ASANSOL

Coal Smuggling Case : ২০১৪ থেকে ২০২০ সাল তৎকালীন ওসিকে ডেকে পাঠালো সিআইডি

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও দেব ভট্টাচার্যঃ কয়লা পাচার মামলায় তদন্তে নেমে ইতিমধ্যেই রাজ্য পুলিশের সিআইডি হরিয়ানার বাসিন্দা ব্যবসায়ী সঞ্জয় মল্লিককে গ্রেফতার করেছে। একইসঙ্গে এই মামলায় এই রাজ্যের উত্তর ২৪ পরগণার বসিরহাটের ব্যবসায়ী সোনা পাচার কাণ্ডে অন্যতম ধৃত আব্দুল বারিক বিশ্বাসকেও গ্রেফতার করেছে সিআইডি।
এর আগে পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের জামুরিয়া, অন্ডাল ও বারাবনি থানার নির্দিষ্ট তিনটি কয়লা চুরির মামলায় আরও পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে । এদেরকেই জিজ্ঞাসাবাদ করে এই দুই বড় ব্যবসায়ীর নাম পায় সিআইডি। এর পাশাপাশি ২০১৬ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত কিভাবে এই কয়লা শিল্পাঞ্চলে কয়লা চুরি হয়েছে তার তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে সিআইডি আসানসোল দুর্গাপুর কয়লা খনি এলাকার সেই সময়ে কাজ করা বেশ কয়েকজন থানার ওসি ও ইন্সপেক্টরদের নাম খুঁজে পায়। অবৈধভাবে কয়লা তোলা ও কয়লা পাচারে তাদের ভূমিকা সেই সময় কি ছিল তা জানতে চেয়ে আপাততঃ, দশজনকে সিআইডি ভবানী ভবনের ডেকে পাঠিয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত দফায় দফায় তারা আসবেন ও তাদেরকে সিআইডির অফিসাররা জিজ্ঞাসাবাদ করবেন।


জানা গেছে, বৃহস্পতিবার যে তিনজনকে ডাকা হয়েছে, তারা বর্তমানে ইন্সপেক্টর হিসাবে পদন্নোতি পেয়ে অন্য জেলায় কর্মরত আছেন। এরা ২০১৪ সাল থেকে ২০২০ সালের মধ্যে বারাবনি, জামুরিয়া ও আসানসোল দক্ষিণ থানায় ওসি হিসাবে কাজ করেছেন।
অন্যদিকে, হরিয়ানার বাহামগড় থানার কামারপুরের একটি ফার্ম হাউসের থেকে গ্রেফতার হওয়া সঞ্জয় মল্লিককে ইতিমধ্যেই সিআইডি প্রায় দু সপ্তাহের জন্য হেফাজতে নিয়েছিল । এরপর তাকে অন্ডালের একটি কয়লা চুরির কেসে যুক্ত করা হলেও আদালত দিন কয়েক আগে তাকে জামিন দেয়। এই জামিনকে চ্যালেঞ্জ করে দুর্গাপুরের অতিরিক্ত জেলা জজের আদালতে সিআইডি আবেদন করেছে। সিআইডির দাবি এই জামিন খারিজ করা হোক। সঞ্জয়ের আইনজীবী শেষাদ্রি দুবে পাল্টা আবেদন করেছিলেন কোন যুক্তিতে সিআইডি তা চাইছে তার কাগজপত্র দেওয়া হোক ও তারপর শুনানি হোক। কাগজ কলমে অবশ্য সঞ্জয়কে প্রভাবশালী হিসেবে সিআইডি দাবি করেছে। সেই মতো বিচারক আগামী সোমবার এই আবেদনের শুনানির দিন ধার্য করেছেন।


শেষাদ্রি দুবে বলেন, সঞ্জয় মল্লিক ও আব্দুল বারিক বিশ্বাস দুজনেই বর্তমানে বসিরহাটে গরু চুরি মামলায় ছ’দিনের পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন। কয়লা চুরির সঙ্গে সঙ্গে রাজ্যে গরু পাচার কাণ্ডেও এদের দুজনকে নতুন করে যুক্ত করেছে সিআইডি।
সিআইডি তরফে জানা গেছে, ২০১৯ সালে বারাবনির চরণপুর রেল সাইডিং এলাকা থেকে ১৮১৭ মেট্রিক টন চোরাই কয়লা ইসিএলের অভিযোগের ভিত্তিতে বারাবনি পুলিশ আটক করেছিল। এই কয়লা তখন রেলের মাধ্যমে অবৈধভাবে পাচারের চেষ্টা করা হয়েছিল। সেই খবর পেয়ে ইসিএল আধিকারিকরা সেখানে পৌঁছান। কোন সঠিক কাগজপত্র না পাওয়ায় শেষ পর্যন্ত সেই কয়লা গুলি তারা উদ্ধারের জন্য বারাবনি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। ইসিএলের অভিযোগের ভিত্তিতে বারাবনি থানার পুলিশ একটি মামলা ( নং ১২৭) করে। ঐ মামলায় তখন কেউ গ্রেফতার না হলেও সিআইডি এখন সঞ্জয় ও বারিক সহ মোট সাতজনকে গ্রেফতার করেছে।
একইভাবে জামুরিয়ায় এক গাড়ি থেকে আড়াই কোটি টাকা উদ্ধার ও জঙ্গল থেকে ৪৫ টন কয়লা উদ্ধার এবং অন্ডালের কয়লা চুরির মামলার সিআইডি তদন্ত করছে ।

Leave a Reply