসানসোলের বুধা গ্রাম এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকলেও আদতে দুজন ছিল রাজস্থানের বাসিন্দা।


পুলিশ সূত্রে থেকে তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের গত ১৬ ফেব্রুয়ারি আসানসোল দক্ষিণ থানায় বধূ হত্যার অভিযোগ দায়ের করেছিলেন আগুনে পুড়ে মৃত বধূ রোজিনা খাতুনের বাবা শেখ ইয়াকত। তিনি পূর্ব বর্ধমান জেলার বর্ধমান সদর থানার মিঠাপুকুর গ্রামের বাসিন্দা।
মৃত রোজিনা খাতুনের বাবার শেখ করা অভিযোগে জানা গেছে, তার মেয়ে রোজিনার সঙ্গে প্রথমে প্রেমের সম্পর্ক হয় জিতু বাল্মিকীর। পরে সেই ভালোবাসার সূত্রে রোজিনা বিয়ে করে জিতু বাল্মীকিকে। আসানসোলের বুধা গ্রাম এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে দুজনে স্বামী স্ত্রী হিসাবে থাকতে শুরু করে। ঐ বাড়িতে তাদের সঙ্গে ভাসুর বান্টি বাল্মীকিও থাকত। রোজিনার বাবা কোনভাবে জানতে পারেন তার মেয়েকে জিতু ও বান্টি প্রায়শই গালিগালাজ ও শারীরিক অত্যাচার করে। গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে রোজিনা ফোন করে তার বাবাকে বলে সে তার বাবার কাছে মিঠাপুকুর ,পূর্ব বর্ধমান আসতে চায়। কারণ তার উপর অত্যাচারের মাত্রা সীমা ছাড়িয়ে গেছো। তিনি মেয়েকে পরের দিন সকালে বাপের বাড়ি আসতে বলেন।


এরপর ঐদিন গভীর রাতে তিনি খবর পান তার মেয়ে রোজিনা গায়ে আগুন লাগিয়েছে। তাকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে তড়িঘড়ি তিনি আসানসোল জেলা হাসপাতালে পৌঁছালে চিকিৎসক তাকে বলেন ভালো চিকিৎসার জন্য তার মেয়েকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হচ্ছে। তিনি বর্ধমান মেডিকেল কলেজে তার মেয়েকে ভর্তি করান। সেখানেই গত ৮ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে দশটায় রোজিনার মৃত্যু হয়। এরপর রোজিনার বাবা গোটা ঘটনার কথা জানিয়ে
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন আসানসোল দক্ষিণ থানায়৷ সেই ভিত্তিতে পুলিশ ( কেস নম্বর : ৬৯/২০২১) ভারতীয় দন্ডবিধির ৪৯৮ /এ ও ৩০৪ /বি ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে।


প্রাথমিকভাবে এসআই জুলফিকার আলী মামলার তদন্ত শুরু করলেও পরবর্তীকালে এই মামলার তদন্তভার হাতে নেন এসআই সজল চৌধুরী। শেষ পর্যন্ত মামলার তদন্তভার হাতে নেন এসআই পরিমল বিশ্বাস।
শুক্রবার সকালে পুলিশ সোর্স মারফত খবর পায় অভিযুক্ত জিতু ও বান্টি বাল্মিকীকে আসানসোল সিটি বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় দেখতে পাওয়া গেছে। সেই খবর পাওয়া মাত্রই তদন্তকারী অফিসার আসানসোল দক্ষিণ থানার ইন্সপেক্টর ইনচার্জ অভিজিৎ চ্যাটার্জিকে বিষয়টি জানান। আইসির নির্দেশে পুলিশ টিম আসানসোল সিটি বাস স্ট্যান্ড চত্বরে অভিযান চালিয়ে ঐ দুজনকে গ্রেপ্তার করে। শুক্রবার ধৃত দুজনকে আসানসোল আদালতে পাঠিয়ে পুলিশ ৭ দিনের রিমান্ড চায়। বিচারক সেই আবেদনের ভিত্তিতে বিচারক তাদের জামিন নাকচ করে ৪ দিনের রিমান্ডের নির্দেশ দেন।