North Bengal NewsWest Bengal

দক্ষিণ দিনাজপুরের স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নতির লক্ষ্যে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা

বেঙ্গল মিরর, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত : দক্ষিণ দিনাজপুরের স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নতির লক্ষ্যে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হল জনস্বার্থ মামলা। এই মর্মে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন সমাজকর্মী বিশ্বজিৎ প্রামাণিক। হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিভিশন বেঞ্চে ওই মামলা জনস্বার্থ মামলা গৃহীত হয়েছে। মামলায় কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারকে পক্ষ করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে ওই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।

দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার চিকিৎসা পরিষেবা ভুক্তভোগীদের তরফ থেকে
প্রায়শই প্রচুর অভিযোগ তোলা হয়। সামান্য কিছুতেই গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে জেলা হাসপাতালে রেফার করা হয়। ওদিকে বালুরঘাট জেলা সদর হাসপাতালের ক্ষেত্রেও অভিযোগ সামান্য কিছুতেই রেফার করে দেওয়া হয় মালদা বা কলকাতার নামী কোনও হাসপাতালে। জেলার প্রত্যেকটি সরকারি হাসপাতাল প্রয়োজনীয় চিকিৎসক এবং চিকিৎসা পরিষেবার অভাবে বেহাল পরিস্থিতি। ফলত: চিকিৎসার জন্য মানুষকে ছুটতে হয় পার্শ্ববর্তী জেলা অথবা ভিনরাজ্যে। রোগী রেফারের কারণে প্রায়শই পথেই রোগীমৃত্যুর অভিযোগ ওঠে । জরুরি ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসার অভাবে রোগী মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। একসঙ্গে জেলার পুরো চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই। জেলার চিকিৎসা পরিষেবা উন্নয়নের দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন পতিরামের বাসিন্দা সমাজকর্মী বিশ্বজিৎ প্রামাণিক।

হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও রাজর্ষী ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা দাখিল করেন আইনজীবী কল্যাণ কুমার চক্রবর্তী। মামলায় রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বাস্থ্য সচিব, দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রককে পক্ষ করা হয়েছে। জেলার জনসংখ্যা, সংস্কৃতি এবং স্বাস্থ্য পরিষেবার তথ্য দিয়ে মেডিকেল কলেজ স্থাপনের প্রয়োজনীয়তায় জনস্বার্থ মামলা দাখিল করা হয়। আগামী সপ্তাহে ওই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।

এপ্রসঙ্গে মামলাকারী বিশ্বজিৎ প্রামাণিক বলেন, ‘আমরা স্বাস্থ্য পরিষেবায় চূড়ান্ত বঞ্চনার শিকার। সামান্য কিছুতেই গ্রামীণ থেকে জেলা হাসপাতাল, সবক্ষেত্রে অন্যত্র স্থানান্তরের রমরমা। রেফার করার জন্য আকছার পথেই রোগীর মৃত্যু হচ্ছে। আবার অনেকে রেফারে করার খরচের উপায় না করতে পেরে রোগীর চিকিৎসা করাতে ব্যর্থ হচ্ছেন পরিজনরা। কার্যত অকালেই মৃত্যু হচ্ছে বহু রোগীর। জটিল বা দুরারোগ্য কোনো সমস্যার ক্ষেত্রে ভরসা পার্শ্ববর্তী জেলা অথবা ভিনরাজ্য। আশেপাশের জেলায় মেডিকেল কলেজ রয়েছে। পিছিয়ে পড়া ২৫০ জেলার মধ্যে আমাদের জেলাও রয়েছে। আমাদের স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নয়নের জন্য আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। জেলায় মেডিকেল কলেজ স্থাপন করতে আদালতের হস্তক্ষেপ প্রার্থনা করেছি।’

এপ্রসঙ্গে মামলাকারীর আইনজীবী কল্যাণ কুমার চক্রবর্তী বলেন, ” তমলুকে মেডিকেল কলেজ স্থাপন হয়েছে। কিন্তু দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার মতো বড় জেলায় স্বাস্থ্য পরিষেবা অপ্রতুল। হাসপাতালে চিকিৎসক নেই। ব্যাপকহারে স্থানান্তরের প্রবণতা রয়েছে। ভালো ও উচ্চ মানের চিকিৎসা সরঞ্জামের সংকট রয়েছে। মানুষ স্বাস্থ্য পরিষেবায় বঞ্চিত হচ্ছেন। সকলে অন্যত্র ব্যয়বহুল চিকিৎসা পরিষেবা করাতে পারছেন না। সেকারণেই অকালে প্রাণ হারাচ্ছেন অনেক রোগী। আদালতের কাছে চিকিৎসা পরিষেবা উন্নয়নের প্রার্থনা করে জেলা মেডিকেল কলেজ স্থাপনের জন্য জনস্বার্থ মামলা দাখিল করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে মামলার শুনানি হওয়ার কথা।”

Leave a Reply