ASANSOLBengali NewsDURGAPUR

আসানসোল ও দূর্গাপুর পুরনিগমের ১১ টি ওয়ার্ডে মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোন, বাজার নিয়ে বৈঠকে মহকুমাশাসক, কমিশনারেটের প্রায় ১০০ পুলিশকর্মী আক্রান্ত

রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ৮ জানুয়ারিঃ পশ্চিম বর্ধমান জেলায় করোনা আক্রান্তর সংখ্যা ৬৩ হাজার পার করার পরিস্থিতিতে আসার পরে বিধিনিষেধ বলবৎ করতে কঠোর হলো পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসন।
জেলার দুই পুরনিগম এলাকার বেশ কিছু অংশে করোনা আক্রান্তর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় সেই সব অংশে মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।

মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোন


শনিবার সকালে আসানসোল ও দূর্গাপুর পুরনিগমের দুই পুর কমিশনার আলাদা করে মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোন করা নিয়ে বিঞ্জপ্তি জারি করেছেন। জানা গেছে, আসানসোল পুরনিগমের ৮ টি ওয়ার্ডের ( ৪০, ৪৩, ৪৫, ৫১, ৫৩, ৫৭, ৭৫ ও ১০৬ নং) বেশ কিছু এলাকাকে মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোন হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তার মধ্যে চারটি ফ্ল্যাট বা বহুতলও আছে। একইভাবে দূর্গাপুর পুরনিগমের তিনটি ওয়ার্ডের ( ১০, ২২ ও ২৭নং) বেশ কিছু রাস্তাকে এদিন থেকেই মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোনের আওতায় আনা হয়েছে। দুই পুরনিগমের পুর কমিশনার ঐসব এলাকার থানায় এর তালিকা পাঠিয়ে দিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। এইসব জোনের মধ্যে থাকা সাধারণ মানুষদের যাতে কোন সমস্যা ও অসুবিধা না হয়, তা দেখা হচ্ছে। মাইকে করে গোটা এলাকায় সচেতনতার প্রচার করা হচ্ছে।


এদিকে, জেলায় হাসপাতালগুলির মতো গত কয়েকদিনে আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটেও করোনার থাবা বেশ জাঁকিয়ে বসেছে। শনিবার বিকেলে আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের ডিসিপি (সদর) অংশুমান সাহা বলেন, এখনো পর্যন্ত আসানসোল ও দূর্গাপুরের বিভিন্ন থানা ও অফিস মিলিয়ে ৯১ জন পুলিশ কর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।


আক্রান্ত হওয়া পুলিশ কর্মীদের মধ্যে বেশ কয়েকটি থানার ওসি ও প্রথম সারীর অফিসার রয়েছেন। এই কারণে থানায় থানায় সাধারণ মানুষের গতিবিধি কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। থানার বাইরে পুলিশ অফিসার বসিয়ে সাধারণ মানুষের কথা শোনা ও অভিযোগ নেওয়া হচ্ছে।
ডিসিপি (সদর) আরো বলেন, গত সাতদিনে ন্যাশানাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট এ্যাক্টে করোনা বিধি মেনে না চলায় আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনাটের বিভিন্ন থানা এলাকায় ১০২২ জনের আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রতিদিন সব থানায় এলাকায় করোনা বিধি কার্যকর করার জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে। একইসঙ্গে চলছে ধরপাকড়ও। বিশেষ করে রাত দশটার পরে নাইট কার্ফু যাতে মেনে চলা হয়, তারজন্য রাস্তায় রাস্তায় টহল দিচ্ছে পুলিশ। পাশাপাশি, বিভিন্ন থানার পক্ষ থেকে করোনা পরিস্থিতিতে যেসব মানুষের খাদ্য সামগ্রী সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস দরকার, তাও দেওয়া হচ্ছে।


এদিকে, শনিবার আসানসোলে মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে করোনা পরিস্থিতিতে বিভিন্ন বাজারে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে তার জন্য একটি বৈঠক হয়। মহকুমাশাসক অভিজ্ঞান পাঁজার উপস্থিতিতে হওয়া এই বৈঠকে আসানসোল চেম্বার অফ কমার্সের সভাপতি নরেশ আগরওয়াল সহ মহকুমার বিভিন্ন বনিকসভার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকের শেষে মহকুমাশাসক বলেন, এই পরিস্থিতিতে আসানসোলের বড় বাজার সহ অন্য এলাকার বাজারে ভিড় কি করে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। ব্যবসায়ী ও দোকানদারদের সঙ্গে কথা বলার জন্য বনিকসভাগুলিকে বলা হয়েছে। পুলিশ ও প্রশাসনকে বনিকসভা সহযোগিতা করছে।


নরেশ আগরওয়াল বলেন, আসানসোল বাজার সহ অন্যান্য বাজার সপ্তাহে একটা নির্দিষ্ট দিনে বন্ধ থাকে। এই করোনা পরিস্থিতিতে আর কোন দিন বাজার বন্ধ করা যায়, তা নিয়ে ব্যবসায়ী ও দোকানদারদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। পাশাপাশি বনিকসভার তরফে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর প্রচার চালানো হচ্ছে। আগামী দিনে এটা আরো বাড়ানো হবে।
উল্লেখ করা যেতে পারে, গত ২৪ ঘন্টায় পশ্চিম বর্ধমান জেলায় নতুন করে ১,০৪৩ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। জেলায় এখন মোট আক্রান্তর সংখ্যা ৬২,৯২৮ জন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *