ASANSOL

সিপিএমের ঘরের ছেলেরা কেউ বাম সমর্থিত নির্দল কেউবা সিপিআইয়ের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করলেও এলাকায় তাদের পরিচিতি আসলে রেড ভলেন্টিয়ার

https://fb.watch/aPos7bEUXR/

বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য, আসানসোল। আসানসোল পুরভোটে ( AMC ELECTION) বামফ্রন্ট (LEFT FRONT) বিশেষ করে মার্কসবাদী কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যরা এবার রেড ভলেন্টিয়াররা (RED VOLUNTEERS) সামনের সারিতে থেকে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। কেমন সংখ্যা অন্তত কুড়ি থেকে ২৫ হবে । বেশিরভাগ রেড ভলেন্টিয়ার এর কাজের সাথে যুক্ত যুবক-যুবতী, ছাত্র ছাত্রীরা এই নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দিতায় তারা একদিকে গত দশ বছরে শাসক দল এলাকার কর্মসংস্থান, গাড়ি নদীর দখলের সমস্যা সহ গুরুত্বপূর্ণ কিছু সমস্যা কে কেন মেটাতে পারেনি তা নিয়ে যেমন প্রশ্ন তুলেছেন, তেমনি রাজ্যের অন্যতম প্রধান বিরোধী দল হিসেবে বিধানসভায় স্বীকৃতি পাওয়া ভারতীয় জনতা পার্টির সাম্প্রদায়িক এবং জাতপাতের রাজনীতি, সেই সঙ্গে একের পর এক কল কারখানা বন্ধ করা, বান স্ট্যান্ডার্ড সহ রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পকে বিক্রি বা বন্ধ করে দেওয়া বিষয়গুলিও তারা নির্বাচনী ইস্যু হিসেবে তুলে ধরছেন।

আসানসোলের ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডে একাধিকবার তৃণমূলের জয়ী প্রার্থী গুরুদাস ট্য়াটার্জি( রকেট) কে টক্কর দিছেন ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে আসা ভিক্টর আচার্জী । উনি বাম সমর্থিত সিপিআইএম প্রার্থী। কোভিডের সময় ভিক্টার কে রেড ভলেন্টিয়াররের কাজে সক্রিয় ভাবে দেখা গিয়েছিল। কমিউনিটি কিচেন করে বাড়িতে বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেওয়া থেকে অন্যান্য চাহিদা মেটানোর চেষ্টা করেছেন । নির্বাচনে প্রথম বার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তিনি বাম আমলে আসনসোলে যে কাজগুলো হয়েছিলো সেটা মানুষের সামনে তুলে ধরছেন, গত দস বছরে তৃনমূলের বোর্ডের কাজ কে তিনি বলছেন সুধু উপরে প্রলেপ পড়েছে, সাধারন মানুষের সমস্য়ার সমাধান হয়নি, তাই এবার বামের ডাক দিছেন তারা।



আসানসোলের ৮৬ নম্বর ওয়ার্ডে একাধিকবার তৃণমূলের জয়ী প্রার্থী এবং সর্বশেষ প্রশাসক বোর্ডের বিদায়ী সদস্যমানস দাসের  বিরুদ্ধে এবার প্রার্থী হয়েছেন রেড ভলেন্টিয়ার এর কাজের সাথে যুক্ত একাদশ শ্রেণীতে পড়ার সময় ছাত্র ফেডারেশন করা শুরু করেন এবং বর্তমানে ডি ওয়াই এফ সিপিএমের যুব সংগঠনের এরিয়া কমিটির সদস্য হিমঘ্ন চন্দ্র। মজার বিষয় এখানে বাম সমর্থিত নির্দল প্রার্থী হয়েছেন তিনি।

কারণ এই আসনটি দীর্ঘদিনের সিপিআইয়ের আসন। যেহেতু সিপিআই প্রার্থী দেয়নি। স্বাভাবিকভাবেই বাম সমর্থিত নির্দল হিসেবে প্রার্থী করা হয়েছে তাকে। ওরা প্রথম এবং দ্বিতীয় করোনার সময় লালচে হেঁশেল কমিউনিটি কিচেন করে বাড়িতে বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেওয়া থেকে অন্যান্য চাহিদা মেটানোর চেষ্টা করেছেন ।তার এই পুরো ওয়ার্ডে একদিকে যেমন প্রচুর  দিনমজুর আছেন তেমনি আছেন গোয়ালা সম্প্রদায় এবং আদিবাসী এলাকার মানুষ। আবার মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়ের  বহুতলের বাসিন্দারাও ভোটার।

তিনি বলেন এই এলাকায় কখনো ভোর চারটের সময় শীতকালে জল আসে, কখনো আবার বিকেলবেলা। সময় এর ঠিক নেই। জমির দালালিতে শাসকদলের একটা বড় অংশ জড়িত থাকায় মানুষের ক্ষোভ আছে। ট্রেনের নোংরা জল অলিতে গলিতে। এলাকার মানুষ অত্যন্ত খুশি আমি প্রার্থী হওয়ায় । যেহেতু তাদের করোনাকালে আমরা পাশেই ছিলাম। স্বাভাবিকভাবেই আলাদা করে পরিচিতি প্রয়োজন হচ্ছে না। সিপিএমের সরাসরি প্রার্থী হলে কি সুবিধে হতো। তিনি বললেন আমাদের বাম কর্মীদের বিশেষ করে রেড ভলেন্টিয়ারদের কাজের মধ্যে দিয়ে পরিস্থিতিটাই প্রধান বিবেচ্য।

আরেকজন রেড ভলেন্টিয়ার ইতিহাস নিয়ে স্নাতকোত্তর পড়া প্রিয়ঙ্কা দাস আসানসোলের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএমের প্রার্থী। কাখোয়া,বকবান্ধি সহ গ্রামীণ এলাকায় প্রিয়ঙ্কার দাদু একসময় পঞ্চায়েত প্রধান ছিলেন। গোটা পরিবার বাম আন্দোলনের সাথে যুক্ত । প্রিয়ঙ্কা জানায় গতবছরের ভয়ংকর বন্যায় গোটা এলাকার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ঘরে ঘরে জল ঢুকে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল ।তারপর মানুষকে অনেক প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও সে প্রতিশ্রুতি পালন করা হয়নি। রেড ভলেন্টিয়ার হিসেবে কাজ করে এখন আমি সবার ঘরের মেয়ে হয়ে উঠেছি। 



আরেকজন রেড ভলেন্টিয়ার হিসেবে আসানসোলে অত্যন্ত জনপ্রিয় তা লাভ করেছে ভিক্টর আচার্য ।তার বাবাসহ সকলেই বাম আদর্শে দীক্ষিত। সিপিএমের রেড ভলেন্টিয়ার পরিচিতিটা এবারের পুরভোটে বেশি কাজে কি লাগছে? সরাসরি উত্তর দিলেন যেহেতু সেই সময় আমরা সারাক্ষণ মানুষকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া ,খাবার দেওয়া ,অক্সিজেন জোগাড় করা এসব করেছি সব মানুষ দেখেছেন। স্বাভাবিকভাবেই সেটা তো একটা পরিচিতি। কেবলমাত্র ভোটের সময় মুখ দেখানো নয়। যুবকরা বলছেন কাজ চাই।  এবারের ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে মনে হয়েছে তারা সাইলেন্ট। আমাদের গোটা এলাকা কিভাবে দুই দল কলুষিত করেছে এটা মানুষ বুঝতে পারছেন। বিশেষ করে ডোমপাড়া, বাউরী পাড়া থেকে একেবারে নিম্নবিত্ত মধ্যবিত্ত যারা তারা আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। আমরাও তাদের পাশে আছি ।সবাই যাতে আমাকে পায় সেজন্য যারা আমার কাছে নম্বর চান তাদের দিলাম। আগে থেকেই বহু মানুষের কাছেই আমার নম্বর ছিল।



আসানসোলের ৪৬ নম্বর ওয়ার্ড প্রার্থী রেড ভলেন্টিয়ার মধুছন্দা দাস সিপিআই প্রতীকে  লড়াই করছেন। কেননা এই ওয়ার্ডটি ও বহু বছর ধরে সিপিআই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে এসেছে বলে তিনি জানান। এখানে তৃণমূলের এবারের যিনি প্রার্থী তিনি গত তিন টার্মে জিতেছেন  সেই শিখা ঘটক এবার তার চতুর্থবারের পরীক্ষাতে বসছেন।   যেখানেই যাচ্ছেন মধুছন্দা কে মানুষ জড়িয়ে ধরেছেন বলে তার দাবি ।তিনি জানান এখানকার অধিকাংশ অলিতে-গলিতে আলো নেই। বেশ কিছু জায়গায় জলের চরম সমস্যা আছে।



আসানসোল রেলপারের ২৫ নম্বর ওয়ার্ড  আরেক রেড ভলেন্টিয়ার আফতাব আলম প্রার্থী হয়েছেন। তিনি বিদায়ী কাউন্সিলর হাজি নাসোর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। গতবছরের ৩০ সেপ্টেম্বর সেই ভয়ংকর বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ ওয়ার্ডের অন্যতম এটা। সেই সময় হাজার হাজার মানুষকে আমরা রেড ভলেন্টিয়াররা উদ্ধার করেছি। তাদের খাবার ,ওষুধের ব্যবস্থা করেছি। আর ২০০৩ সালেবাম আমোল্ড যে আর সি এইচ মেটারনিটি হাসপাতাল তৈরি হয়েছিল তারা উত্তর চালু থাকলেও ইনডোর সম্পূর্ণ বন্ধ গত ১২ বছর ধরে।  বাম আমলে এক্সরে,ইউ এস জি,সন্তান প্রসব  এখানে হত।  আমরা জিতে হাসপাতালটি আবার চালু করব। আর এখানকার  ঝোপরি পট্টি,গুলজার মহল্লা থেকে শুরু করে নোংরা আবর্জনা, দুর্গন্ধ পরিবেশের পরিবর্তন করবই। তিনি বলেন মানুষের কাছে পৌঁছলে মানুষ বলছেন “ভাইয়া আপি ত করোনার টাইমমে হাম লোগ কা ইহা থে রেড ভলান্টিয়ার। মানুষ এর গুরুত্ব বুঝতে পারছে

Leave a Reply