জিতেন্দ্র তেওয়ারিকে কনভেনারের দায়িত্ব দিলো পদ্ম শিবির, বললেন আসানসোলকে চিনতেই শত্রুঘ্ন সিনহার দু বছর লেগে যাবে
রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ২০ মার্চঃ আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনে দলের প্রার্থী হওয়ায় দৌড়ে অনেকটাই এগিয়েছিলেন আসানসোল পুরনিগমের প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র তেওয়ারি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দল প্রার্থী করলো আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক তথা রাজ্য সম্পাদক অগ্নিমিত্রা পালকে। তবে সেই অগ্নিমিত্রা পালের জয়ের জন্য মুল দায়িত্ব দেওয়া হল সেই জিতেন্দ্র তেওয়ারিকেই।
শনিবারই আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনে দলের কনভেনর বা আহ্বায়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে। সেই দায়িত্ব পাওয়ার পরেই জিতেন্দ্র তেওয়ারির জবাব, দলের টিকিট পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী ছিলাম। তাতে ভুল কিছু নেই। অনেকেই তো দলের প্রার্থী হওয়ার প্রত্যাশা করে। আমিও তাই করেছিলাম। কিন্তু দল অন্যরকম চিন্তাভাবনা করল। অন্য একজনকে প্রার্থী করলো। আমি দলের অনুগত সৈনিক। তাই দলের ঠিক করা প্রার্থীকে জয়ী করার জন্য নেমে পড়লাম ময়দানে। দল আমার উপর ভরসা করে। তাই উপনির্বাচনে কনভেনরের দায়িত্ব দিয়েছে।
বিজেপি সূত্রে খবর, জিতেন্দ্র তেওয়ারিকে আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনে দলের প্রার্থী করা নিয়ে দোটানায় পড়েছিলেন বিজেপি নেতৃত্ব। কারণ, দলবদলু নেতাদের উপর আর ভরসা রাখা যায় কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল দলের অন্দরেই। তবে প্রার্থী না করলেও আসানসোল লোকসভার ভোট বৈতরণী পার করতে জিতেন্দ্র তেওয়ারিকে উপেক্ষাও করতে পারল না বিজেপি নেতৃত্ব। শনিবারই আসানসোল উপনির্বাচনের কথা মাথায় রেখে দলের রাজ্য নেতৃত্বর তরফে বেশ কিছু দায়িত্ব বণ্টন করা হয়েছে। তাতে জিতেন্দ্র তেওয়ারিকে কনভেনর বা আহ্বায়কের দায়িত্ব দিয়েছে রাজ্য নেতৃত্ব। সহ-আহ্বায়কের দায়িত্ব পেয়েছেন কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়। একইভাবে প্রচার কমিটির ইনচার্জ করা হয়েছে দূর্গাপুরের বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই ও কো-ইনচার্জ করা হয়েছে কুলটির বিধায়ক ডাঃ অজয় পোদ্দারকে।
উল্লেখ্য, সদ্য শেষ হওয়া আসানসোল পুরভোটে জিতেন্দ্র তেওয়ারি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি। তবে পুরভোটে তাঁর স্ত্রী চৈতালি তেওয়ারি রেলপারের একটি ওয়ার্ড থেকে পদ্ম টিকিটে ভোটে লড়ে জিতে কাউন্সিলর হয়েছেন। একইসঙ্গে বিধায়ক, আসানসোল পুরনিগমের মেয়র ও তৃনমুল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি হওয়ার সুবাদে এই এলাকার রাজনীতির মাটি হাতের তালুর মতো চেনা জিতেন্দ্র তেওয়ারির। পুরভোটের সময়ও নিজে প্রার্থী না হলেও পেছন থেকে দলের নির্বাচনের যাবতীয় কর্মকাণ্ড সামলেছেন তিনি। বিজেপির এই মুহুর্তে আসানসোলে যা সাংগঠনিক শক্তি রয়েছে, তার জন্য কিছুটা হলেও জিতেন্দ্র তেওয়ারির ভূমিকা অনস্বীকার্য। বঙ্গ রাজনীতিতেও একজন দক্ষ সংগঠক হিসেবে তার নাম রয়েছে। তাই এ হেন পোড় খাওয়া রাজনীতিককে নির্বাচনী ময়দানের বড় দায়িত্ব দিল বিজেপি নেতৃত্ব। প্রার্থী করা না হলেও, তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতাকে এবারের আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনে পুরোদস্তুর কাজে লাগাতে চাইছে দল। অন্তত এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।।
রবিবার বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পাল ঘাঘর বুড়ি মন্দিরে পুজো দেন। তার পুরোভাগে ছিলেন জিতেন্দ্র তেওয়ারি। তিনি বলেন, দল এমন একজনকে প্রার্থী করেছেন যাঁকে ঘাঘরবুড়ি মন্দির চেনাতে হয়নি। তিনি নিজেই এসেছেন পুজো দিতে। কিন্তু শত্রুঘ্ন সিনহাকে হয়তো কোনও তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা বলে দেবেন, ঘাঘরবুড়ি মন্দিরে পুজো দিতে হবে। তবে তিনি আসবেন। আসানসোলকে চিনতেই শত্রুঘ্ন সিনহার দু বছর লেগে যাবে। আমরা এটাই চেয়েছিলাম স্থানীয় কাউকে প্রার্থী করুক দল। সেটাই হয়েছে। দলের প্রার্থী ৩ লক্ষ ভোটে জিতবে বলে এদিন জিতেন্দ্র তেওয়ারি দাবি করেন ।