AMC POLLKULTI-BARAKAR

আসানসোলে তৃণমূল কংগ্রেসের মহিলা প্রার্থীর জাতি শংসাপত্র অবৈধ বলে দাবি সিপিএমের, থানায় অভিযোগ

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও দেব ভট্টাচার্য, আসানসোল, ২০ জানুয়ারিঃ ( Asansol Live News Today) আসানসোল পুরনিগমের কুলটি এলাকার মহিলা তপশিলি জাতি বা এসসি সংরক্ষিত ৬২ নং ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী ক্ষমা মণ্ডলের বিরুদ্ধে তপশিলি জাতির সরকারি শংসাপত্র অবৈধ বলে অভিযোগ তুললেন ঐ ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী স্নিগ্ধা মন্ডল। বৃহস্পতিবার এই নিয়ে তিনি কুলটি থানায় একটি অভিযোগও দায়ের করেন। অবিলম্বে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও জানান তিনি। পুর ভোটের প্রচারের মধ্যে এমন একটি অভিযোগ উঠায় পুর এলাকায় রাজনৈতিক চাপান উতর শুরু হয়েছে।

प्रत्याशी का सर्टिफिकेट फर्जी


এদিন কুলটিতে সিপিএমের পক্ষ থেকে এক সাংবাদিক সম্মেলনে স্নিগ্ধা মণ্ডল ও দলের দুই জেলা নেতা সাগর মুখোপাধ্যায় এবং সুজিত ভট্টাচার্য এই নিয়ে সমস্ত রকম তথ্য সহ অভিযোগের স্বপক্ষে বক্তব্য রাখেন। সব তথ্য সাংবাদিকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সুজিত বাবু বলেন, এর আগে গত ১৩ জানুয়ারি দলের তরফে এই বিষয়ে পুরনিগমের রিটার্নিং অফিসার তথা আসানসোলের মহকুমাশাসক অভিজ্ঞান পাঁজার কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি প্রমানসহ সমস্ত তথ্য দেওয়া হয়েছে।
তাদের দাবি, নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা রিটার্নিং অফিসার এখনো পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় তারা কুলটি থানায় এদিন অভিযোগ দায়ের করেছেন। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে যদি পুলিশ, প্রশাসন বা নির্বাচন কমিশন এই বিষয়ে কোন পদক্ষেপ না নেয় তা হলে তারা উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলে এদিন জানিয়েছেন।


সাংবাদিক সম্মেলনে সিপিএম নেতারা অভিযোগ করে বলেন, ২০০৯ সালের ২৪ মার্চ তারিখে শাসক দলের প্রার্থী ক্ষমা মন্ডলের তপশিলি জাতি শংসাপত্র আসানসোলের ওয়েব সাইটে রয়েছে। তাতে তার নামের পাশে বাবা সুখময় মন্ডল ও মেল অর্থাৎ পুরুষ সন অফ লেখা। অথচ ৯ এপ্রিল ২০০৯ ঐ শংসাপত্রের যে হার্ডকপি দেওয়া হয়েছে তাতে স্বামী হিসেবে সুখময় মন্ডল নাম আছে। যেখানে সন বা ডটার অফ লেখা ছিলো সেখানে পাশে পেন দিয়ে ওয়াইফ অফ লেখা আছে। সিপিএমের নেতারা তাদের অভিযোগের স্বপক্ষে প্রমাণ দিয়ে বলেন ক্ষমা মন্ডলের বাড়ি ঝাড়খন্ডের জামতাড়া জেলার জিয়লজুড়ি গ্রামে। সেখানে ভোটার তালিকাতে তার বাবা বীরেন মন্ডল ও তার কন্যার নাম আছে।

ঝাড়খন্ডের নিয়ম অনুযায়ী মন্ডলরা তপশিলি জাতির মধ্যে পড়ে না। এরপর বিবাহ সূত্রে ক্ষমাদেবী কুলটির পুনুরী গ্রামে চলে আসেন। পৈত্রিক সম্পর্ক থেকে তপশিলি জাতি বা উপজাতির শংসাপত্র পাওয়া যায়। স্বাভাবিকভাবেই তার এই শংসাপত্র হল কি করে? এই প্রশ্ন তুলে সুজিতবাবু বলেন, আমরা আশা করেছিলাম নির্বাচন কমিশনের পক্ষে আসানসোল পুরনিগম ভোটের দায়িত্বে থাকা নির্বাচন আধিকারিক আমাদের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন। কিন্তু তিনি তা করেননি। পুলিশ প্রশাসন আগামী ১৫ দিনের মধ্যে যদি কোনও পদক্ষেপ না নেয় তাহলে আমরা উচ্চ আদালতে বিষয়টা নিয়ে যাব। এই সংরক্ষিত ওয়ার্ডে একটি অবৈধ জাতির শংসাপত্র বা সার্টিফিকেট দিয়ে একজন শাসক দলের প্রার্থী হয়ে লড়বেন আর কমিশন চুপ করে দেখবেন আমরা এটা হতে দেব না। আমরা প্রয়োজনে আদালতে গিয়ে বলব।


অন্যদিকে ক্ষমা মন্ডলকে বাড়িতে না পাওয়া গেলেও তার ভাসুর প্রাক্তন কাউন্সিলর বিশ্বনাথ মন্ডল বলেন, ঐ সার্টিফিকেট সরকারি দপ্তর থেকে দেওয়া হয়েছে। তারা যদি কিছু জানতে চান তাহলে সেখানেই উত্তর দেওয়া হবে। এর বাইরে আলাদা করে কিছু বলবো না।
আসানসোলের মহকুমা শাসক অভিজ্ঞান পাঁজা বলেন, আমি এই ব্যাপারে অভিযোগ পেয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। কমিশন যা নির্দেশ দেবে সেটাই মানবো। তবে নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত এক সরকারি আধিকারিক বলেন, মনোনয়ন পত্র স্ক্রুটিনির যে সময় দেওয়া হয়েছিলো, এই ধরনের অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য, তখন কিন্তু এই অভিযোগ আসেনি।
জেলা শাসক, দলের পক্ষ থেকে এই ব্যাপারে কোন মন্তব্য করা হয়নি।

Leave a Reply