হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে বিভিন্ন একাউন্টে ১ কোটি ৯ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগ, যুবক প্রেমিকার বাড়ি থেকে গ্রেফতার
বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, দেব ভট্টাচার্য ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি নামি সফটওয়্যার সংস্থা থেকে মালিক পরিচয় দিয়ে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে বিভিন্ন একাউন্টে ১ কোটি ৯ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগ উঠলো। এই ঘটনায় পুলিশ ইতিমধ্যেই এক যুবককে গ্রেফতার করেছে। ধৃতর নাম রাহুল সাতুরিয়া। দক্ষিণ ২৪ পরগণার নৈহাটির বাসিন্দা ঐ যুবককে তার প্রেমিকার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানায়। রাহুল সাতুরিয়াকে সোমবার আসানসোল জেলা আদালতে পাঠিয়ে দ্বিতীয় দফায় চার দিনের জন্য পুলিশ হেফাজত চাওয়া হয়েছিলো। আসানসোলের মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট তার জামিন নাকচ করে চার দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বলে সরকারি আইনজীবী মনোজ কুমার সিনহা জানিয়েছেন।




পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের সাইবার থানায় দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি সফটওয়্যার কোম্পানি পক্ষ থেকে ১ কোটি ৯ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযোগে জানা যায়, হোয়াটসঅ্যাপের ডিপির ছবি পরিবর্তন করে মালিকের নাম দিয়ে একটি ফোন আসে ঐ বেসরকারি কোম্পানির রিসিভ সেকশনের কর্মীর কাছে। ফোনে বলা হয়, এটি তার একান্ত ব্যক্তিগত নম্বর । কাউকে দেবেন না। তারপর দুদিনের মধ্যে সব মিলিয়ে মালিক হিসেবে বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে ঐ টাকা পাঠানোর জন্য বলা হয়। মালিক বলায় ঐ কর্মীর কোন সন্দেহ হয় নি। তাই ঐ টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এরপরই আবার যখন একই ধরনের মেসেজ আসে ঐ বেসরকারি কোম্পানির কর্মীর কাছে, তখন সংস্থার যিনি মালিক তিনি তার সামনে বসে রয়েছেন। তখন ঐ কর্মী বুঝতে পারেন একটা বড় প্রতারণা হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি গোটা ঘটনাটি মালিককে জানান । এরপর ঐ বেসরকারি কোম্পানির তরফে সাইবার থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়।
সাইবার থানার পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে দুটি বেসরকারি ব্যাংকের নয়টি একাউন্টে এই টাকা ঢুকেছে। এর মধ্যে একটি ব্যাংকের শাখা রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের খেজুরিতে। সেই ব্যাঙ্কে ৮ লক্ষ টাকা ঢুকেছে। সেখান থেকে ৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা এক এটিএম থেকে তোলা হয়। এছাড়া, কাঁচরাপাড়ার একটি পেট্রোল পাম্প থেকে ২ লক্ষ ৯ হাজার টাকা নগদ সোয়াইপ করে নেওয়া হয়েছে । পুলিশ এরপর ঐ পেট্রোল পাম্প মালিকের জানতে চায় কেন এত নগদ টাকা এভাবে দেওয়া হল? এর উত্তরে পেট্রোল পাম্পের তরফে বলা হয় তাদের একজন পরিচিত এই বিষয়ে সাহায্য চেয়েছিল। পুলিশ এই ঘটনায় সুমন নামে নদীয়ার ধানতলার এক বাসিন্দাকে খুঁজে বেড়াচ্ছে বলে জানা গেছে ।
অন্যদিকে যে এই টাকাগুলো তুলেছিল তাদের অন্যতম হলো রাহুল সাতুরিয়া। যাকে কাঁচরাপাড়ায় তার প্রেমিকার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সে নৈহাটির বাসিন্দা বলে জানা গেছে। এখন তাকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জেরা করে এই প্রতারণার সঙ্গে জড়িত থাকা বাকিদের খোঁজ করছে।