Bengali NewsBihar-Up-Jharkhand

অবৈধভাবে কয়লা তোলার সময় ধস, ২০ জনের চাপা পড়ে থাকার আশঙ্কা, ৫ জনের দেহ উদ্ধার

ঝাড়খণ্ডের নিরসা থানা এলাকায় ইসিএল ও বিসিসিএলের তিনটি খনিতে

রাজা বন্দোপাধ্যায় ও দেব ভট্টাচার্য, আসানসোল, ১ ফেব্রুয়ারিঃ আবার অবৈধ ভাবে কয়লা কাটতে গিয়ে ধসে চাপা পড়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটলো। মঙ্গলবার ভোরের দিকে ঝাড়খন্ডের ইসিএল ও বিসিসিএলের পৃথক তিনটি কোলিয়ারির ওসিপি বা খোলামুখ খনিতে এই ঘটনাগুলি ঘটেছে। এলাকা গুলি হলো ইসিএলের মগমা এরিয়া গোপীনাথপুর ও কাপসারা এবং বিসিসিএলের এরিয়া ১২ চাঁচ ভিক্টোরিয়ার রাবনসিঁড়ির দহিবাড়ি। তিনটি খনি ঝাড়খণ্ডের নিরসা থানা এলাকার মধ্যে পড়ে। তার মধ্যে একটি কয়লা খনি বা কোলিয়ারি বন্ধ আছে। বাকি দুটি চালু খনি বলে জানা গেছে। তিনটি ঘটনায় মোট ২০ জনের কয়লার চাঁইয়ের নিচে চাপা পড়ে মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। তারমধ্যে গোপীনাথপুর থেকে এদিন সন্ধ্যা ছটা পর্যন্ত ৫ টি মৃতদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। সেখানে মোট ১৪ জনের মতো চাপা পড়ে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। বাকি দুটি খনিতে তিনজন করে মোট ৬ জনের চাপা পড়ে মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে নিরসা থানার পুলিশ গোপীনাথপুরের ঘটনার কথা স্বীকার করেছে।


জানা গেছে, ঝাড়খণ্ডের নিরসায় বিসিসিএলের বন্ধ থাকা রাবনসিড়ি খনির দহিবাড়িতে মঙ্গলবার ভোরবেলা বেশ কয়েকজন অবৈধভাবে কয়লা কাটতে আসেব। কয়লা কাটার সময় কয়লার চাঁই ভেঙে পড়ে ও ধস নামে। দাবি সেই ধসে চাপা পড়ে ৩ জন। তারপর জানা যায়, ঐ একই সময়ে পরপর আরো দুটি জায়গা কাপসারা ও গোপীনাথপুরে একই ঘটনা ঘটে। তার মধ্যে শুধু গোপীনাথপুরেই ধসে চাপা পড়ে ১৪ জনের মতো। সকাল এগারোটা পর্যন্ত গোপীনাথপুরে পুলিশ, প্রশাসন ও ইসিএলের তরফে কেউ আসেনি বলে অভিযোগ। পরে একসঙ্গে তিনটি ঘটনার কথা জানাজানি হতে গোপীনাথপুরের ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ইসিএলের মাইনস রেসকিউ টিম। পরে আসে নিরসা থানার পুলিশ।

খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছান নিরসার প্রাক্তন বিধায়ক অরূপ চট্টোপাধ্যায়। অরূপবাবুর অভিযোগ, এদিন মোট তিনটি খনি এলাকায় অবৈধভাবে কয়লা কাটতে গিয়ে ধসে চাপা পড়ে ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে।পুলিশ ও প্রশাসনের একাংশের যোগসাজশে মাফিয়াদের সঙ্গে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই নিরসা থানা এলাকায় বিভিন্ন জায়গায় অবৈধ ভাবে কয়লা কাটা ও উত্তোলনের কাজ চলছে। কারা মাসিক টাকা নেয় বা কাদের অঙ্গুলি হেলনে এই অবৈধ ব্যবসা চলছে তাও সবার জানা। পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক অপর্ণা সেনগুপ্ত। তিনিও এই ঘটনার জন্য ইসিএল কর্তৃপক্ষের গাফিলতিকেই দায়ি করেছেন। তার দাবি সিআইএসএফ বা ইসিএলের নিরাপত্তারক্ষী থাকতেও বহিরাগতরা কেন খনিতে ঢুকবে তা কর্তৃপক্ষের দেখা উচিত।


এদিন সন্ধ্যায় ধানবাদ জেলার পুলিশ সুপার ( গ্রামীণ) রেশমা রেমসন ও নিরসার এসডিপিও পিতাম্বর খেওয়ার বলেন, গোপীনাথপুর থেকে ৫ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে এখনো পর্যন্ত। তাদের পরিচয় জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। বাকি দুটি খনিতে কি ঘটনা ঘটেছে তা জানা নেই। ইসিএলের তরফে কোন অভিযোগ এখনো দায়ের করা হয়নি। তবে পুলিশ নিজেদের মতো করে তদন্ত করছে।
অন্যদিকে, ইসিএলের মুগমা এরিয়ার জিএম পিকে সিংকে ফোন করা হলে, ব্যস্ত আছি বলে ফোন কেটে দেন। ঘটনা নিয়ে তিনি কোন মন্তব্য করেননি।
প্রসঙ্গত, মাত্র কয়েকদিন আগেই পশ্চিম বর্ধমান জেলার পাণ্ডবেশ্বর এলাকায় অবৈধ কয়লা কাটতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছিল ৪ জনের। একইভাবে দিন কয়েক আগে ঝাড়খণ্ড থেকে আসা ৩৬ টি অবৈধ কয়লার ট্রাক ধরা পড়েছে আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের কুলটি ও সালানপুর পুলিশের হাতে।

Leave a Reply