ASANSOL

NDRF উদ্ধার করল পাথর খাদানের জলে তলিয়ে যাওয়া দুই যুবকের দেহ, গাফিলতির অভিযোগ জিটি রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, দেব ভট্টাচার্য ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত, আসানসোল, ১৫ এপ্রিলঃ আসানসোল উত্তর থানার কেডি সিং পরিত্যক্ত পাথর খাদানে স্নান করতে নেমে সাড়ে ৩০০ ফুট গভীর জলে বৃহস্পতিবার দুপুরে তলিয়ে গেছিলো দুই যুবক। তলিয়ে যাওয়া দুই যুবকের নাম হলো আসানসোল দক্ষিণ থানার হটন রোডের ইসলামপুরের মহঃ বরকাতুল্লা আনসারি (১৯) ও বুধার মহঃ ফারহান ( ১৭)।
তাদের উদ্ধার করার জন্য জেলা প্রশাসনের বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের বাহিনী ব্যর্থ হওয়ায় শুক্রবার সকালেই কলকাতা থেকে এনডিআরএফের উদ্ধারকার দলের আসার কথা ছিলো।


কিন্তু দুই যুবকের পরিবারের সদস্য সহ স্থানীয় বাসিন্দারা শুক্রবার সকাল থেকে
ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করেছিলেন। কিন্তু উদ্ধারকারী দল কলকাতা থেকে দুপুর সাড়ে তিনটে পর্যন্ত আসেনি। অথচ পুলিশের তরফে বারবার তাদের আশ্বাস দেওয়া হয় যে তারা আসছে এই বলে।
এরপর দুই যুবকের পরিবারের সদস্য ও দুই এলাকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে আসানসোল শহরের প্রাণকেন্দ্র জিটি রোডে হটন রোড ও সিটি বাস স্ট্যান্ড সংযোগস্থলে রাস্তা অবরোধ করে ও বসে বিক্ষোভ দেখানো শুরু করেন। রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে আগুন লাগানো হয়। এর ফলে বাস সহ যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে বিশাল পুলিশবাহিনী আসে।

বিক্ষোভকারীরা দাবি করেন, তাদের ছেলেদের মৃত বা জীবিত উদ্ধার করে দিতে হবে। শেষ পর্যন্ত বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ কলকাতা থেকে এনডিআরএফের উদ্ধারকারী দল এসে পৌঁছয়। এই খবর তাদেরকে দেওয়া হলে তারা প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে চলা অবরোধ প্রত্যাহার করে আবার দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান। এই অবরোধ চলাকালীন সেখানে এসে পৌঁছান আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনের কংগ্রেসের প্রার্থী প্রসেনজিৎ পুইতুন্ডি।

তিনি বলেন, গতকাল দুর্ঘটনার পরে পুলিশ ও স্থানীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তর যখন উদ্ধার করতে পারেনি তখনই উচিত ছিল কলকাতা থেকে এনডিআরএফকে ডেকে আনা। এই নবগঠিত জেলায় বারবার দেখা যাচ্ছে কোনও দুর্ঘটনা ঘটলেই এখানে বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরে যারা আছেন তারা কিছুই করতে পারছেন না। স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ মানুষেরা রাস্তায় বসে তারা এই প্রতিবাদ করছিলেন।


পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ইসলামপুরের মহঃ বরকতুল্লা বৃহস্পতিবার দুপুরে টোটো করে মহঃ ফারহান সহ আরো ৫ জনকে নিয়ে আসানসোল উত্তর থানার কেডি সিং এলাকায় আসে। সেখানে তারা একটি পাথর খাদানের জলে স্নান করতে নামে। কিন্তু আচমকাই বরকাতুল্লা ও ফারহান সাড়ে ৩০০ ফুট গভীর পাথর খাদানের জলে তলিয়ে যায়। তা দেখে অন্যরা এলাকা ছেড়ে চলে আসে ও দুজনের বাড়ির লোকেদের সেই খবর দেয়। বিকেলে দুই যুবকের পরিবারের সদস্য ও এলাকার বাসিন্দারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। খবর পেয়ে আসে আসানসোল উত্তর থানার পুলিশ।

বরকাতুল্লার বাবা পেশায় টোটো চালক মহঃ সইফতু্ল্লা বলেন, ছেলে যে বন্ধুদের নিয়ে এখানে স্নান করতে এসেছে তা জানতাম না। পরে খবর পেয়ে এসেছি। কি করে এমন ঘটনা ঘটলো তা বুঝতে পারছি না। শেষ পর্যন্ত পরিবারের মানুষদের আশঙ্কা সত্যি করে রাত সাড়ে আটটার পরে এনডিআরএফের দল পাথর খাদানে তলিয়ে যাওয়া দুজনের নিথর দেহ উদ্ধার করে। সঙ্গে সঙ্গে পরিবারের সদস্যরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।

Leave a Reply