BARABANI-SALANPUR-CHITTARANJAN

বারাবনির স্কুলে পোশাক বিধির নামে মেয়েদের লেগিংস ও গেঞ্জি খুলে দেওয়ার অভিযোগ, অভিভাবকদের তুমুল বিক্ষোভ

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়, আসানসোল, ১০ মার্চঃ স্কুল ড্রেস স্কার্টের নিচে রঙিন লেগিংস ও জামার ভেতর রঙিন ইনার গেঞ্জি পড়ে আসছিলো ছাত্রীরা। তাতে স্কুলের পোশাকবিধি ও নিয়ম ভাঙ্গা হচ্ছে। তাই ছাত্রীদের লেগিংস ও গেঞ্জি খুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই অভিযোগ উঠলো পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের বারাবনির একটি হাইস্কুলে। বারাবনির “পুঁচরা ভগবান মহাবীর দিগম্বর জৈন সরাক উচ্চ বিদ্যালয়ে” অভিভাবকরা বৃহস্পতিবার এই অভিযোগ তুলে তুমুল বিক্ষোভ দেখালেন প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। প্রধান শিক্ষক অভিজিত উপাধ্যায়কে স্কুল থেকে বদলির দাবিও তোলা হয় এই বিক্ষোভ থেকে । যদিও অভিভাবকদের তোলা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রধান শিক্ষক সহ স্কুলের অন্য শিক্ষক শিক্ষিকারা। রঙিন লেগিংস খুলে ফেলার নির্দেশ স্বীকার করলেও ইনার গেঞ্জি খোলানোর কথা অস্বীকার করেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।


অভিযোগ, কয়েকদিন ধরেই বারাবনির এই স্কুলের ছাত্রীদের পোষাক বিধি নিয়ে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাথরুমে গিয়ে ছাত্রীদের রঙিন লেগিংস খুলে ফেলতে বলা হয়েছে। এই খবর ছড়িয়ে পড়ে অভিভাবকদের মধ্যে। অভিভাবকরা এদিন দুপুরে দলে দলে স্কুলে হাজির হন। চলতে থাকে বিক্ষোভ। বিক্ষোভ চলাকালীন ছাত্রীরা কার্যত কেঁদে ফেলেন। কেউ কেউ অঞ্জানও হয়ে যায়। উত্তাল হয়ে ওঠে স্কুল চত্তর। ছুটে আসতে হয় বারাবনি থানার পুলিশকে।


ছাত্রীদের মায়েদের অভিযোগ, স্কুলের প্রধানশিক্ষক এই লজ্জাজনক ঘটনা ঘটিয়েছেন । অবিলম্বে তাকে বদলি করতে হবে।
অন্যদিকে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষিকাদের বক্তব্য, অভিভাবকদের অভিযোগ সঠিক নয়। স্কুলের পোশাকবিধির নির্দেশনামা নিয়ে অপব্যাখ্যা করছেন অভিভাবকরা। সরকারি নিয়ম পঞ্চম শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রীদের শুধু সাদা জামা ও নীল স্কার্ট অর্থ্যাৎ স্কুলের পোশাক পরে আসতে বলা হয়েছে। শীতকালের সময় অনেকে লেগিংস পরে আসছিল। এবার গরমকাল। তাই সেটা পড়তে নিষেধ করা স্কুলের শিক্ষিকা গার্গি চৌধুরী বলেন, রঙিন লেগিংস পরতে বারণ করা হয়েছে। ইনার গেঞ্জি খোলানোর অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। তিনি আরো বলেন, এই অভিযোগ করা মানে আমাদের শিক্ষিকা ও নারী জাতীকে অপমান করা। কিন্তু অভিভাবকদের একাংশ এদিন এই মিথ্যা অভিযোগ এনে সবাইকে অপমান করলেন।


স্কুলের প্রধান শিক্ষক অভিজিত উপাধ্যায় বলেন, ডিসিপ্লিন ও নিয়মশৃঙ্খলার পাঠ দেওয়া কি অন্যায় ? স্কুলের পোশাকবিধি পরে আসতে বলা হয়েছে ছাত্রীদের। কিন্তু অভিভাবকদের একাংশ পোশাকবিধির খোলানো নিয়ে অপব্যাখ্যা করছেন। ঐ ছাত্রীরা আমার কন্যাসম। তারা এইসব অভিযোগ করে শিক্ষককূলকে অপমান করছেন।
এদিন অভিভাবকরা হাতে রঙিন লেগিংস ও গেঞ্জি নিয়ে পুলিশের সামনে বিক্ষোভ দেখান। তারা পুলিশকে অভিযোগ করে বলেন, জোর করে এইসব ড্রেস খোলানো হয়েছে। বিক্ষোভরত মহিলা অভিভাবকরা বলেন, মেয়েরা বড় হয়েছে। বিভিন্ন কারণে শারীরিক অসুবিধার মধ্যে পড়তে হয়। যে কারণেই লেগিংস পড়িয়ে পাঠাতে হয়। কিন্তু লেগিংস খুলে নেওয়া হচ্ছে।

তারপর আবার জামার ভেতর গেঞ্জিও বাথরুমে নিয়ে গিয়ে খোলানো হচ্ছে। অভিভাবকদের দাবি, এই পোশাকের ব্যাপারে কোন আপত্তি থাকলে অভিভাবকদের ডেকে বলতে পারতো স্কুল কর্তৃপক্ষ। খুলিয়ে দেওয়ার অধিকার কে তাদের দিয়েছে? ছাত্রীদের অভিযোগ গত সাত আটদিন ধরে এই ঘটনা চলছে। বুধবারও অনেকেরই খুলিয়ে দেওয়া হয়েছিলো। অভিভাবকরা বলেন, আমরা উপর মহলে অভিযোগ করবো এই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
এই প্রসঙ্গে জেলার অতিরিক্ত জেলা শাসক ( শিক্ষা) সঞ্জয় পাল বলেন, ঠিক কি হয়েছে তা জেলা স্কুল পরিদর্শক বা ডিআইয়ের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে।

News Editor

Mr. Chandan | Senior News Editor Profile Mr. Chandan is a highly respected and seasoned Senior News Editor who brings over two decades (20+ years) of distinguished experience in the print media industry to the Bengal Mirror team. His extensive expertise is instrumental in upholding our commitment to quality, accuracy, and the #ThinkPositive journalistic standard.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *