ASANSOL

আসানসোল ও দূর্গাপুরে অবাধে চলছে বেআইনি নির্মাণ , বিস্ফোরক মন্তব্য আড্ডার চেয়ারম্যানের

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও দেব ভট্টাচার্যঃ* পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল ও দূর্গাপুর শিল্পাঞ্চল জুড়ে অবাধে চলছে বেআইনি নির্মাণ। তার মধ্যে রয়েছে বড় আবাসন বা ফ্ল্যাট, নগর থেকে কারখানা। আর এইসব কিছু করা হচ্ছে সরকারি সংস্থা আসানসোল দূর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ বা আড্ডাকে ফাঁকি। আইন মতো একবারে বাধ্যতামুলক হলেও এইসব নির্মাণ করতে নেওয়া হচ্ছে না আড্ডা থেকে ” এনওসি ” বা ” নো অবজেকশন সার্টিফিকেট “। আর এতে দু-দুবার রাজ্য সরকারের কর বা রাজস্ব ফাঁকি পড়ছে। গত ৬ মাস ধরে সমীক্ষা করে দুই শিল্পাঞ্চলে ২৪ টি করে বেআইনি নির্মাণের হদিশ পেয়েছে আড্ডা।

আসানসোল শিল্পাঞ্চলে বিশেষ করে আসানসোল ,কুলটি, বারাবনি ,সালানপুর, রানিগঞ্জে জাতীয় সড়ক, রাজ্য সড়কগুলি পাশে বিভিন্ন জমিতে নানান বেসরকারি সংস্থার নামে জমি প্লটিং করে আবাসন করার জন্য হাজার হাজার মানুষকে বিক্রি করার কাজ চলছে। মাঝে থাকছে বেশ কিছু দালাল। আর এর মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকার সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া চলছে। এর পেছনে রয়েছে অসাধু চক্র।
নয়টি কারখানা সহ এমন ২৪ টি সংস্থাকে আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ চিহ্নিত করে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়ে চিঠি দিল।


আড্ডার চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার বিকেলে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এমনই বিস্ফোরক দাবি করেন তিনি আরো বলেন, এই ২৪টি সংস্থার মধ্যে ১৪ টি সংস্থাকে প্রথমবার নোটিশ দেওয়া হলেও তারা কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়নি। যার মধ্যে নয়টি কারখানা আছে। সেজন্য তাদেরকে দ্বিতীয়বার নোটিশ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে ১০ টি নতুন সংস্থা আরো পাওয়া গেছে। যারা নানান সিটি, রেসিডেন্সি, ধাম, নগর নামে প্লট করে জমি বিক্রি করছে আবাসন তৈরির জন্য। তাদেরকেও কারণ দর্শানোর জন্য প্রথমবার নোটিশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কেন এই কারণ দর্শানো নোটিশ পাঠানো হলো? এর উত্তরে তাপসবাবু বলেন, আইন অনুযায়ী আড্ডার এনওসি বা অনুমতি ছাড়া এই ধরনের কোন প্লটিং বা আবাসন করা যায় না। সর্বোপরি আসানসোল পুরনিগম যাতে কোনভাবেই এইসব সংস্থাগুলি নামে আসা কোন প্ল্যান পাস না করে, তারজন্য পুরনিগমকে চিঠি লিখে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। একইভাবে আমরা সমস্ত ব্যাংক ও রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থাকেও জানিয়ে দিয়েছি তারাও যেন কোনরকম আর্থিক সহযোগিতা বা বিদ্যুতের সংযোগের অনুমতি আড্ডার অনুমতি ছাড়া না দেন।


তাপসবাবু বলেন, সবচেয়ে বড় কথা হলো এইসব সংস্থাগুলি দু-দুবার সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে। প্রথমত বেশ কিছু মানুষের থেকে তারা জমি নিয়ে সেই এলাকায় ডেভেলপমেন্ট বা পরিকাঠামোগত কিছু উন্নয়ন করছে যা সরকারি নিয়ম অনুযায়ী আড্ডাকে জানাচ্ছে না । তারপর যাদের জমি তাদের মাধ্যমেই আবার বিক্রি করছে। সাধারণ মানুষকে যারাই জমিগুলি কিনছেন তারা কিন্তু জানেন না যে আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের কোন এনওসি বা নো অবজেকশন সার্টিফিকেট নেই।

এই এনওসি না থাকলে বাড়ির প্ল্যান পাস হবে না। পুরনিগমের কোন কাজ হবে না। বিদ্যুৎ দপ্তর বিদ্যুৎ দেবে না। ব্যাংক থেকেও তারা ঋণ পাবেন না। তিনি বলেন, একইভাবে দুর্গাপুরেও ২৪ টি সংস্থাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এক মাসের মধ্যেই যদি উত্তর না পাওয়া যায় ও তারা যদি সরকারি নিয়ম না মানেন সে ক্ষেত্রে সংস্থার তরফে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তাপসবাবু এদিন পরিষ্কার জানিয়েদেন।
প্রসঙ্গতঃ, শাসক দল তৃনমুল কংগ্রেসের নেতা তাপস বন্দোপাধ্যায় একইসঙ্গে রানিগঞ্জের বিধায়ক। তিনি এর আগে আসানসোল পুরনিগমের মেয়রও ছিলেন।

Leave a Reply