ASANSOL

চর্যাপদ সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে আসানসোলে পালিত হল বিশ্ব নৃত্য দিবস

বেঙ্গল মিরর,আসানসোল, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত :
প্রতিবছর প্রতিমাসে নির্দিষ্ট কিছু দিনে বিভিন্ন দেশেই কিছু দিবস পালিত হয়। নির্দিষ্ট দিনে অতীতের কোনো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা স্মরণ করা বা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরী করতেই এই সমস্ত দিবস পালিত হয়। বিশ্বের পালনীয় সেই সমস্ত দিবসগুলোর মধ্যে একটি হল আন্তর্জাতিক নৃত্য দিবস (International Dance Day)।

আসানসোলের সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী “চর্যাপদ” – র আয়োজনে শুক্রবার ২৯ শে এপ্রিল “বিশ্ব নৃত্য দিবস’ পালিত হয় সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে। শুক্রবার সন্ধ্যায় আসানসোলের মহিশীলা কলোনির ওয়েস্টার্ন ক্লাব প্রাঙ্গণে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় বিশ্ব নৃত্য দিবস উপলক্ষে।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই জ্যোতির্ময় গুপ্ত এবং প্রবাদ প্রতীম নৃত্য শিল্পী বিরজু মহারাজজি কে শ্রদ্ধার্ঘ্য জ্ঞাপন করা হয়।

ওই অনুষ্ঠানে চর্যাপদের পক্ষ থেকে অঙ্গিকাম ভারতনাট্যম
নৃত্য পরিবেশন করেন অনুষ্কা, তোরসা, অদ্রিকা।
এছাড়া জনপ্রিয় পুরুষ ওডিসি নৃত্যশিল্পী তার নৃত্য পরিবেশন করে দর্শকদের মুগ্ধ করেন। এছাড়া কত্থক ও সম্বলপুরি লোকনৃত্য পরিবেশন করেন সাওশ্রী মুখার্জী ও ঐশী কর।
জনপ্রিয় ওডিসি নৃত্যশিল্পী কলতান দত্ত তার অসাধারণ নৃত্য পরিবেশন করেন।

দর্শকদের মন জয় করে সায়ন্তী চ্যাটার্জীর মণিপুরী নৃত্য পরিবেশন। সঙ্গে ছিল দেবতোষ চক্রবর্তীর কত্থক পরিবেশন। অনুষ্ঠানটিকে অন্য মাত্রা এনে দেয় অনুষ্কা এবং বিশ্বরূপ- র পাশ্চাত্য ব্রেক ড্যান্স। রবীন্দ্রনৃত্য পরিবেশন করে দর্শকদের মুগ্ধ করেন চর্যাপদের ঐশী, অনুষ্কা, অনিশা, তোর্সা।

মুখ্য উপদেষ্টা রুদ্রপ্রসাদ চক্রবর্তী, কো-অর্ডিনেটর ঐন্দ্রিলা তালুকদার এবং কনভেনার সায়ন্তি চ্যাটার্জী একযোগে বলেন যে , বিশ্ব নৃত্য দিবস পালন করার মূল উদ্দেশ্য হল, “নৃত্যের মূল্য এবং গুরুত্ব সারা বিশ্বের সামনে তুলে ধরা। দেশের সরকার, রাজনীতিবিদ এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যারা এখনো নৃত্যের সঠিক মূল্যায়ন ও গুরুত্ব সম্পর্কে অবহিত নয়, তাদের এ ব্যাপারে সচেতন করা। এছাড়া শরীর, ছন্দ, আত্মা, মন, সংগীত -এসব নিয়েই নৃত্যের সৃষ্টি হয়েছে।পণ্ডিত বিরজু মহারাজ বলেছেন – “নৃত্য হল প্রকৃতি”। শাস্ত্রীয় নৃত্য ও সঙ্গীত মিলে মন ও আত্মার মধ্যে ভারসাম্য তৈরি করে। নৃত্য খুব সহজেই সবার কাছে পৌঁছে যায়। নৃত্য খুব সহজেই গ্রহণযোগ্যতা পায়।নৃত্যের মাধ্যমে সামাজিক বন্ধন দৃঢ় হয়। নৃত্য আমাদের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে একটা আকৃতি দেয়।

এদিকে নৃত্যশিল্পীদের সম্বর্ধনা এবং স্মারক প্রদান করার সময় বিশিষ্ট মানুষদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শর্মিলা ব্যানার্জি, শংকরী রায়চৌধুরী, কেয়া চক্রবর্তী ও সোহিনী চক্রবর্তী। অনুষ্ঠানে দর্শক হিসেবে সমাজের বহু সাংস্কৃতিক জগতের মানুষ যেমন নাট্যকর্মী স্বপন বিশ্বাস, মধুমিতা জামিনদার, দেবাশীষ জামিনদার, বাচিক শিল্পী সুদীপ্ত রায় ছাড়াও রক্ত আন্দোলনের অসীম সরকার প্রমুখ।

বস্তুত উল্লেখ্য, প্রতিবছর ২৯ এপ্রিল আন্তর্জাতিক নৃত্য দিবস পালিত হয়। সারা বিশ্বের বিভিন্ন নৃত্য সংগঠনগুলি এই দিনটি আনন্দের সঙ্গে পালন করে থাকে। মূলত নৃত্য সংগঠনগুলিকে উদ্বুদ্ধ এবং নৃত্যশিক্ষা প্রসার করার জন্যই এই দিনটি পালন করা হয়।১৯৮২ সালের ২৯ এপ্রিল প্রথমবার আন্তর্জাতিক নৃত্য দিবস পালন করা হয়। ইউনেস্কোর ‘পারফর্মিং আর্টস’ এর প্রধান সহযোগী ‘আন্তর্জাতিক থিয়েটার ইনস্টিটিউট’ বা ITI এর নৃত্য কমিটির উদ্যোগে প্রতিবছর এই দিনটি আন্তর্জাতিক নৃত্য দিবস হিসেবে পালন করা হয়। ফরাসি নৃত্যশিল্পী তথা আধুনিক ব্যালে নৃত্যের রূপকার জঁ জর্জেস নভেরের ( Jean-Georges Noverre) জন্মদিন উপলক্ষে এই দিনটি পালন করা হয়।

Leave a Reply