জামুড়িয়ায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, মৃত্যু বেড়ে ২
আহত একজনকে পাঠানো হলো দূর্গাপুরের বেসরকারি হাসপাতালে, প্রশ্নের মুখে গ্রামীণ হাসপাতালের ভূমিকা
বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ৯ মার্চ: লিক আছে কিনা তা আগুন জ্বালিয়ে দেখতে গিয়ে গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে হলো বিস্ফোরণ। আর সেই বিস্ফোরণে কেঁপে উঠলো গোটা এলাকা। ভেঙে পড়লো গোটা বাড়ি। বাড়ির ধ্বংসস্তুপে চাপা পড়ে যান বাড়ির সব লোকেরা। মঙ্গলবার রাতে এই ঘটনাটি ঘটে আসানসোলের জামুড়িয়া থানা বাহাদুরপুর এলাকার গোয়ালা পাড়ায়। এই ঘটনায় বুধবার সকালে মৃত্যু একজনের। মৃতের নাম মালতি মণ্ডল (৫৩)। মঙ্গলবার রাতে আসানসোল জেলা হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছিল ১০ বছরের নাবালক রুপম মণ্ডলের। এদিন সকালে আসানসোল জেলা হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে এ্যাম্বুলেন্সে মৃত্যু হয় সম্পর্কে রুপমের ঠাকুমা মালতিদেবীর। এই ঘটনায় মন্ডল পরিবারের আরও পাঁচজনকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিলো। তাদের নাম হলো চিন্তা মন্ডল (৩০), সাধনা মন্ডল (২০), নন্দরানি মন্ডল (৬৫) ও গৌতম মন্ডল (৩০)। এদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে দুর্গাপুর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
ছোট পাঁচ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারের গ্যাস লিক করে তাতে আগুন লেগে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান পুলিশের। পুলিশ আরো জানায় বিস্ফোরণের জেরে মন্ডল পরিবারের পাকা বাড়ি একেবারে ভেঙে ধূলিসাৎ হয়ে যায়। গোটা ঘটনার তদন্ত করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জামুড়িয়া থানার বাহাদুরপুরের গোয়ালা পাড়ায় সদাময় মণ্ডলের বাড়িতে এই বিস্ফোরণ হয়। মণ্ডল পরিবারের ছেলেদের মধ্যে সদাময়, দয়াময় সহ চার ভাই ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা ছিলেন। বিস্ফোরনে বাড়ির বড় অংশ ভেঙে পড়লে চাপা পড়ে পরিবারের সাতজন সদস্য আহত হন।
পুতুল মণ্ডল নামে পরিবারের এক মহিলা সদস্যর দাবি, গ্যাস সিলিন্ডারের বিস্ফোরনের জেরে এই ঘটনা ঘটেছে। তিনি বলেন, ছোট একটা সিলিন্ডারে এদিন সন্ধ্যায় গ্যাস ভরে আনা হয়। রাত নটা নাগাদ আমার এক আত্মীয়া ঠিক গ্যাস ভরা হয়েছে কিনা তা দেখার জন্য তা জ্বালাতে যায়। তখন তাতে আগুন ধরে। তার চিৎকারে পাশের বাড়ি থেকে আমরা আসার আগেই বিস্ফোরণ হয় ও গোটা বাড়িটা ভেঙে পড়ে।
এই ঘটনার পর আহতদের বাহাদুরপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখান থেকে তাদেরকে স্থানান্তর করে আসানসোল জেলা হাসপাতালে আনা হলে রুপম মণ্ডল মারা যায়। এই মৃত্যুর ঘটনার জেরে বাহাদুরপুর এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। অভিযোগ উঠে চিকিৎসার গাফিলতির। স্থানীয় বাসিন্দারা গ্রামীণ হাসপাতালে ভাঙচুর চালায়। রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভও দেখানো হয়।
পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকার বাসিন্দা ও মন্ডল পরিবারের সদস্যরা বলেন, গ্রামীন হাসপাতালে অক্সিজেন দিয়ে দ্রুত জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে রূপম মণ্ডলের মৃত্যু হতোনা। গ্রামীন হাসপাতালে চিকিৎসার পরিকাঠামো থাকলেও, চিকিৎসা করার মতো কেউ ছিলোনা। অভিযোগ, বিএমওএইচ বা ব্লক মেডিক্যাল অফিসার নিয়মিত থাকেননা।
এই প্রসঙ্গে পশ্চিম বর্ধমান জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের স্বাস্থ্য আধিকারিক বা সিএমওএইচ ডাঃ শেখ ইউনুস এদিন বলেন, গোটা অভিযোগ খতিয়ে দেখতে একটা দলকে সেখানে পাঠানো হয়েছে।