ASANSOL

যাহাই সিআইডি, তাহাই সিবিআই, কেন্দ্র ও রাজ্যকে আক্রমন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহঃ সেলিমের

১৯ পাতার ডিজিটাল প্রচার পুস্তিকার উদ্বোধন

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল,  রাজা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দেব ভট্টাচার্য ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত : যাহাই সিআইডি, তাহাই সিবিআই। একইভাবে যা নবান্ন, তা ছাপান্ন। শনিবার আসানসোলে এমনভাবেই রাজ্য সরকার ও কেন্দ্র সরকারকে আক্রমন করলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহঃ সেলিম। আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনে দলের পশ্চিম বর্ধমান জেলা নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করতে এদিন আসানসোলে আসেন সিপিএমের পলিটব্যুরোর এই সদস্য।

 
   আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনের বামফ্রন্ট মনোনীত সিপিএম প্রার্থী  পার্থ মুখোপাধ্যায়ের সমর্থনে শনিবার দুপুরে আসানসোলের আপকার গার্ডেনে দলের জেলা অফিসে রাজ্য সম্পাদক মহঃ সেলিম ১৯ পাতার একটি ডিজিটাল প্রচার পুস্তিকার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। ” আসানসোল বলছে ”  নামে সেই পুস্তিকায় এবারে ভোটের প্রচারে বিভিন্ন  ইস্যুগুলো উল্লেখ করা হয়েছে।

এই প্রসঙ্গে জেলা সম্পাদক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায় বলেন, পুস্তিকাটি ডিজিটাল মাধ্যমে এক লক্ষ ভোটারের কাছে পাঠানো হবে। পাঁচ হাজার ছাত্র,  যুব ও মহিলা নেতৃত্বর কাছেও পাঠানো হবে। পাশাপাশি প্রতি বুথে অন্ততঃ ৫০ জনকে এটা পাঠানো হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিন মহঃ সেলিম সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন,  বাম আমলে এই আসানসোল দূর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে শিল্প যারা করতে চান তাদের জমি দেওয়া যেত না। সেই সময় এতটাই চাহিদা ছিল। অনেক নতুন নতুন শিল্প এসেছিল।

  আর আজ কেন্দ্রীয় সরকার একদিকে একের পর এক রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প ও কলকারখানা বন্ধ করছে বা বিক্রি করছে। কয়লা খনি বন্ধ করছে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক তুলে বহু মানুষের কাজ কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। দেশের যুব সম্প্রদায়কে বেকার করে দিচ্ছে  দিল্লির ৫৬ ইঞ্চির সরকার। এর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে আমাদের আহ্বান শিল্পাঞ্চলের মানুষের কাছে এই ভোটের মাধ্যমেই তার প্রতিবাদ জানাতে হবে। একই সঙ্গে তিনি বলেন, ভোট এলেই দেখা যায় কেন্দ্রীয় সরকার সিবিআই  ও ইডিকে ঝাঁপি থেকে বার করে ভয় দেখায় ।


সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি শুক্রবারই দিল্লিতে সিবিআইয়ের এক অনুষ্ঠানে সিবিআইয়ের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। সেই প্রসঙ্গে মহঃ সেলিম বলেন, তিনি যা বলেছেন, একদম ঠিক। এরমধ্যে কোন ভুল নেই। সাপুড়েদের দেখেছেন, ঝাঁপি থেকে বিষহীন সাপ বার করে ভয় দেখায়। সেই সাপগুলোকে ছেড়ে দেওয়ার পর লোকেরা দূরে চলে গেলে তারপর সাপ গুটিয়ে আবার ঝাঁপিতে নিয়ে চলে যায়। ভোট এলেই দিল্লি সরকার সেই ভূমিকাই নেয় ওদের নিয়ে। অনেকটা রাজ্য পুলিশের সিআইডির মতো। দুটোই এক। সেজন্যই আমরা সব সময়ই দাবি করি আদালতের পর্যবেক্ষণে সিবিআই তদন্ত হোক। কখনোই আমরা শুধু সিবিআই তদন্ত চাই না কোন মামলায়। নবান্ন ও ছাপান্ন, তৃনমুল কংগ্রেস ও আরএসএস সদর দপ্তর  থেকে পরিচালিত হয় । একজন জ্বালানি, গ্যাস ও কেরোসিনের দাম বাড়ালে, অন্যজন দুধের দাম বাড়াচ্ছে। একজন রেল বিক্রি করলে অন্যজন ট্রাম ডিপো থেকে পাহাড়ের টিলা বিক্রি করছে।


এখন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তিনি কিছুদিন আগেও তৃণমূল কংগ্রেসে ছিলেন। তৃনমুল কংগ্রেসের অপকর্মের নায়ক। অনুব্রত মন্ডল দেখবেন হয়তো সিবিআই ও ইডির ভয়ে বিজেপিতে চলে যাবেন।  ২০১৪ ও ২০১৯ এ বামপন্থীদের একটা বড় অংশর ভোট চলে গিয়েছিল অন্য দলে। এবার কি সেটা ফিরবে ? এই প্রশ্নের উত্তরে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বলেন,  গত কয়েকটা নির্বাচনে বামফ্রন্টের ভোট বেড়েছে । বিশেষ করে যুবক, যুবতী ও নতুন প্রজন্মের উৎসাহ অনেক বাড়ছে। রেড ভলেন্টিয়ার্সের কাজ দেখে অবশ্যই প্রচুর মানুষ বামপন্থার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে, তা ইতিমধ্যেই নানান ভোটের ফলাফলে প্রমাণিত। বিজেপির দার্জিলিং নিয়ে ভাগের যে চেষ্টা তার বিরোধিতা করে তিনি বলেন বামপন্থীরা প্রয়োজনে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করবে।


অন্যদিকে, মহঃ সেলিমের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে এদিন বিকেলে আসানসোল দলের প্রার্থীর সমর্থনে প্রচারে এসে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, যার জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে ও যে দলের একজনও বিধায়ক বাংলায় নেই, সেই দলের নেতার কথার উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন মনে করিনা।

Leave a Reply