ASANSOL

আসানসোলে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসে নাবালিকা অন্তঃসত্ত্বা, অভিযোগে ধৃত দুই ভাই

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ১৯ ডিসেম্বরঃ বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রথমে সহবাস। তাতে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে এক নাবালিকা। পরে বিয়ে করতে অস্বীকার করা ও ঐ নাবালিকাকে মারধর করার অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করলো আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ। যুবককে এই কাজে সহযোগিতা করায় গ্রেফতার করা হয় ঐ যুবকের দাদাকেও। আসানসোলের ইন্দিরা কলোনির বাসিন্দা ধৃত দুই ভাইয়ের নাম হলো রাজীব বাউরি ও বিপুল বাউরি। শনিবার রাতে নাবালিকার বাবার লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। রবিবার ধৃতদের হেফাজত বা রিমান্ড চেয়ে আসানসোল আদালতে পাঠায় পুলিশ। বিচারক সেই আবেদনের ভিত্তিতে দুজনের তিনদিনের পুলিশ রিমান্ডের নির্দেশ দেন। এই ঘটনায় আসানসোলে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে ।


পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঐ নাবালিকা ও রাজীব বাউরি আসানসোলের ইন্দিরা কলোনি এলাকারই বাসিন্দা। বছর খানেক আগে ঐ নাবালিকাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয় রাজীব। এরপর রাজীব প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে নাবালিকার সাথে সহবাস করে। এরফলে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। তখন নাবালিকা রাজীবকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া মতো বিয়ে করতে বলে। নাবালিকা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ার কথা জানতে পেরে নাবালিকার উপরে অত্যাচার করে বলে অভিযোগ প্রেমিক রাজীবের বিরুদ্ধে । শুধু তাই নয়, অভিযুক্তের দাদা ইসিএলের কর্মী বিপুল বাউরির বিরুদ্ধে গর্ভবতী অবস্থায় নাবালিকার পেটে লাথি মারার অভিযোগ রয়েছে। মারধরের ফলে নাবালিকার পেটেই সন্তানের মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ। ঐ নাবালিকা পরে একটি মৃত সন্তানের জন্ম দেয় আসানসোল জেলা হাসপাতালে।
দিন কয়েক আগে এলাকার বাসিন্দারা দুই পরিবারের সদস্যদের বসিয়ে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের জন্য চেষ্টা করেন। কিন্তু অভিযোগ যুবকটি মেয়েটিকে বিয়ে করতে অস্বীকার করে।


এরপরে শনিবার রাতে এলাকার বাসিন্দারা নাবালিকা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে গিয়ে আসানসোল দক্ষিণ থানায় নিয়ে এসে অভিযোগ জানান।
ঐ নাবালিকা জানায়, এলাকারই যুবক রাজীব বাউরির সঙ্গে আমার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সে প্রথমে আমাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সিঁদুর পরিয়ে দেয়। পরে আমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে। কিছুদিন পরে আমি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ি। বাড়ির লোকেরা বিষয়টি জানতে পেরে যুবকের বাড়িতে যায়। কিন্তু রাজীব আমাকে বিয়ে করতে অস্বীকার করে। এরপর নাবালিকার পেটে যুবকের লাথি মারে বলে অভিযোগ ।গর্ভবতী অবস্থায় আসানসোল জেলা হাসপাতালে ভর্তি হলে সেখানে নাবালিকা একটি মৃত সন্তানের জন্ম দেয় ।


এলাকার তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা পাপ্পু সিং বলেন, আমরা মেয়েটির কাছ থেকে ঘটনা শোনার পর তাকে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেছিলাম। পরে তার সন্তান মারা গেছে বলে জানা যায়। তারপর আমরা ছেলের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলেছি। ওরা সেটা মানতে রাজি হয়নি। এরপর শনিবার রাতে আসানসোল দক্ষিণ থানায় নাবালিকা ও তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গিয়ে আমরা অভিযোগ দায়ের করিয়েছি। এই অভিযোগের পরেও পুলিশ যদি ব্যবস্থা না নেয় তাহলে আমরা রাস্তা অবরোধ ও আন্দোলন করবো।
এই ঘটনায় নাবালিকা ও তার পরিবারের সদস্যরা অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবি করেছে।
আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, লিখিত অভিযোগ পেয়ে গোটা ঘটনার তদন্ত করে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের তিনদিনের হেফাজত নেওয়া হয়েছে। ধৃতদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

Leave a Reply