ASANSOL

বালুরঘাট-হিলি রেল প্রকল্পের কাজ থমকে যাওয়ার কারণে কেন্দ্রের জবাব তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট

বেঙ্গল মিরর, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত : বালুরঘাট থেকে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী হিলি পর্যন্ত যোগাযোগ তৈরির জন্য রেলপথ প্রকল্পের কাজ ২০১০ সাল থেকে শুরু হওয়ার পরেও কেন থমকে রয়েছে তা নিয়ে কেন্দ্রকে হলফনামা দিয়ে বক্তব্য জানাতে নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ। একইসঙ্গে রাজ্যকেও হলফনামা দিয়ে স্থানীয় সমস্যার কথা তুলে ধরতে নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত।

শুনানির সময় মামলাকারী বীরেন্দ্রনাথ মাহাতোর আইনজীবী কল্যান চক্রবর্তীর অভিযোগ করেন, বালুরঘাট থেকে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী হিলি পর্যন্ত যোগাযোগ তৈরির জন্য গত ২০১০ সালে কেন্দ্রের রেল মন্ত্রক সেখানে কাজ শুরু করে। কয়েকটি সংযোগকারী ব্রীজও তৈরি করা হয়। ওই প্রকল্পের মধ্যে রেলের তরফে প্রায় ৪০ শতাংশ কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। বর্তমানে এই প্রকল্পের প্রায় ৬০ শতাংশ কাজ আটকে রয়েছে। প্রথম দিকে দ্রুত গতিতে কাজ শুরু হলেও ক্রমশ তা থমকে যায়। বর্তমানে এই প্রকল্পের কাজ বন্ধ রয়েছে। অথচ এই প্রকল্প হলে শুধুমাত্র যোগাযোগ ব্যবস্থা নয়, বাণিজ্যিকভাবে বালুরঘাট সহ উত্তরবঙ্গের উন্নয়নের রাস্তা খুলে যাবে। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ব্যবসা বাড়বে। চিকিৎসা ব্যবস্থায় মানুষের সুবিধা হবে। প্রচুর মানুষের কর্মসংস্থান হবে। বাণিজ্যিক করিডর গড়ে উঠবে। অথচ রেল দফতরের গড়িমসির জন্য এই কাজ আটকে রয়েছে। এই প্রকল্পের দ্রুত কাজ শেষ করার জন্যই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়ে মামলা দায়ের করেন বালুরঘাটের বাসিন্দা শিক্ষক, সমাজসেবী সমাজসেবী এবং হিলি বালুরঘাট রেলওয়ে উন্নয়ন সমিতির সদস্য বীরেন্দ্রনাথ মাহাতো ।

মামলাকারী বীরেন্দ্র নাথ মাহাতো বলেন, “দীর্ঘদিন হিলি রেল প্রকল্পটিকে বঞ্চনা করা হচ্ছে ।এই নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের টানাপোড়েন অব্যাহত রয়েছে। এই রেল প্রকল্পটি হলে প্রচুর উন্নয়ন হবে। কোন জনপ্রতিনিধির বাস্তবিক কোনো ভূমিকা না দেখতে পেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছি । জনস্বার্থ মামলা করে প্রকল্পটির বাস্তবায়ন করার আবেদন করেছি।”

প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৩৮ কিলোমিটার দীর্ঘ হিলি বালুরঘাট রেলপথ সম্প্রসারণের কথা ঘোষণা করেন। বালুরঘাটের আত্রেয়ী ও হিলির যমুনা নদীতে রেলপথ সম্প্রসারনের জন্য পিলারও নির্মাণ করা হয়। রেলপথের জন্য ৪১০ একর জমি চিহ্নিতকরণ করা হয়। জমির মূল্য নির্ধারণ করেন আধিকারিকেরা। প্রাক্তন সাংসদ অর্পিতা ঘোষ ২০১৫,২০১৭ ও ২০১৯ সালে এই বিষয় নিয়ে সংসদে সরব হন। ২০১৭ সালে রেলমন্ত্রক এর জন্য অর্থ বরাদ্দ করেন। কিন্তু প্রকল্পের কোন কাজ না হওয়ায় টাকা ফেরত চলে যায়। এর পর থেকেই প্রকল্পের কাজ থমকে রয়েছে। এদিন মামলার শুনানিতে কেন্দ্রের আইনজীবীর বক্তব্যে সন্তুষ্ট হতে পারেনি আদালত। এরপরেই হলফনামা তলব করা হয়।

Leave a Reply