ASANSOL

আসানসোল জেলা হাসপাতালে ছাত্রের মৃত্যু, চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ, বিক্ষোভ, উত্তেজনা

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ আসানসোল জেলা হাসপাতালের সিসিইউতে চিকিৎসারত অবস্থায় দশম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রের মৃত্যুতে উত্তেজনা ছড়ালো। শনিবার রাতে এই ঘটনার জের রবিবার সকাল পর্যন্ত ছিলো। মৃত স্কুল ছাত্রর নাম তাজউদ্দিন হক (১৫)। সে আসানসোলের রেলপারের একটি স্কুলে দশম শ্রেণিতে পড়তো। তার মৃত্যুর খবর পেয়ে পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজনরা হাসপাতালে পৌঁছে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখানো শুরু করেন। খবর পেয়ে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ জেলা হাসপাতালে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। শনিবার রাত একটা নাগাদ স্কুল ছাত্রের মৃত্যু হলেও, পরিবারের সদস্যরা রবিবার সকাল নটার পরে পুলিশের উপস্থিতিতে মৃতদেহ নেয়। তবে এই ঘটনা নিয়ে মৃত স্কুল ছাত্রের পরিবারের তরফে কোন অভিযোগ রবিবার বিকেল পর্যন্ত জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও আসানসোল দক্ষিণ থানায় করা হয় নি।


পুলিশ ও জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাত পৌনে নটা নাগাদ আসানসোল উত্তর থানার রেলপারের ডিপোপাড়ার বাসিন্দা তাজউদ্দিন হককে তার বাড়ির লোকেরা পেটে ব্যথার কারণে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এমারজেন্সি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মেল সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। তাজউদ্দিনের বাবা সালাউদ্দিন হক বলেন, ছেলেকে পরীক্ষা চিকিৎসক বলেন, আতঙ্কিত হওয়ার দরকার নেই। অপারেশন প্রয়োজন নেই। ওষুধ খেলে সে ভালো হয়ে যাবে। চিকিৎসকের কথা মতো বাইকে করে ছেলেকে নিয়ে গিয়ে বাইরে একটি প্রাইভেট ল্যাবে পরীক্ষা করাই। সেই পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে চিকিৎসক আবারও বলেন, আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তিনি বলেন, এরপর ছেলেকে ওয়ার্ডে ইনজেকশন ও ওষুধ দেওয়া হয়। রাত সাড়ে দশটার পরেই হঠাৎ সে ছটফট করতে শুরু করে। তখন তার স্বাস্থ্যের অবনতি হতে দেখে চিকিৎসক বললেন তাকে সিসিইউতে ভর্তি করতে হবে। কিন্তু সিসিইউতে বেড খালি ছিল না। এরপর একঘন্টা পরে তাকে সিসিইউতে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত একটা নাগাদ বলা হয় ছেলে মারা গেছে। চিকিৎসক রোগীর মৃত্যুর কারণ হিসাবে ডেথ সাটিফিকেটে ” একুউট প্যানক্রিয়াটিস ” উল্লেখ করেন।


ছেলের মৃত্যুতে অবহেলা করা হয়েছে ও চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ করেন সালাউদ্দিন হক । তিনি বলেন, যারাই এই ঘটনায় দোষী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। মৃত স্কুল ছাত্রর পরিবারের সদস্যরা বিক্ষোভ দেখানো শুরু করেন। হাসপাতালে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে আসে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ। পরিবারের তরফে মৃতদেহ নিতে অস্বীকার করা হয়। পুলিশ তাদেরকে বুঝিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিলেও, রাতে তারা মৃতদেহ নেননি। শেষ পর্যন্ত রবিবার সকালে তারা তা নেন।
হাসপাতাল সুপার ডাঃ নিখিল চন্দ্র দাস বলেন, পরিবারের তরফে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হলে, তদন্ত করা হবে। যতদূর খবর নিয়েছি চিকিৎসক পরিবারকে সব জানিয়েছিলো। পুলিশ জানায়, পরিবারের তরফে কোন লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *