North Bengal News

৮০ এর দশকে ঘোষিত গাজোল থেকে ডালখোলা ভায়া ইটাহার রেলপথ চেয়ে জনস্বার্থ মামলা, সরকারপক্ষকে হলফনামা পেশ করার নির্দেশ

Watch video

বেঙ্গল মিরর, কলকাতা, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত : প্রকল্পের ঘোষণা করা হয় বহুকাল আগে ১৯৮৬ সালে। তারপর কেটে গিয়েছে বহু বছর। কিন্তু আজ পর্যন্ত চালু হয়নি গাজোল থেকে রায়গঞ্জ হয়ে ভালখোলা পর্যন্ত রেলপথ। বিভিন্ন জটিলতায় সেই প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়নি। আটকে থাকা সেই প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করলেন পশ্চিম দিনাজপুর চেম্বার অফ কমার্সের সদস্য তথা রায়গঞ্জের বাসিন্দা অঞ্জন রায়। আগামী ২ রা ফেব্রুয়ারি ওই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন এই মামলার আইনজীবী কল্যাণকুমার চক্রবর্তী। এছাড়া তিনি বলেন কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার উভয়কেই হলফনামা পেশ করবার জন্য নির্দেশ দেন বিচারপতি।

উল্লেখ্য, ১৯৮৬ সালে রেলমন্ত্রী ছিলেন প্রয়াত গনি খান চৌধুরী। মালদা জেলা ও উত্তর দিনাজপুর জেলার মধ্যে যোগাযোগ আরও সহজ ও মসৃণ করতে তিনি গাজোল থেকে ভায়া ইটাহার ও রায়গঞ্জ হয়ে ডালখোলা পর্যন্ত রেলপথের রুট চালু করার পরিকল্পনা করেন। সেইমতো প্রকল্পের ঘোষণাও হয়। বরাদ্দ হয় ঠান্ডাঘরে গনি খানের টাকাও। কিন্তু তারপরেই কোনও এক অজ্ঞাতকারণে সেই প্রকল্পের ফাইল ঠান্ডাঘরে চলে যায়। গনি খানের মৃত্যুর পর অন্য কোনও রেলমন্ত্রী বা জনপ্রতিনিধিও বিষয়টি জনসমক্ষে এবং সঠিক জায়গায় তোলেননি। আবার ভোট এলেই অবশিক ভাবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নির্বাচনি ইস্তেহারে ওই একাধিক সময় আন্দোলনও হয়েছে। কিন্তু জট কাটিয়ে প্রকল্পের বাস্তবায়নের কোনও উদ্যোগ কাউকে নিতে দেখা যায়নি।

কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে বালুরঘাট থেকে হিলি পর্যন্ত রেলপথ সম্প্রসারণ প্রকল্পের বাস্তবায়নের কাজ শুরু হতেই গাজোল থেকে ডালখোলা পর্যন্ত রেলপথ সম্প্রসারণ প্রকল্পের বাস্তবায়নের দাবিতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন চেম্বার অফ কমার্সের সদস্য অঞ্জন রায়। তাঁর হয়ে এই প্রকল্পের বাস্তবায়নের দাবিতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন আইনজীবী কল্যাণকুমার চক্রবর্তী। ইতিমধ্যে মামলাটির প্রাথমিক শুনানি হয়। আগামী ২ রা ফেব্রুয়ারি পুনরায় শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।

কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী কল্যাণকুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘রায়গঞ্জের ব্যবসায়ী অঞ্জন রায় নিজের উদ্যোগে একটি জনস্বার্থ মামলা করেছেন। দিন কয়েক আগে এই মামলা দায়ের হয়েছে। গাজোল থেকে ইটাহার ও রায়গঞ্জ হয়ে ডালখোলা পর্যন্ত রেলের রুটটা দীর্ঘদিন ধরে পড়ে রয়েছে। অর্থাৎ ১৯৮৬ সালে এই প্রকল্পটি চালু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে রেল প্রকল্পটি থমকে রয়েছে। এর ফলে উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সেজন্য অঞ্জনবাবু জনস্বার্থ মামলা করেছেন। ওই প্রকল্পের বাস্তবায়ন হলে উত্তরবঙ্গের মানুষ উপকৃত হবেন। উত্তরবঙ্গের সঙ্গে শিলিগুড়ি ও অসমের রেল যোগাযোগ গড়ে উঠবে এবং অনেক রাস্তা কমে যাবে। এদিকে মামলার প্রাথমিক শুনানির পর বিচারপতি সরকার পক্ষের আইনজীবীকে জিজ্ঞাসা করেন কেন এতদিন ধরে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়নি । সে ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয় ৩০ শতাংশ জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। মোট ২৭৩ একর জমি অধিগ্রহনের মধ্যেই রয়েছে। উল্লেখ্য, কিছু জমি বিহারের কাটিহার ও কিছু জমি উত্তর দিনাজপুরে রয়েছে। দুই পক্ষের সওয়াল জবাবের পরে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার উভয়কেই রিপোর্ট ও এফিডেভিট চেয়ে বলেন কেন এতদিন প্রকল্প পরে রয়েছে। আগামী ২ রা ফেব্রুয়ারি এই মামলার শুনানি হবে।’

Leave a Reply