ASANSOLASANSOL-BURNPUR

আসানসোলে ব্যবসায়ী পুত্রের বিয়েতে অভিনব উদ্যোগ, মধ্যাহ্ন ভোজনে বার্ণপুরের বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকরা

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ বিয়ে বাড়ি বলতে বোঝায় নিজের আত্মীয় পরিজনদের নিয়ে হৈ-হুল্লোড় ও দেদার খানাপিনা। কিন্তু বিয়ের দিন দুপুরে নিজের বাড়ির কেউ নয়, এমন মানুষদের জন্য ভাবা? তাদের বাড়ির লোকেদের মতো করে অভ্যর্থনা জানানো? এমনটা খুব একটা দেখা যায় না। কিন্তু সেটাই করলেন আসানসোল শহর তথা শিল্পাঞ্চলের ব্যবসায়ী তথা একটি বস্ত্র বিপনির কর্ণধার সুব্রত ওরফে মিঠু ঘাঁটি। মঙ্গলবার সুব্রতবাবু বড়ছেলে শুভজিৎ ঘাঁটির বিয়েতে একটি অভিনব উদ্যোগ নিলেন। বিয়ের পরে এদিন দুপুরে আসানসোলের বার্ণপুরে ঢাকেশ্বরী বৃদ্ধাশ্রমে থাকা আবাসিকদের মধ্যাহ্ন ভোজন করান ঐ ব্যবসায়ী। সবমিলিয়ে ৮০ জনেরও বেশী মানুষদের খাওয়ানো ব্যবস্থা করেছিলেন ঐ ব্যবসায়ী।


এদিনের দুপুরের খাবারের তালিকায় ছিলো, ডাল, ভাত, আলুভাজা, দুরকমের তরকারি, মাছ, পাঁপড় ভাজা, চাটনি থেকে মিষ্টি ।
এদিন সকালে আসানসোলের অদূরে কল্যানেশ্বরী মন্দিরে শুভজিৎ ঘাঁটির সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন বীরভূমের দেবগ্রামের বাসিন্দা সুশুভ্রা বিশ্বাস। সেখানে সব রীতি মেনে বিয়ের অনুষ্ঠান হয়। মেয়ের বাড়ির সঙ্গে সেখানে সুব্রতবাবু ছাড়াও ছিলেন তার সহধর্মিণী চন্দ্রাবলী ঘাঁটি, ছোট ছেলে অভিজিৎ ঘাঁটি, অন্বেষা ঘাঁটি, অংশুমান ঘাঁটি, বিজেপি নেতা নির্মল কর্মকার, আসানসোল পুরনিগমের তৃনমুল কংগ্রেসের কাউন্সিলর তপন বন্দোপাধ্যায়, শ্যামল সিনহা।


এই প্রসঙ্গে সুব্রত ঘাঁটি বলেন, বাড়িতে কারোর বিয়ে হলে নিজের পরিচিত লোকজনদের অতিথি হিসাবে ডাকা হয়। বড় পার্টির আয়োজন করা হয় । আমিও হয়তো তার ব্যতিক্রম নই। কিন্তু, আমি এমন কিছু গুরুজনদের আশীর্বাদের মধ্যে দিয়ে পুত্র ও পুত্রবধূর বিবাহিত জীবন শুরু হোক। যাদের নিজেদের পরিবার থাকা সত্বেও, তারা তাদের কেউ নয়। তাই আমার এই ভাবনা। একই সঙ্গে সমাজের এমন সব মানুষদের সচেতন করতে এমন উদ্যোগ যারা বাবা-মায়েদের বৃদ্ধাশ্রমে রেখেছে বলে জানান তিনি। সমাজে এ ধরনের প্রথা বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি যারা বৃদ্ধাশ্রমে থাকেন যাদের এই পৃথিবীতে একা নন, তাদেরও কাছের লোক আছে, এই বার্তার দিলাম বলে ব্যবসায়ী জানান ।


মৃণাল মুখোপাধ্যায়, আশীষ চট্টোপাধ্যায় , সমীর কুমার সামন্ত, অর্চনা ঘোষের মতো বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকরাও এমন আতিথিয়েতায় খুশি। তারা নব দম্পতিতে আশীর্বাদ করেন। তারা বলেন, ঐ দম্পতির পাশাপাশি তাদের দুই পরিবারের সদস্যরা যাতে ভালোভাবে থাকেন, এই প্রার্থনা ভগবানের কাছে আমরা সবাই করলাম। পাশাপাশি তারা চান, এমনভাবেই শুধু আমাদের জন্য নয়, সমাজে যারা অবহেলিত তাদের জন্যও ঐ ব্যবসায়ীর মতো সবাই ভাবুক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *