আসানসোলে জলবায়ু ধর্মঘট দিবস পালিত হল, আমরা ইতিমধ্যেই ষষ্ঠ মহাবিলুপ্তির প্রক্রিয়ার মাঝে : জয়া মিত্র
বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য/ সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত, আসানসোল : বিশ্ব উষ্ণায়নের ( global Warming ) কারণে শুক্রবার আসানসোলে জলবায়ু ( Climate ) ধর্মঘট দিবস পালিত হয়। বিশ্বজুড়ে এক সপ্তাহ ধরে এই ধর্মঘট পালিত হচ্ছে। আর এর প্রতিবাদের ঢেউ আসানসোলের পৌঁছলো শুক্রবার ।এদিন বিশিষ্ট নদী বিশেষজ্ঞ এবং পরিবেশবিদ জয়া মিত্রর( Jaya Mitra ) ভূমধ্যসাগর সহ একাধিক সংগঠনের নেতৃত্বে স্থানীয় বি এন আর মোড়ে প্ল্যাকার্ড হাতে শিল্পাঞ্চল সহ পার্শ্ববর্তী রাজ্যের পরিবেশ প্রেমী,চিকিৎসক, কবি সাহিত্যিক ,শিক্ষাবিদ ও শিল্পীরা অংশ নেন। দাবি তোলেন উষ্ণায়ন আটকান। একাধিক পোস্টারে লেখা কবির সেই বিখ্যাত আহ্বান-এই ধরণীর যাহা সম্বল,বাসে ভরা ফুল রসে ভরা ফল, সুস্নিগ্ধ মাটি, সুধাসম জল, পাখির কন্ঠে গান,সকলের এতে সম-অধিকার, এই তার ফরমান।
সাম্প্রতিক IPCC Report -ও সেই কথাই বলছে। প্রাণ প্রকৃতি পরিবেশের বাস্তব অবস্থা হয়তো IPCC report এর চেয়েও ভয়ানক। যে ভাবে চলছে সব, তাতে পৃথিবী আর বাসযোগ্য থাকছে না বহু প্রাণের জন্যই। আমরা ইতিমধ্যেই ষষ্ঠ মহাবিলুপ্তির প্রক্রিয়ার মাঝে।মুষ্টিমেয় লোভী মানুষ, যাদের কারনে ও যাদের অবাধ মুনাফার স্বার্থে এই লাগামছাড়া সংকট, তাদের থামানো তো যায়ই নি বরং মানুষ ও জীবজগতের বিপন্ন অবস্থাকে কাজে লাগিয়ে মুনাফার যথেচ্ছ বৃদ্ধি ঘটাতে সেই বিশ্বব্যাপী বাজারব্যবস্থা অতি তৎপর। করোনা অতিমারির এই সময়কাল পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে। প্রতিবাদ প্রতিরোধের ঢেউকে থামাতে এই পরিস্থিতিকেই কাজে লাগাচ্ছে শাসকরা। আসুন
বুঝবার চেষ্টা করি আমাদের নিজেদের এলাকার কোন কোন ঘটনা জলবায়ু সংকটকে ত্বরান্বিত করছে। এই অঞ্চলের মানুষরা আমরা নিজেরা নিজেদের প্রিয় বাসস্থানটিকে সুস্থ রাখতে সক্রিয় হয়ে উঠি।
এই উপলক্ষে প্রধান বক্তা জয়া মিত্র বলেন আজ সারা পৃথিবী জুড়েই বেঁচে থাকাটাই সমস্যা। গত ১৮ থেকে ২৪ শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জলবায়ু ধর্মঘট পালিত হচ্ছে। তারই মধ্যে আজ শুক্রবার আসানসোলে এই দিনটি পালন করা হচ্ছে। আগামী ১ থেকে ১২ ই নভেম্বর স্কটল্যান্ডের বিশ্ব উষ্ণায়ন কিভাবে রোধ করা যাবে তা নিয়ে আলোচনা হবে। কিন্তু ওই ধরনের আলোচনায় কেবলমাত্র খাওয়া-দাওয়া এবং বেড়ানো ছাড়া কোন কাজ হয়না। ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে বিভিন্ন পেশার মানুষ এরা আজ আসানসোল সহ সারাদেশেই দিনটির গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন শুধু বায়ুদূষণে নয় যেভাবে নদীগুলি দূষিত হচ্ছে ,মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্কের মধ্যেও দূরত্ব বাড়ছে, মানুষ মানুষকে খুন করছে, ভালোবাসার অভাব ঘটছে এ থেকেও আমাদের মুক্তি পেতে হবে। আসানসোল শিল্পাঞ্চলে দামোদর সহ বিভিন্ন ছোট নদী গুলি নানান ভাবে দূষিত হচ্ছে, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং নদীর পাড় দখল হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে বলে আরেক নদী গবেষক সুরজিৎ সুলেখাপুত্র অভিমত প্রকাশ করেন । বিশিষ্ট সমাজকর্মী ও চিকিৎসক স্বাতী ঘোষ বলেন বিশ্ব উষ্ণায়ন কে আটকাতেই আজকের এই সভা এবং প্রতিবাদে উপস্থিত সকলেই সোচ্চার হয়েছেন।
আসানসোলে ক্যালাইডোস্কোপ আয়োজিত ফটোগ্রাফি প্রদর্শনীর উদ্বোধন