KULTI-BARAKAR

আলট্রা সোনগ্রাফি করাতে এসে ক্লিনিকের সামনে সন্তানের জন্ম দিলেন প্রসূতি, পরে জেলা হাসপাতালে মৃত্যু

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ২৪ এপ্রিলঃ আলট্রা সোনগ্রাফি করাতে এসে এক্সরে ক্লিনিকের সামনে সন্তানের জন্ম দিলেন এক প্রসূতি। পরে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ঐ সদ্যজাতর মৃত্যু হয়। শনিবার সন্ধ্যায় এই ঘটনাটি ঘটেছে আসানসোলের কুলটি থানার বরাকরে। এই ঘটনায় গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। কুলটি থানার লালবাজারের বাসিন্দা জুমনা খাতুন নামে ঐ প্রসূতি বর্তমানে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। রবিবার সকালে জেলা হাসপাতালে সদ্যজাতর মৃতদেহর ময়নাতদন্ত হয়।


জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ঐ সদ্যজাত ” প্রি ম্যাচিয়র ” বা নির্দিষ্ট ৯ মাসের আগেই তার জন্ম হয়েছে। সদ্যজাতর বয়স আনুমানিক ৭ মাসের মতো। চিকিৎসা শাস্ত্রে একে বলা হয় গর্ভপাত হয়ে যাওয়া। জন্মের প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই সদ্যজাতর মৃত্যু হয়। জেলা হাসপাতালে ভর্তি প্রসূতির শারীরিক অবস্থা অনেকটাই স্থিতিশীল বলে জানা গেছে।


পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শনিবার সন্ধ্যের মুখে কুলটির লালবাজারের বাসিন্দা মহঃ শাহাজাদ গর্ভবতী স্ত্রী জুমনা খাতুনকে নিয়ে আলট্রা সোনগ্রাফি করাতে বরাকরে একটি এক্স রে ক্লিনিকে আসেন। কিন্তু ক্লিনিক থেকে তাদেরকে বলা হয়, এই মুহুর্তে চিকিৎসক নেই। তাই তারা যেন সোমবার আসেন। এরপর শাহাজাদ স্ত্রীকে নিয়ে ঐ ক্লিনিকের বাইরে বসেছিলেন। সেখানেই জুমনা খাতুন সন্তানের জন্ম দেন। এরপর স্ত্রীকে নিয়ে শাহাজাদ একটা অটোরিকশা করে সেখান থেকে চলে আসেন। সদ্যজাত সেখানে পড়ে থাকে। গোটা ঘটনাটি সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে দেখেন ক্লিনিকের মালিক ও কর্মীরা। ক্লিনিকের তরফে বরাকর ফাঁড়িতে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে সেখানে আসে ও সদ্যজাতকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সেখানে এমারজেন্সি বিভাগের চিকিৎসক পরীক্ষা করে সদ্যজাতকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

পরে শাহাজাদ স্ত্রীকে নিয়ে জেলা হাসপাতালে আসেন। তখন সেখানে পুলিশ তাকে দিয়ে সদ্যজাতকে সনাক্ত করায়।
শাহাজাদ স্ত্রীকে জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরে জানায়, বরাকরে এক্স রে করাতে যাই। তা না হওয়ায় বাইরে বসেছিলাম। তখন স্ত্রী সন্তানের জন্ম দেয়। দেখে বুঝতে পারি সন্তান মারা গেছে। এদিকে স্ত্রীর শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে থাকে। তাই কি করবো বুঝে উঠতে না পেরে সন্তানকে ওখানে ফেলে রেখে একটা অটোরিকশা ডেকে স্ত্রী নিয়ে জেলা হাসপাতালে চলে আসি। এখানে এসে জানতে পারি, আমার সন্তানকে পুলিশ এনেছে।
বরাকর ফাঁড়ির পুলিশ জানায়, এলাকার একটি ক্লিনিক থেকে ফোন পেয়ে আমরা সেখানে যাই। সদ্যজাত ছাড়া কাউকেই সেখানে আমরা পাইনি। পরে জেলা হাসপাতালে আমরা দম্পতিকে পাই।
অন্যদিকে, আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ জানায়। সদ্যজাতর মৃত্যুতে একটা অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা করা হয়েছে।

Leave a Reply