ASANSOL

আসানসোল পুরনিগমে তুমুল বিশৃঙ্খলা, বিপিএলের আবাসন পাওয়ার জন্য আবেদন জমা দিতে ভিড়

ডেপুটি মেয়র ও মেয়র পারিষদকে ঘেরাও করে

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ আসানসোল পুরনিগমের বাইরে ও ভেতরে হাজারেরও বেশি মানুষের ভিড় হলো বৃহস্পতিবার সকাল থেকে। প্রত্যেকের হাতেই হাতে লেখা একটি করে আবেদন পত্র। তাতে বিপিএল তালিকাভুক্ত মানুষের জন্য তৈরি যে বাড়ি আছে, তা চাই। সেই আবেদনের সঙ্গে আবেদনকারীরা সচিত্র পরিচয় পত্র ও আধার কার্ডের জেরক্স কেউ কেউ জুড়ে দিয়েছেন। আর এইসব আবেদনগুলো পুরনিগমের বাইরে টেন্ডারের কাগজ জমা দেওয়ার জন্য যে বক্স থাকে সেই বক্সের মধ্যে অনেকেই পরপর দিয়ে দিচ্ছেন। এইসব আবেদনকারীদের বেশিরভাগ মানুষই আসানসোল উত্তর বিধান সভার রেলপার এলাকার বাসিন্দা। তারা যেসব জায়গা বা এলাকা থেকে এসেছেন যেখানে ইতিমধ্যেই রেলের তরফে উচ্ছেদের নোটিশ দেওয়া হয়েছে।


বিপিএলের বাড়ি পাওয়া যাবে, কোনভাবে এমন একটা গুজবের জেরে এইসব মানুষেরা এদিন সকাল থেকে আসানসোল পুরনিগমে চলে আসেন। আর একসঙ্গে এতো মানুষের ভিড়ে পুরনিগমে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়। সেই অবস্থা সামাল দিতে পুরনিগমের ডেপুটি মেয়র ওয়াসিমুল হক ও মেয়র পারিষদ গুরুদাস ওরফে রকেট চট্টোপাধ্যায় তৎপর হন। তারা তাদের কাছে গিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করলে, পরিস্থিতি ঘোরালো হয়। দু’জনকেই ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখানো শুরু করেন আবেদনকারীরা। আবেদনকারীদের মধ্যে কেউ কেউ বলেন, বুধবারও কয়েকজন এসে আবেদনপত্র জমা দিয়ে গেছে ও পুরনিগমের রিসিভিং কাউন্টার থেকে তা রিসিভও করা হয়েছে। তাহলে তাদের আবেদন কেন এদিন নেওয়া হবে না?


আবার কেউ কেউ বলেন, তারা শুনেছেন বৃহস্পতিবার বিপিএল আবাসন গুলোর ফর্ম পুরনিগমে জমা নেওয়া হবে। এই ভেবে ফর্ম জমা দেওয়া জন্যও প্রচুর মানুষ এদিন পৌঁছান আসানসোল পুরনিগমে। কিন্তু সেখানে পৌঁছে যখন তারা জানতে পারেন যে ফর্ম জমা নেওয়া হবে না, তখন তাদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যায়। তারাও ওয়াসিমুল হক ও গুরুদাস ওরফে রকেট চট্টোপাধ্যায় ঘেরাও করে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন।
পরে ওয়াসিমুল হক এটা বিরোধী রাজনৈতিক দলের ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, বিরোধী দলগুলো পুরনিগমকে সঠিকভাবে চলতে দিতে চায় না। সেই কারণেই তারা গরীব মানুষকে ভুল বুঝিয়ে হয়রানি করছেন। পুরনিগমের কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। তিনি আরো বলেন, মেয়র বিধান উপাধ্যায় ইতিমধ্যে এটাও স্পষ্ট করেছেন যে বর্তমানে পুরনিগমের কাছে ৬০০ টির মতো বিপিএল আবাসন রয়েছে। যারা ইতিমধ্যে এই আবাসন নেওয়ার জন্য আবেদন করে টাকা জমা দিয়েছেন বা যাদেরকে সরকারী জমি থেকে সরানো হয়েছে, কেবলমাত্র এই তাদেরকেই এই আবাসন দেওয়ার অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।


এদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিজেপি কাউন্সিলরদের দলনেত্রী চৈতালি তেওয়ারি বলেন, আসানসোল পুরনিগমের কাছে দরিদ্র ও গরীব মানুষদের দেওয়ার মতো বাড়ি নেই। বর্ষাতে তারা যাবেন কোথায়? তিনি প্রশ্ন তোলেন, কার অনুমতিতে ডেপুটি মেয়র না হয়েও এসি রুমে নিয়ে দুজন বসছেন দীর্ঘদিন ধরে।


প্রসঙ্গতঃ, কিছুদিন আগেই আসানসোলের রেলপার এলাকার তৃনমুল কংগ্রেসের কাউন্সিলর সি কে রেশমা আসানসোল উত্তর থানায় অভিযোগ করেছিলেন দলেরই এক কর্মীর বিরুদ্ধে। ঐ কর্মী রেলের থেকে উচ্ছেদ নোটিশ পাওয়া মানুষদের
বাড়ি পাইয়ে দেওয়ার নামে ভোটার কার্ড ও আধার কার্ড সংগ্রহ করছিলেন । তারপর নতুন করে এই বিশৃঙ্খলা বৃহস্পতিবার দেখা গেল আসানসোল পুরনিগমে।
এই প্রসঙ্গে পুর চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, বুধবার যদি এই ধরনের কোনও আবেদন পত্র কেউ রিসিভ করে থাকেন তাহলে সেটা ঠিক হয়নি। হয়তো জনগণের সাধারণ আবেদন ভেবে নিয়েছেন। কেননা আমাদের বোর্ডে এমন কোনো আলোচনা হয়নি বা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

News Editor

Mr. Chandan | Senior News Editor Profile Mr. Chandan is a highly respected and seasoned Senior News Editor who brings over two decades (20+ years) of distinguished experience in the print media industry to the Bengal Mirror team. His extensive expertise is instrumental in upholding our commitment to quality, accuracy, and the #ThinkPositive journalistic standard.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *