ASANSOLASANSOL-BURNPURBARABANI-SALANPUR-CHITTARANJANKULTI-BARAKAR

স্পঞ্জ আয়রন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ১ লক্ষ কর্মীদের বোনাস বাড়ল, ৫ অক্টোবরের আগেই দেওয়া হবে

আসানসোলে শ্রম মন্ত্রীর উপস্থিতিতে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে চুক্তি

বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য ও রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ২১ সেপ্টেম্বরঃ রাজ্যের স্পঞ্জ আয়রন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত প্রায় ১ লক্ষ স্থায়ী ও অস্থায়ী কর্মীদের জন্য পুজোর মুখে সুখবর। মঙ্গলবার আসানসোলে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে আলোচনায় চুক্তির মাধ্যমে এবারের বোনাস ও এক্সগ্রাসিয়া নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলো। প্রতিবছর এই সিদ্ধান্ত কলকাতায় বসে নেওয়া হলেও এবার রাজ্যের শ্রম মন্ত্রী বেচারাম মান্না কলকাতা থেকে আসানসোলে এসে বৈঠক করেন। আসানসোলের শ্রম ভবনে হওয়া বৈঠকে শ্রম মন্ত্রী সভাপতিত্বও করেন। গত বছরের তুলনায় এবার বোনাস ও এক্সগ্রাসিয়া বাড়ার ফলে সমস্ত শ্রমিক সংগঠনের নেতা থেকে কর্মীরা সকলেই খুশি। এদিনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে আগামী ৫ অক্টোবরের মধ্যে বোনাস এবং এক্সগ্রাসিয়া শ্রমিকদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। শ্রমমন্ত্রী বেচারাম মান্নার উপস্থিতিতে এই সম্পর্কিত একটি চুক্তিতে মূলত তিনটি প্রধান শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্ব স্বাক্ষর করেন। স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে আইএনটিটিইউসির রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, সিটুর জেলা সভাপতি বংশগোপাল চৌধুরী ও আইএনটিইউসির সভাপতি বিকাশ ঘটক ছিলেন।

কর্মীদের বোনাস বাড়ল


রাজ্য শ্রম দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণবঙ্গের সবকটি জেলা মিলিয়ে প্রায় ২২০ টি স্পঞ্জ আয়রন কারখানা আছে। এই কারখানায় স্থায়ী কর্মী প্রায় ৭০ হাজার। অস্থায়ী কর্মী মিলিয়ে এই সংখ্যাটা প্রায় ১ লক্ষের মতো হবে। তৃনমুল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির পশ্চিম বর্ধমান জেলার সভাপতি অভিজিৎ ঘটক বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে ১৬% বোনাস দাবি করেছিলাম। মন্ত্রী, অন্যান্য শ্রমিক সংগঠন ও মালিকদের সাথে আলোচনা করে ঠিক হয়েছে গতবারের তুলনায় দশমিক পাঁচ শতাংশ বাড়ানো হয়। অর্থাৎ মূল বেতনের সাড়ে ১৫ শতাংশ বোনাস দিতে সম্মত হয়েছে মালিকপক্ষ। গতবারে তা ছিল ১৫% । সেইসঙ্গে গতবার ১০০ টাকা বাড়তি এক্সগ্রাসিয়া দেওয়া হয়েছিল। এবার তার সঙ্গে আরও ১০০ টাকা বাড়িয়ে তা ২০০ টাকা হলো। এরজন্য আমরা ও কর্মী সবাই খুব খুশি।


সিপিএমের শ্রমিক সংগঠন সিটুর জেলা সভাপতি বংশগোপাল চৌধুরী বলেন, গত চার বছর ধরে বোনাস নিয়ে যা হচ্ছিল তার চেয়ে এবার অনেক ভালো হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা দুর্গাপুরের একটি সংস্থা একাধিক কারণ দেখিয়ে বৈঠকে আসেনি। তারা এই বৈঠক পেছোতে চাইছিল । কিন্তু মন্ত্রী ও শ্রমিক সংগঠন গুলির চাপে শেষ পর্যন্ত এদিনই বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়ে চুক্তি হয়েছে। আমরা পরিষ্কার বলে দিয়েছি ৫ অক্টোবরের মধ্যে চুক্তি কার্যকরী করতে হবে। এছাড়াও এদিন আমরা মন্ত্রীকো জানিয়েছি দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি কারখানা ১৭০ জন ঠিকা কর্মীকে বসিয়ে দিয়েছে। তা নিয়ে আমরা শ্রমদপ্তরে অভিযোগ করেছি। শ্রমদপ্তর থেকে ঐ কারখানার মালিকের কাছে তথ্য চাওয়া হয়েছে। বেতন চুক্তির ক্ষেত্রে বলা হয়েছে প্রতিটি শ্রমিক সংগঠন পুজোর পর আলাদা আলাদা করে তাদের দাবি পত্রগুলি পেশ করবে শ্রম দপ্তরে। তারপর তা নিয়ে আলোচনা শুরু হবে। এদিন সব ক্ষেত্রেই শ্রম মন্ত্রীর সদিচ্ছার সিটুর জেলা সভাপতি প্রশংসা করেন।


অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সভাপতির ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে এখন আর রাজ্য স্তরের একজনকে নিয়ে নয়, প্রতিটি জেলার প্রতিনিধিদের নিয়ে এই ধরনের বৈঠকগুলো করছি। এদিনের বৈঠকে দক্ষিণ বঙ্গের ৮টি সাংগঠনিক জেলার শ্রমিক সংগঠনে সভাপতিরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে আমরা উত্তরবঙ্গের চা বাগানের ক্ষেত্রেও এই একই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। সেখানে বোনাস নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামীকাল বুধবার কলকাতায় কোল্ডস্টোরেজ শিল্প নিয়ে একইধরনের বৈঠক হবে। আমরা সবক্ষেত্রেই স্বচ্ছতা চাই।

Leave a Reply