ASANSOL

আসানসোল সিবিআই আদালতে সাজা ঘোষণা, দোষী সাব্যস্ত বীমা কোম্পানির ম্যানেজারের ২ বছর কারাদণ্ড

পথ দূর্ঘটনার ক্ষতিপূরণের চেক পাইয়ে দিতে ৫ হাজার টাকা ঘুষ চেয়ে হাতেনাতে পাকড়াও

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, দেব ভট্টাচার্য ও রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়ঃ পথ দূর্ঘটনার ক্ষতি পূরণের চেক পাইয়ে দিতে ৫ হাজার ঘুষ চাওয়ার মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলেন বীমা কোম্পানির ম্যানেজার। আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী মামলার শুনানি শেষে শিবশংকর কের নামে বীমা কোম্পানির ম্যানেজারকে ২ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ৩০ হাজার টাকা জরিমানা দেওয়ারর নির্দেশ দেন। তবে ঐ ম্যানেজার বর্তমানে চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন। বয়স হওয়ায় তিনি সাজা ঘোষণার পরে জামিনের জন্য সিবিআই আদালতে আবেদন করেন। বিচারক সেই আবেদনের ভিত্তিতে ও সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির বয়সের কথা মাথায় রেখে তার জামিন মঞ্জুর করেছেন। পাশাপাশি বিচারক নির্দেশ দিয়েছেন, তার দেওয়া এই জামিন নিশ্চিত করতে হাইকোর্টে নতুন করে আবেদন করতে হবে। প্রায় ১২ বছর ধরে চলা এই মামলায় সবমিলিয়ে ১৩ জন আদালতে বিচারকের কাছে স্বাক্ষী দেন।

गौ तस्करी CBI चार्जशीट


সিবিআই আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০০৪ সালে বীরভূমের মুরারইয়ের বাসিন্দা নাসিরা বিবির স্বামী এক পথ দূর্ঘটনায় মারা যান। নিয়ম মতো স্বামীর মৃত্যুর জন্য রোড এক্সিডেন্টের জন্য বীমার টাকা পাওয়ার কথা। সেই মতো নাসিরা বিবি বীমা কোম্পানির কাছ থেকে ক্ষতি পূরণ পেতে রামপুরহাট আদালতে মামলা করেন ২০০৭ সালে। ঐ আদালত ২০০৯ সালে নাসিরা বিবিকে ক্ষতি পূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেয়। এরপর নানা কারণে বীমা কোম্পানি ক্ষতি পূরণের জন্য যে চেক দেয়, তার মেয়াদ পার হয়ে যায়। নাসিরা বিবির আইনজীবী সেই চেক ” রিভ্যালিডিয়েশন ” বা নতুন করে দেওয়ার জন্য আবেদন করেন বীমা কোম্পানির কাছে। সেই সময় সেখানে ম্যানেজার হিসাবে কর্মরত ছিলেন শিবশঙ্কর কের।

অভিযোগ তিনি তার আবেদন মঞ্জুর করার জন্য আইনজীবীর কাছে ৫ হাজার টাকা ঘুষ চান। এরপর আইনজীবী কথা মতো সিবিআইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে গোটা ঘটনার কথা জানান। সিবিআইয়ের অফিসাররা ঘুষ নেওয়ার সময় হাতেনাতে ঐ ম্যানেজারকে ধরার জন্য পরিকল্পনা করেন। সেইমতো একদিন ফাঁদ পেতে ৫ হাজার টাকা সহ তাদেরকে ঐ ম্যানেজারের কাছে যাওয়ার জন্য বলেন সিবিআইয়ের অফিসাররা। তার আগে ঐ টাকার নম্বর নেওয়া হয় ও টাকায় বিশেষ ধরনের কেমিক্যাল লাগিয়ে দেন সিবিআইয়ের অফিসাররা।

নাসিরা বিবি তার আইনজীবীর সঙ্গে ম্যানেজারকে যখন সেই টাকা দিচ্ছিলেন, তখন সাদা পোশাককে থাকা সিবিআইয়ের অফিসাররা তাকে হাতেনাতে পাকড়াও করেন। এরপর তথ্য প্রমান সহ ধৃত ম্যানেজারের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা করে সিবিআই।
তারপর দীর্ঘ ১২ বছর ধরে মামলা চলার পরে স্বাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণের শেষে আসানসোলের সিবিআই আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী বীমা কোম্পানির ম্যানেজারকে ঘুষ চাওয়ায় দোষী সাব্যস্ত ও সাজা ঘোষণা করেন।

Leave a Reply