KULTI-BARAKAR

এবার মুজরা পট্টিতে পুলিশের হানা, ভিনরাজ্যের তিন যুবতী সহ গ্রেফতার ৬

সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত ও রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ২৬ আগষ্টঃ নিষিদ্ধ পল্লীর পরে এবার আসানসোলের কুলটি থানার নিয়ামতপুর ফাঁড়ির সীতারামপুরের মুজরাপট্টিতে বুধবার রাতে আচমকা অভিযান চালিয়ে পুলিশ ৫ জন মহিলা ও ১ জন পুরুষকে গ্রেপ্তার করলো । বৃহস্পতিবার তাদেরে আসানসোল আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের জামিন নাকচ করে সাতদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের ডিসিপি ( পশ্চিম ) অভিষেক মোদি, এদিন জানান, নির্দিষ্ট কিছু অভিযোগের ভিত্তিতে ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই বিষয়ে পুলিশ তদন্ত করছে। সবাইকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।


প্রসঙ্গত উল্লেখ্য , আসানসোলের কুলটি থানার নিয়ামতপুর ও সীতারামপুর এলাকায় দুটি নিষিদ্ধপল্লী ছাড়াও সীতারামপুরে একটি বাইজি তথা মুজরা পট্টি আছে। যেখানে বহু বছর আগে থেকেই বেনারসের ঘরানার মুজরা শুরু হয়েছিল। এই মুজরা পট্টিতে ‘তবলা’, হারমোনিয়ামের সঙ্গে ঘুঙুর পড়া নৃত্যশিল্পীদের ‘মুজরা’, নাচের সঙ্গে এখনও চলছে। যেখানে অনেক অপরাধী ও ভিন রাজ্যের ছোট বড় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা মনোরঞ্জনের জন্য যাতায়াত করে থাকেন।


বুধবার রাতে আসানসোল দুর্গাপুর কমিশনারেটের ডিডি বিভাগের একটি দল মুজরা পট্টির একটি বাড়িতে আচমকাই অভিযান চালায়। সেখান থেকে ৫ জন মহিলা ও ১ জন পুরুষকে গ্রেফতার করে কুলটি থানায় নিয়ে যায়। এই পাঁচজনের মধ্যে তিনজন মহিলা মহারাষ্ট্রের বুম্বাই,ও থানের বাসিন্দা বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। বাকি তিনজন সীতারামপুরের বলে জানা যায় ।


পুলিশ সূত্র থেকে আরো জানা গেছে, মুম্বাইয়ের বাসিন্দা এক যুবতী আগে এই মুজরা পট্টিতে থাকতেন। ঐ যুবতী পুলিশ আধিকারিকদের কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করে বলেন, তার মা তাকে অন্যত্র দেহ ব্যবসার কাজে নামিয়ে পাচার করেছে। এরপরেই আসানসোল দূর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার অজয় ​​কুমার ঠাকুরের নির্দেশে বুধবার রাতে সীতারামপুরের মুজরা পট্টিতে অভিযান চালানো হয়। সেই সূত্র ধরেই পুলিশ অভিযানে নেমে ঐ যুবতীর মা ও তার আত্মীয় বলে পরিচিত বলে এমন ৬ জনকে গ্রেফতার করে।


স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে , ভিন রাজ্য থেকে মেয়েদের এখানে নিয়ে আসার প্রথা চলে আসছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে বিশেষ করে মুম্বাই, বিহার, উত্তরপ্রদেশ থেকে মেয়েদেরকে তাদের আত্মীয় হিসেবে আনা হয়। এর পরে ঐসব মেয়েরা যখন প্রাপ্তবয়স্ক হয়, তখন তাকে ব্যবসাতে নামানো হয়। বা অন্যত্র পাঠানো হয় । পুলিশ সূত্রে আরো জানা যায়, মুম্বাইয়ে ঐ যুবতীকে এখানে আনার কাজ তার মা ও পরিবারের সদস্যরা করেছিল।আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের আধিকারিকরা মনে করছেন, এক্ষেত্রেও লছিপুরের নিষিদ্ধ পল্লীর নাবালিকা পাচার মামলার মত এই মুজরা পট্টির ঘটনায় কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে সাপ বেরোবে। বাইরে থেকে আনা অনেক নাবালিকাকে কিভাবে এই পেশায় নামানো বা অন্যত্র পাচার হয়েছে তার সন্ধান হয়তো মিলবে।

Breaking : লছিপুরের নিষিদ্ধ পল্লীতে পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের অভিযান, উদ্ধার প্রায় ৩৫ জন নাবালিকা

Leave a Reply