ASANSOL

রাজ্যে বিয়ারের ঘাটতি, গ্রীষ্মে চাহিদা বেড়েছ

আবগারি দপ্তর ক্রেতাদের জন্য রেশন ব্যবস্থা চালু করেছে

বেঙ্গল মিরর, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত ও রাজা বন্দ্যোপাধ্যায় : রাজ্যে বিয়ারের অভাব, গ্রীষ্মে চাহিদা বেড়েছে বৃষ্টির কোনো আভাস দিচ্ছে না আবহাওয়া অধিদপ্তর, বৈশাখে গরম বাড়বে। কালবৈশাখী আসবে কি আসবে না বোঝা যাচ্ছে না। গ্রীষ্মকালে কেউ কেউ বিয়ার পান করে গলা ও শরীর ঠান্ডা রাখছিল। কিন্তু রাজ্যে বিয়ারের ঘাটতি রয়েছে।

Beer menu design for Dargett Brewpub
Beer menu design for Dargett Brewpub by Improvise Club, Hrach Simonyan, Armen Khudgaryan is licensed under CC-BY-NC-ND 4.0

এই কারণে আবগারি দফতর রেশন ব্যবস্থার মাধ্যমে বিয়ার বিক্রেতাদের বরাদ্দ করছে। এর কারণ রাজ্যে বিয়ারের ঘাটতি। চাহিদার মতো সরবরাহ নেই। আর তা সামাল দিতে রাজ্য আবগারি দফতর বিয়ার সরবরাহের জন্য রেশনিং শুরু করে। এক বছর আগে 2021 সালের এপ্রিলে দোকানে যে পরিমাণ বিয়ার বিক্রি হয়েছিল ঠিক সেই পরিমাণ বিয়ার এখন সরবরাহ করা হবে। আবগারি দফতর এর জন্য একটি নীতিও ঠিক করেছে।

বিয়ারের ঘাটতি: পর্যাপ্ত উৎপাদন নেই

যদিও আবগারি দফতর দাবি করছে যে রাজ্য চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত বিয়ার উৎপাদন করছে না, বিক্রেতারা অন্য অভিযোগ করছেন। তাঁর মতে, আবগারি দফতরের পর্যাপ্ত সরবরাহ ব্যবস্থা নেই। তাই জেলার দোকানগুলোতে বিয়ারের সংকট ঘনীভূত হচ্ছে। যদিও রাজ্যের আবগারি কমিশনার এস উমাশঙ্কর অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। সরবরাহ সমস্যার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, “কম উৎপাদনে কিছু সমস্যা তৈরি হয়েছে। সাধারণভাবে, গ্রীষ্মের চাহিদা মেটাতে জানুয়ারি থেকে বিয়ার উৎপাদন শুরু হয়। কিন্তু ওমিক্রন সংক্রমণের কারণে সে সময় উৎপাদন ব্যাহত হয়। সেই সঙ্গে বিয়ারের চাহিদাও বেশি। দাম কমে যাওয়ায় চাহিদাও বেড়েছে।

চাহিদা কম থাকায় বিয়ারের কালোবাজারি শুরু হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আবগারি দফতরের এক আধিকারিক জানান, সমস্যা শুরু হয় মার্চে। যেসব বিক্রেতারা আর্থিকভাবে বেশি সক্ষম তারা একবারে অনলাইনে প্রচুর বিয়ার তুলছেন। এতে অন্য বিক্রেতাদের ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। উমাশঙ্কর বলেন, “আমরা সবাইকে সমানভাবে দেখার ব্যবস্থা করেছি। এই বছরের সরবরাহ নির্ভর করবে 2021 সালের এপ্রিলে দোকান থেকে বিক্রি হওয়া বিয়ারের পরিমাণের উপর।”

আবগারি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ৮ এপ্রিল থেকে রাজ্যে বিয়ারের জন্য ‘রেশন’ ব্যবস্থা শুরু হয়েছে। 2021 সালের বিক্রয়ের পরিমাণ অনুযায়ী বিক্রেতাদের ‘র‌্যাঙ্কিং’ করা হয়েছে। একই ‘র‌্যাঙ্কিং’ অনুযায়ী বিয়ার বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। র‌্যাঙ্কিং 0.01 থেকে শুরু হয়। 0.01 স্টোরের একটি ‘র‍্যাঙ্কিং’ হবে প্রতি সপ্তাহে ৫ টি বিয়ারের কেস। 0.02 হলে প্রতি সপ্তাহে ১০ টি কেস। এভাবে ‘র‍্যাঙ্কিং’ যদি একটিতে বাড়তে থাকে, তাহলে প্রতি সপ্তাহে ১২০টি কেস পাওয়া যাবে। কলকাতা-ভিত্তিক বিয়ার বিক্রেতার মতে, তার দোকানের র‍্যাঙ্কিং 2.60 এবং এক সপ্তাহে ২৫০ বোতল বরাদ্দ করা হয়েছে। একটি কেসে ৩৩০ মিলি বিয়ারের ২৪ বোতল রয়েছে। একটি ৫০০ মিলি বোতলের ক্ষেত্রে ২০ টি এবং একটি ৮৫০ মিলি বোতলের ক্ষেত্রে ১২টি হতে পারে৷

আবগারি দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, কত বাক্স বিয়ার নিতে হবে তা বেছে নিতে পারবে দোকান। কতদিন চলবে এই আয়োজন? পর্যাপ্ত উৎপাদন না হওয়া পর্যন্ত এ ব্যবস্থা চলবে বলে জানা গেছে। কিন্তু উৎপাদন বৃদ্ধির সাথে সাথে চাহিদা বাড়লে, ‘রেশনিং’ ব্যবস্থা পুরো গ্রীষ্ম জুড়ে চলতে পারে। তবে বিক্রেতারা এখনও এই ব্যবস্থা নিয়ে অভিযোগ করছেন। এক সূরা ব্যবসায়ী বলেন, “আবগারি দফতর রেশন ব্যবস্থার মাধ্যমে বিয়ার সরবরাহ করলেও সূরাপ্রেমীরা তা মেনে নেবে না।” কেউ কেউ বেশি তুলবে আবার অনেককে ফিরতে হবে। পারদ বাড়লে তৃষ্ণাও বাড়বে এবং যদি আমরা গ্রীষ্মে বিয়ার কিনতে না পারি তবে আমরা ক্রেতা হারাবো।”

Leave a Reply