ASANSOL

কয়লাখনি বন্ধ করার প্রতিবাদ সহ একাধিক দাবি, আন্দোলনে শ্রমিক সংগঠন, ২৩ থেকে ইসিএলের সদর দপ্তরে অনশন

বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য ও রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ১২ নভেম্বরঃ ইসিএলের স্বীকৃত শ্রমিক সংগঠন গুলির সঙ্গে কোনরকম আলোচনা না করে একের পর এক কয়লা খনি বন্ধ করার প্রতিবাদ সহ আরো কয়েকটি দাবিতে শুক্রবার থেকেই ইসিএলের ১০ টি এরিয়ায় যৌথভাবে আন্দোলন শুরু করলো ছয়টি শ্রমিক সংগঠনের জয়েন্ট এ্যাকশান কমিটি। আগামী ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে।
জমিদাতাদের থেকে জমি নিয়ে কয়লা তোলার পরেও তাদের পরিবারের সদস্যকে চাকরি দেওয়া হচ্ছে না। কর্মীদের খুশিমতো বদলি করা হচ্ছে। এমনকি এইসব বিষয়ে আলোচনার জন্য বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের তরফে কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হলেও, তার কোন উত্তর পাওয়া যায় নি। শেষ পর্যন্ত, এইসবের প্রতিবাদে ছয়টি শ্রমিক সংগঠন নিয়ে তৈরী জয়েন্ট একশন কমিটির সদস্যরা আগামী ২৩ নভেম্বর থেকে পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের ডিসেরগড়ে ইসিএলের সদর দপ্তরের সামনে অনশনে বসতে চলেছেন।

এই আন্দোলনে যোগ দেবে এআইটিইউসি, সিটু, আইএনটিইউসি , হিন্দ মজদুর সভা, ইউটিইউসি ও ভারতীয় মজদুর সংঘ। সব প্রতিনিধিদের নিয়ে হওয়া এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান জয়েন্ট একশন কমিটির তরফে এআইটিইউসির নেতা তথা প্রাক্তন সাংসদ রামচন্দ্র ( আরসি) সিং। তিনি আরো বলেন, আমাদের দাবি গুলির মধ্যে আছে শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা না করে ইসিএলে একের পর এক ভূগর্ভস্থ কয়লা খনি গুলি বন্ধ করে দেওয়া। দ্বিতীয়তঃ নতুন খনি করার নামে সাধারণ মানুষের থেকে জমি নেওয়ার তিন/চার বছর পরেও জমিদাতাদের একটি বড় অংশের মানুষ আজও চাকরি না দেওয়া। অথচ সেইসব জমিথেকে কয়লা তুলে নেওয়া হয়েছে। তৃতীয়তঃ প্রায় ৫০০ জন কর্মী আছেন যারা ঠিকঠাক হাজিরা দেয়নি বলে তাদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা দেওয়া। যাদের বেশিরভাগই আদিবাসী ও ঠিক মতো লেখাপড়া না জানা মানুষ। তাদেরকে অবিলম্বে কাজে ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি তোলা হয়েছে। চতুর্থতঃ কর্মীদের বদলির ক্ষেত্রে একটি বদলি নীতি তৈরি করতে হবে। পঞ্চমতঃ বৃষ্টির কারণে জল জমা দেখিয়ে খুশিমত খনি বন্ধ রাখা যাবে না।


এদিনের বৈঠকে পরে সিটু নেতা সুজিত ভট্টাচার্য বলেন, গত কয়েক বছরে ইসিএল ২২ টি কয়লাখনি বন্ধ করেছে। আরো খনি বন্ধের কথা তারা গোপনে ভাবছেন। শুধু তাই নয় খনি গুলিকে জলে ডুবিয়ে রেখে পাম্পের সংকট তৈরি করে খনি থেকে কয়লা উৎপাদন না করা। খনির ভেতরে যে কয়লা পড়ে থাকছে তা না দেখিয়ে উৎপাদন বন্ধ রেখে চক্রান্ত করে খনি গুলিকে বন্ধ করার চেষ্টা করছে। এসব আর মানা যাবে না। আমরা শুধু এই আন্দোলন ওখানে করছি তাই নয়, এদিন থেকে ইসিএলের এরিয়া ভিত্তিক এই বিষয়গুলি নিয়ে কর্মীরা আন্দোলন শুরু করেছেন।
এ বিষয়ে ইসিএলের এক আধিকারিক বলেন, আমাদের কাছে এই অনশন আন্দোলনের নোটিশ এসেছে। এরচেয়ে এখনই বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়।

Leave a Reply