আসানসোলের জুয়েলারি টেস্টিং ল্যাবে লুঠের ঘটনার সাতদিনের মধ্যে কিনারা, কর্ণাটক ও মহারাষ্ট্র থেকে ধৃত দুই
উদ্ধার নগদ টাকা, সোনা ও রুপোর গয়না
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ ( ASANSOL LIVE NEWS TODAY ) আসানসোল দক্ষিণ থানার কাছে ঘাঁটি গালিতে একটি জুয়েলারি টেস্টিং ল্যাবে চুরি ও লুঠের ঘটনার কিনারা সাত দিনের মধ্যে করলো পুলিশ। এই ঘটনায় মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটক থেকে দুুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে নগদ টাকার পাশাপাশি চোরাই সোনা ও রুপোর গয়না উদ্ধার হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে আসানসোলের জিটি রোডের বর্ধমান ভবনে হওয়া এক সাংবাদিক সম্মেলনে গোটা বিষয়টি জানানো হয়। ছিলেন আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের ডিসিপি (সেন্ট্রাল) কুলদীপ সোনেয়াল, এসিপি (সেন্ট্রাল ১) দেবরাজ দাস ও আসানসোল দক্ষিণ থানার ইন্সপেক্টর ইনচার্জ কৌশিক কুন্ডু।
সাংবাদিক সম্মেলনে ডিসিপি (সেন্ট্রাল) বলেন, গত ২৯ মে রাতে ঘাঁটি গলির ঐ দোকান বা ল্যাব থেকে চুরি হয়। চুরি যাওয়া জিনিসের মধ্যে ছিল ৮০০ গ্রাম সোনা, ১০ কেজি রূপা ও ২৮,০০০ টাকা। ল্যাব মালিকের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ৩০ জুন একটি মামলা করে তদন্ত শুরু করা হয়। তদন্তে দেখা যায়, দূষ্কৃতিরা ল্যাবের জানালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে দোকানের ভেতরেই টাঙানো ভল্টের চাবি নেয়। এরপর তারা ভল্টের তালা খুলে চুরি করে। ঐ দোকানের ভেতরের সিসিটিভি খারাপ ছিলো।
তিনি আরো বলেন, আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ সক্রিয়ভাবে সূত্র সংগ্রহের জন্য কাছাকাছি এলাকার সমস্ত সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে৷ তাতে দেখা যায় যে পাঁচজনের একটি দল ছিল যারা মাস্ক পড়া অবস্থায় ছিল। তারা মহারাষ্ট্র থেকে এসেছিল। আমরা অপরাধের ধরণ বিশ্লেষণ করেছি, প্রযুক্তিগত ইনপুট এবং স্থানীয় উৎসের তথ্য সংগ্রহ করেছি এবং বিভিন্ন লিডের মাধ্যমে সেগুলো ট্র্যাক করেছি। অবশেষে আমরা দেখতে পেলাম যে তারা ধানবাদ হয়ে মহারাষ্ট্রে পালিয়েছে।
অপরাধীদের ধরতে সাব ইন্সপেক্টর সুরাফুদ্দিন মন্ডলের নেতৃত্বে পুলিশের ছয় সদস্যের একটি টিম মহারাষ্ট্রের সাংলি জেলায় পাঠানো হয়। প্রথমে দশরথ মানে নামো একজনকে গত ৫ জুন প্রায় সাড় তিন লক্ষ টাকা সহ কর্ণাটকের বেলগাভি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। দশরথের পাঁচ দিনের ট্রানজিট রিমান্ড মঞ্জুর করেন স্থানীয় আথানি পিএস আদালত। তার কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশের একটি দল ৬ জুন মহারাষ্ট্রের সাংলি জেলার আটপাডি থানা এলাকা থেকে বিশালকে গ্রেফতার করে। তার কাছ থেকে ১৩ কেজি রূপা ও ৫০০ গ্রাম সোনা উদ্ধার করা হয়।
আটপাড়ি আদালতের বিচারক বিশালের পাঁচ দিনের ট্রানজিট রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
তদন্ত করতে নেমে পুলিশ জানতে পারে যে, ধৃত বিশাল সঞ্জয় সত্যবান চিনচাকরের টেস্টিং ল্যাবে ৪ বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ করেছে। সেই কারণে তার কাছে ঐ ল্যাবের যাবতীয় তথ্য ছিল। পুলিশ আরো জানা গেছে যে, আরেক ধৃত দশরথের আসানসোলের সিএমসি ক্লাবের কাছে ঘাঁটি গলিতে এবং সাংলি জেলার আটপাড়িতে একটি দোকান আছে।
আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের দাবি , ঘটনার ৭ দিনের মধ্যে এই ঘটনার কিনারা করা হয়েছে। মামলার তদন্ত ও অভিযুক্তদের ধরতে অন্যান্য রাজ্যের পুলিশের মধ্যে সমন্বয় ও সহযোগিতার দরকার পড়েছিলো। শুক্রবার
ধৃত অভিযুক্তদের আদালতে পেশ করে রিমান্ডে নিয়ে আরে তদন্ত করা হবে।