Bihar-Up-JharkhandKULTI-BARAKARWest Bengal

ঝাড়খণ্ডে অবৈধ কয়লা মামলায় নোটিশ দিতে গিয়ে বিপাকে কুলটি থানার পুলিশ, হেনস্তার অভিযোগ

https://youtube.com/shorts/xShWJNJqFRw?feature=share

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও দেব ভট্টাচার্য , আসানসোল, ২৪ জানুয়ারিঃ অবৈধ কয়লা উদ্ধার মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঝাড়খণ্ডে বন্ধ থাকা একটি ক্র্যাসারের মালিককে নোটিশ দিতে গিয়ে বিপাকে আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের কুলটি থানার পুলিশের এক অফিসার। প্রতীক পাল নামে কুলটি থানার এএসআই বা সহকারী সাব ইন্সপেক্টরকে এলাকায় বাসিন্দারা ঘিরে ধরে হেনস্তা করেছেন বলে অভিযোগ। বাসিন্দাদের মধ্যে ক্র্যাসার মালিকের ঘনিষ্ঠ ও ক্র্যাসারের কিছু কর্মীও ছিলেন। রবিবার ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়খণ্ডের নিরসা থানার গলফারবাড়ি ফাঁড়ির মুগমার প্রভাত স্টেডিয়াম লাগোয়া ১৯ নং জাতীয় সড়কের পাশে। বাংলার পুলিশ ঝাড়খণ্ডে নোটিশ দিতে গিয়ে এমন সমস্যার সম্মুখীন হওয়ায় বিভিন্ন মহলে শোরগোল পড়েছে।


গলফারবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির ওসি সঞ্জয় ওরাং বলেন, এদিন বলেন, বাংলার আসানসোল দূর্গাপুর পশ্চিম কমিশনারেটের কুলটি থানার পুলিশের সঙ্গে কোন দূর্ব্যবহার বা হেনস্তা করা হয়েছে, এমন কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। নোটিশ দিতেই পারেন। সেক্ষেত্রে ঐ থানার তরফে আমাদেরকে জানিয়ে ঐ এলাকায় গেলে কোন সমস্যা হতো না। সামান্য ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিলো। মিটিয়ে নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, ক্র্যাসার মালিককে না পেয়ে কুলটি থানার ঐ অফিসার গলফারবাড়ি পুলিশ ফাঁড়িতে সেই নোটিশের প্রতিলিপি দিয়ে ফিরে আসেন। আরো জানা গেছে, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ভারতীয় দন্ডবিধির ৪১/সি নং ধারায় এই নোটিশ কুলটি থানার তরফে ইস্যু করা হয়েছিলো।


রবিবার কুলটি থানার একটি গাড়ি নিয়ে এএসআই প্রতীক পাল নিরসা থানার গলফারবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির অন্তর্গত মুগমার প্রভাত স্টেডিয়াম লাগোয়া ১৯ নং জাতীয় সড়কের পাশে বন্ধ হয়ে থাকা একটি ক্র্যাসারে ( পাথর কাটার যন্ত্র বসানো থাকে) আসেন। অবৈধ কয়লা উদ্ধার মামলায় ক্র্যাসারের মালিককে নোটিশ দিতে তিনি সেখানে যান বলে জানা যায় । কিন্তু পুলিশ অফিসার সেখানে গেট বন্ধ দেখেন। তারপর কোনভাবে তিনি বন্ধ থাকা ক্র্যাসারের ভেতরে ঢুকে পড়েন। আর তারপরেই দেখা দেয় বিপত্তি। সেই খবর পেয়ে এলাকার বেশকিছু মানুষ সেখানে চলে আসেন। তাদের মধ্যে বন্ধ থাকা ক্র্যাসারের কর্মী ও মালিকের ঘনিষ্ঠরা ছিলো। তারা সবাই মিলে পুলিশ অফিসারকে ঘিরে ধরেন।

জানতে চান তিনি কি কারনে সেখানে এসেছেন? পুলিশ অফিসার কাগজ দেখিয়ে বলেন, মালিককে নোটিশ দিতে এসেছি। এরপর তাদের মধ্যে একজন পুলিশ অফিসারের হাত থেকে নোটিশ ছিনিয়েও নেন। তারা জানতে চান, বন্ধ থাকা সত্বেও কেন তিনি বন্ধ ক্র্যাসারের ভেতরে ঢুকেছেন? তাদের অভিযোগ, ঐ পুলিশ অফিসার জোর করে নিরাপত্তা রক্ষীকে ভয় দেখিয়ে ঢুকেছেন। সবাই মিলে তাকে ঘিরে ধরেন। অভিযোগ তাকে হেনস্তা ও দূর্ব্যবহার করা হয়। এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে এলাকায় আসে গলফারবাড়ি ফাঁড়ির পুলিশ। এরপর কুলটি থানার পুলিশ অফিসার ফাঁড়িতে গাড়ি নিয়ে চলে আসেন।


এই প্রসঙ্গে আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের (ডিসিপি পশ্চিম) অভিষেক মুদি এদিন বলেন, কুলটি থানার এক পুলিশ অফিসার ৪১/সি নং ধারায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঝাড়খণ্ডে নোটিশ দিতে যান। কিছু সমস্যা হয়েছিলো। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
প্রসঙ্গতঃ, গত কয়েক দিনে কুলটি ও সালানপুর থানার পুলিশ ঝাড়খন্ড থেকে আসা অবৈধ কয়লা বোঝাই ৩৩ টি ট্রাক আটক করে। গ্রেফতার করা হয়েছে ট্রাকের চালক ও খালাসি মিলিয়ে ২৬ জনকে। যারমধ্যে কয়েকজনকে হেফাজতে নিয়ে পুলিশ জেরা করছে। সেই জেরায় একজনের কাছ থেকে পুলিশ বন্ধ হয়ে থাকা এই ক্র্যাসারের কথা জানতে পারে। যেখানে বেআইনি ভাবে কয়লার ডিপো করা হয়েছে। পুলিশ জানতে পেরেছে, অবৈধ কয়লা ঝাড়খন্ড থেকে বাংলায় এনে বিভিন্ন কারখানা ও সংস্থায় সরবরাহ করার একটা আন্তঃরাজ্য চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে।

Leave a Reply