ASANSOL

Tele Medicine : চিকিৎসায় অনন্য নজির আসানসোল জেলা হাসপাতালে

থম্বলাইটিক থেরাপি পদ্ধতিতে হৃদরোগে আক্রান্ত মুমূর্ষু রোগীকে বাঁচালেন চিকিৎসক

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ ( Tele Medicine at Asansol District Hospital ) টেলি মেডিসিন চিকিৎসায় অনন্য নজির গড়লো আসানসোল জেলা হাসপাতাল। থম্বলাইটিক থেরাপির মাধ্যমে এক হৃদরোগে আক্রান্ত মুমূর্ষু রোগীকে বাঁচালেন চিকিৎসক ডাঃ পৃথ্বীরাজ পাত্র। মঙ্গলবার মধ্য রাতে এই ঘটনাটি ঘটেছে। বুধবার জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় নামে ঐ রোগী আপাততঃ সিসিইউতে ভর্তি রয়েছেন। তার শারীরিক অবস্থা যথেষ্টই স্থিতিশীল। আপাততঃ তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।


জানা গেছে, মঙ্গলবার রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ আসানসোলের লোয়ার চেলিডাঙ্গার বাসিন্দা ৫২ বছরের সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় হৃদরোগে আক্রান্ত হন। বাড়ির লোকেরা সঙ্গে সঙ্গে তাকে আসানসোল জেলা হাসপাতালের এমারজেন্সি বিভাগে নিয়ে আসেন। তাকে জেলা হাসপাতালের মেল মেডিকেল ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয় ফিজিশিয়ান ডাঃ পৃথ্বীরাজ পাত্রের অধীনে। চিকিৎসা তার শারীরিক অবস্থা দেখে বুঝতে পারেন যে, রোগীর বেশ ভালো রকমের স্ট্রোক হয়েছে, বা তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন।


ডাঃ পৃথ্বীরাজ পাত্র জানান, যে কোন হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীকে সাড়ে চার ঘন্টার মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি করা যায় তাহলে এই পদ্ধতিতে চিকিৎসার দ্বারা সুস্থ করা সম্ভব। মঙ্গলবার রাতে সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় নামে ঐ রোগীকে যখন জেলা হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি করানো হয়েছিল, তখন তার শরীরের বাম দিকের অংশ অসার হয়ে গেছে। তার সুগার লেবেল ও ব্লাড প্রেসার বা রক্তচাপ বেশি রয়েছে। তাই তাকে ভর্তি করার পর দ্রুত সিটি স্ক্যান করানো হয়। গোটা বিষয়টি জানিয়ে যোগাযোগ করা হয় জেলা হাসপাতালের ডেপুটি সুপার কঙ্কন রায় ও সহকারী সুপার ভাস্কর হাজরার সঙ্গে। স্ক্যানের রিপোর্ট দেখে ডাঃ পাত্র বুঝতে পারেন রোগীর মস্তিষ্কে ভালো রক্ত জমাট বেঁধেছে বা ব্লাড ক্লট করেছে। তিনি নিশ্চিত হন যে, এই রোগীকে বাঁচাতে হলে বিশেষ পদ্ধতিতে চিকিৎসা করতে হবে। কিন্তু জেলা হাসপাতালের নিউরো বিভাগ নেই।


জেলা হাসপাতালের সিটি স্ক্যান বিভাগের দায়িত্বে থাকা মেডিভিউ ডায়াগনস্টিকের স্বপন পান্ডা বলেন , “সিটি স্ক্যানের ঐ রিপোর্ট রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের ” স্বাস্থ্য ইঙ্গিত নামে পোর্টালের মাধ্যমে এসএসকেএম হাসপাতালের নিউরো টেলি মেডিসিনে পাঠানো হয়। পোর্টালের মাধ্যমে সিটি স্ক্যানের রিপোর্ট দেখেন বাঙ্গুর ইনস্টিটিউট অফ নিউরোসায়েন্সের চিকিৎসক ডাঃ অর্পন দত্ত। তিনি সাথে সাথে জানান রুগীকে আরটিপিএ ও থম্বলাইটিক থেরাপি পদ্ধতিতে চিকিৎসা করতে হবে। কি ইনজেকশন দিতে হবে তা লিখে পাঠিয়ে দেন। অন্যদিকে, ডাঃ পাত্র নিজেও ফোনে ডাঃ দত্তর সঙ্গে যোগাযোগ করে। তার কাছ থেকে সবুজ সংকেত পাওয়ার পরে ডাঃ পাত্র রোগীকে নিয়ে যান সিসিইউতে। সেখানে রেখে তাকে ঐ ইনজেকশন দেওয়া হয়। একঘন্টার মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেন তিনি।


এই প্রসঙ্গে ডাঃ পাত্র বলেন, ঐ ইনজেকশন দেওয়ার পরে শারীরিক সমস্যা হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে আবার রোগীর স্ট্রোক হতে পারে। যদিও এই রোগীর তা হয়নি। এখন তিনি অনেকটাই সুস্থ। বর্তমানে তাকে পর্যবেক্ষণের জন্য হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে।
ডাঃ পাত্রের সঙ্গে জেলা হাসপাতালের ডেপুটি সুপার কঙ্কন রায় ও সহকারী সুপার ভাস্কর হাজরা বলেন, এই প্রথম এই পদ্ধতিতে এই চিকিৎসা করা হল জেলা হাসপাতালে। এর আগে টেলি মেডিসিনের মাধ্যমে অন্য পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। তবে এই ঘটনা প্রথম।

Leave a Reply