ASANSOL

সায়গল হোসেনের জামিন আবার নাকচ, সার্ভিস বুক ও সম্পত্তির আরো নথি জমা CBIর

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, দেব ভট্টাচার্য, রাজা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত : ( Cattle Smuggling Case ) গরু পাচার মামলায় বীরভূমের জেলা তৃনমুল কংগ্রেসের সভাপতি অনুব্রত মন্ডলের দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের ( Sehgal Hossain) জামিন আবারও নাকচ হলো। মঙ্গলবার আসানসোল বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী তার জামিন নাকচ করেন। পরবর্তী শুনানির দিন আগামী ২২ জুলাই ঠিক হয়েছে। এদিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তরফে আদালতে সায়গলের সম্পত্তি হিসাবে একটি পেট্রোল পাম্পের নথি জমা দেওয়া হয়। একইসঙ্গে এদিন আসানসোল সিবিআই আদালতে সায়গলের সার্ভিস বুক জমা করা হয়েছে বলে জানা গেছে ।


গত ৮ জুলাই শেষ বার সায়গলকে সিবিআই আদালতে তোলা হয়েছিলো। সেদিনই বিচারক তার জামিন নাকচ করে ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়ে পরবর্তী শুনানির দিন ২২ জুলাই হবে বলে জানিয়েছিলেন।
কিন্তু এদিন এই মামলায় এফআইআরে মুল অভিযুক্ত হিসাবে গ্রেফতার হওয়া বিএসএফের কমান্ডার সতীশ কুমারের ৩২ দিনের মাথায় জামিন পাওয়ায় প্রসঙ্গ তুলে, সায়গলের জামিনের আবেদন করেন তার আইনজীবী অনির্বাণ গুহ ঠাকুরতা। সায়গলের জেলে থাকার মেয়াদ মঙ্গলবার ৩৯ দিনে পড়লো।


উল্লেখ্য, সোমবার সায়গলের আইনজীবীর তরফে তার জামিনের আবেদন আদালতে করা হয়েছিলো। সেই আবেদনে মঞ্জুর করে এদিন বিচারক বিশেষ শুনানি হবে বলে জানিয়েছিলেন। সেই মতো বেলা বারোটার পরে শুনানি শুরু হতেই আইনজীবী অনির্বাণ গুহ ঠাকুরতা সওয়াল করে বলেন, এই মামলায় এইআইআরে মুল অভিযুক্ত হিসাবে গ্রেফতার হয়েছিলেন বিএসএফের কমান্ডার সতীশ কুমার। তিনি ৩২ দিনের মাথায় জামিন পেয়েছেন। সায়গল হোসেনের নাম এফআইআরে নাম না থাকা সত্বেও, তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদিন তার সবমিলিয়ে হেফাজতে থাকার মেয়াদ ৩৯ দিন হলো। তদন্তে আমার মক্কেল আগেও সবরকম সহযোগিতা করেছে, আগামী দিনেও করবে। তাই তাকে যে কোন শর্তে জামিন দেওয়া হোক। এই জামিনের বিরোধিতা করে সিবিআইয়ের আইনজীবী রাকেশ কুমার এদিন সায়গলের পেট্রোল পাম্প সংক্রান্ত দুটি সম্পত্তির নথি ও সার্ভিস বুক জমা দেন। তিনি বলেন, তদন্ত এখনো চলছে আরো অনেক কিছু বেরোবে। এই সময় জামিন পেলে তদন্তে সমস্যা হবে। তাই তাকে জামিন না দেওয়া হোক। সায়গলের আইনজীবী এর উত্তরে বলেন, সম্পত্তির নথি তো পাওয়া যাচ্ছে সরকারি অফিস থেকে। তা আগেও পাওয়া গেছে। সেক্ষেত্রে সায়গলের জামিন পাওয়া বা না পাওয়ার কি সম্পর্ক আছে? শেষ পর্যন্ত দুপক্ষের আইনজীবীর সওয়াল-জবাব শেষে বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী সায়গলের জামিন নাকচ করে দেন।


মোট তিনদফায় সাতদিন করে মোট ১৪ দিন সিবিআই হেফাজতে ও ১৪ দিন জেল হেফাজতের পরে গত ৮ জুলাই আসানসোলে বিশেষ সিবিআই আদালতে তোলা হয়েছিলো অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী সায়গল হোসেনকে। উল্লেখ্য, গরু পাচার মামলায় ধৃত তৃণমূল কংগ্রেসের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের কাছে গরু পাচার মামলার অনেক তথ্য রয়েছে বলে সিবিআই আদালতে আগেই জানিয়েছে।
সিবিআই তাকে একাধিকবার নিজামের প্যালেসে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। সায়গলের বক্তব্যে বেশ কিছু অসঙ্গতি থাকায় তাকে গ্রেফতার করেছিল গত ৯ জুন ।


প্রসঙ্গতঃ গরু পাচার মামলায় বীরভূম জেলার তৃনমুল কংগ্রেসের সভাপতি অনুব্রত মন্ডলের ঘনিষ্ঠদের একের পর এক ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। মামলার প্রধান অভিযুক্ত বিনয় মিশ্র বর্তমানে পলাতক। এই মামলার অন্যতম এনামুল হক ও বিএসএফের কম্যান্ডান্ট সতীশ কুমারকে সিবিআই গ্রেফতার করলেও তারা এই মুহুর্তে শর্তসাপেক্ষে জামিনে রয়েছে। একই সঙ্গে বিনয়ের ভাই বিকাশ মিশ্রকেও গ্রেফতার করেছিলো সিবিআই। বিকাশ কিছুদিন আগে আসানসোলের সিবিআই আদালত থেকে গরু পাচার মামলায় জামিন পেয়েছে। চলতি মাসেই দুটি আলাদা আলাদা দিনে আসানসোল সিবিআই আদালতে বিকাশ মিশ্রর গরু ও কয়লা পাচার মামলায় শুনানি রয়েছে। বর্তমানে কলকাতার প্রেসিডেন্সি জেলে রয়েছে বিকাশ মিশ্র।

Leave a Reply