West Bengal

ক্রাইম সিরিয়াল দেখে অন্য রাজ্যে আনার পরিকল্পনা, ৪ দিনের মধ্যে কলকাতার প্রোমোটার খুনের কিনারা করলো মিহিজাম পুলিশ, গ্রেফতার ২

বেঙ্গল মিরর,,রাজা বন্দোপাধ্যায় ও দেব ভট্টাচার্য, আসানসোল, ২৪ আগষ্টঃ ১৫ লক্ষ টাকার মধ্যে বকেয়া ৪ লক্ষ টাকা ফেরত চাইতে গিয়ে খুন হতে হলো প্রোমোটার মহঃ সইফ খান ওরফে গুড্ডুকে। এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করতে নেমে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল পুলিশের হাতে।
কলকাতা থেকে নিখোঁজ হওয়ার ২৪ ঘন্টা পর ঐ প্রোমোটারের মৃতদেহ গত ১৮ আগস্ট উদ্ধার হয়েছিল আসানসোলের চিত্তরঞ্জন সংলগ্ন ঝাড়খণ্ডের মিহিজাম এলাকায় একটি ঝোপ থেকে। তারপর থেকেই মিহিজাম পুলিশ উঠে পড়ে লেগেছিল এই খুনের ঘটনার কিনারা করার জন্য। শেষ পর্যন্ত মৃতের পকেট থেকে পাওয়া চাবির রিংয়ে গাড়ির নম্বরের সূত্র ধরে অপরাধীদের কলকাতা থেকে ধরে ফেলল পুলিশ।


জামতারা জেলার পুলিশ সুপার দীপক কুমার সিনহা মঙ্গলবার মিহিজাম থানায় এক সাংবাদিক সম্মেলন বলেন, পুলিশ কলকাতা থেকে এই খুনের ঘটনায় ব্যবহৃত গাড়ি (ডব্লুবি০২এজি/২২৮২), মৃতের ঘড়ি, স্কুটির চাবি, মোবাইল ফোন, ড্রাইভিং লাইসেন্স, মেট্রো রেলওয়ে স্মার্ট কার্ড, নগদ ১৮০ টাকা, খুনে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করেছে। ঘটনার মাত্র চার দিনের মধ্যে যেভাবে এই খুনের কিনারা মিহিজাম পুলিশ করেছে তার জন্য পুলিশের এই দক্ষতাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি ।


এই ঘটনায় জড়িত কলকাতার বেনিয়াপুকুর এলাকার আফতাব আলম ও নজরে আলম মিহিজাম পুলিশের কাছে জেরায় স্বীকার করেছে যে প্রায় ৪ লক্ষ টাকা যাতে শোধ করতে না হয় তারজন্য সইফকে খুন করার পরিকল্পনা করেছিলেন তারা। সেই পরিকল্পনা বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য টাকা ফেরত দেওয়ার নাম করে সইফকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় তার সম্পর্কিত আত্মীয় নজরে আলম। সইফ তার স্কুটি নিয়ে ডেকে পাঠানো নির্দিষ্ট জায়গায় যায়। সেখানে আফতাব আলম আগে থেকেই একটি হোন্ডা গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন। টাকা ফেরতের কথা শুনে সইফ সেই হোন্ডা গাড়ির ভেতরে গিয়ে বসেন। সে সময় তাকে ঘুমের ওষুধ মেশানো বিয়ার খেতে দেওয়া হয়। সেই বিয়ার খেয়ে সইফ অচৈতন্য হয়ে পড়লে তাকে গাড়িতে তুলে কলকাতা থেকে ঝাড়খণ্ডের দিকে রওনা দেন আফতাব ও নজরে। রাস্তায় মিহিজাম থানার পিপলা মোড়ের কাছে ধারালো ছুরি দিয়ে সইফের গলা কেটে রাস্তার পাশে তারা ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায়। ক্রাইম পেট্রোলের মতো সিরিয়ালে একাধিক ঘটনা দেখেই তারা এই অপরাধ করেছে বলে ধৃতরা পুলিশকে জানিয়েছে ।


কিন্তু কলকাতা থেকে এতটা দূরে ঝাড়খন্ডের মিহিজাম কেন ? এই প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার বলেন, তারা ঐসব সিরিয়াল দেখে জানতে পেরেছিল এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে খুন করে ফেলে দিলে হয়ত ধরা পড়বে না। যদি চাবির রিংয়ের সুত্র না পাওয়া যেত তাহলে এই ঘটনার ক্ষেত্রে কি হতো বলা মুশকিল। এই খুনের ঘটনার মাস্টারমাইন্ড আফতাব বলে পুলিশ সুপার এদিন জানান। তিনি আরো বলেন, কলকাতা থেকে মিহিজামে পুলিশ দুই অপরাধীকে গ্রেফতার করে এখানে নিয়ে এসেছে। তাদেরকে জেরা করেই খুনের মোটিভ ও এইসব তথ্য পাওয়া গেছে।

Leave a Reply