বরাকরে চাঞ্চল্যকর ঘটনা, স্ত্রীকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মারার অভিযোগ, গ্রেফতার স্বামী
বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, দেব ভট্টাচার্য ও কাজল মিত্রঃ পারিবারিক অশান্তি। আর তা থেকে স্ত্রীকে বেতের লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠলো স্বামীর বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার দুপুরে ঘটা এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আসানসোলের কুলটি থানার বরাকর ফাঁড়ির বরাকর রানিবাংলোর হাসপাতাল রোডে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। মৃত মহিলার নাম মঞ্জু কুম্ভকার (৩৩)। মৃতার মাথায় ও মুখে বেতের লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মারার জন্য একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে পুলিশ ও আসানসোল জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়।পুলিশ এই ঘটনার পরে মৃতার স্বামী অশোক কুম্ভকারকে গ্রেফতার করেছে৷ পাশাপাশি যে বেতের লাঠিটিকে অশোক তার স্ত্রীকে মারার জন্য ব্যবহার করেছিল সেই লাঠিটি উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ সেটিকে বাজেয়াপ্ত করেছে।




জানা গেছে, হুগলির নৈহাটির বাসিন্দা মঞ্জু কুম্ভকারের সঙ্গে বরাকরের রানিবাংলোর হাসপাতাল রোডের অশোক কুম্ভকারের ১৬ বছর আগে বিয়ে হয়। তাদের তিনটি কন্যা সন্তানও আছে। ঐ তিন কন্যাকে নিয়ে মঞ্জু দেবী বেশ কিছুদিন ধরেই বরাকর ছেড়ে নৈহাটিতে তার বাপের বাড়িতে থাকতেন। আলাদা থাকলেও টাকা নেওয়া সহ কোন না কোন প্রয়োজনে মঞ্জু দেবী স্বামীর কাছে মাঝে মধ্যেই আসতেন। অশোক কুম্ভকার বরাকরে দিন মজুরের কাজ করেন বলে পুলিশ সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে।
আরো জানা গেছে মঙ্গলবার সকালে ব্ল্যাক ডায়মন্ড এক্সপ্রেসে মঞ্জু দেবী বরাকরে শ্বশুর বাড়িতে আসেন। তার মেয়েদের কোন শংসাপত্র ও স্বামীর কাছ থেকে টাকা নিতেই বাড়িতে আসা । সেই সময় তাদের দুজনের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। ঐ বাড়ির পাশেই আলাদা থাকেন মঞ্জুর শাশুড়ি বা অশোকের মা সরস্বতী দেবী। তিনি ছেলে ও বৌমার ঝগড়ার আওয়াজ পেয়ে তাদের বাড়ি যান। তখন অশোক নিজেদের পারিবারিক কারণে ঝগড়া হচ্ছে বলে, মাকে চলে যেতে বলে। তা শুনে সরস্বতী দেবী চলে আসেন। এরপর ঝগড়ার মধ্যে অশোক কুম্ভকার স্ত্রী মঞ্জু কুম্ভকারের উপর চড়াও হয়ে বাড়িতে থাকা একটা বড় বেতের লাঠি দিয়ে মাথা, মুখ ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় পেটানো করে। এলোপাতাড়ি মারে মঞ্জু মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে বরাকর ফাঁড়ির ইনচার্জ রাজশেখর মুখোপাধ্যায় সহ পুলিশ কর্মীরা পৌঁছে যান। গুরুত্বর আহত অবস্থায় মঞ্জু কুম্ভকারকে উদ্ধার করে প্রথমে বরারকর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়। সেখান থেকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে পাঠানো হলে চিকিৎসক পরীক্ষা করে মৃত বলে ঘোষণা করেন।আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের এসিপি( কুলটি) সুকান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, পারিবারিক অশান্তির জন্য এই ঘটনা বলে মনে হচ্ছে। মৃত মহিলার স্বামীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করার পরে গ্রেফতার করা হয়েছে। যে লাঠি দিয়ে মারা হয়েছিল মঞ্জু কুম্ভকারকে সেই লাঠিটি পুলিশ উদ্ধার করেছে।
সূত্র থেকে জানা যায়, মৃত মঞ্জু দেবীর ভাইকে নৈহাটিতে পুলিশের তরফে খবর দেওয়া হয়েছে। তিনি আসছেন। তার লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতেই এই ঘটনায় পুলিশ একটি খুনের মামলা করবে। বুধবার আসানসোল জেলা হাসপাতালে মহিলার মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা হবে।